Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ছক কষেই খুন ছাত্রকে, নালিশ করল পরিবার

বন্যার জল দেখতে যাওয়ার নাম করে পুকুরে ফেলে এক ছাত্রকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। পূর্বস্থলীর ওই ছাত্র সন্দীপন দাসের বাবা সুজিতবাবুর দাবি, দ্বাদশ শ্রেণির সাত ছাত্রছাত্রী খুনের পরিকল্পনায় জড়িত। তাদের এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আপাতত সে জেল-হাজতে রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৫৬
Share: Save:

বন্যার জল দেখতে যাওয়ার নাম করে পুকুরে ফেলে এক ছাত্রকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। পূর্বস্থলীর ওই ছাত্র সন্দীপন দাসের বাবা সুজিতবাবুর দাবি, দ্বাদশ শ্রেণির সাত ছাত্রছাত্রী খুনের পরিকল্পনায় জড়িত। তাদের এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আপাতত সে জেল-হাজতে রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় কাষ্ঠশালী নিভাননী উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সন্দীপন গত ৭ অগস্ট স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরোয়। তার পর থেকেই আর ফেরেনি সে। ওই দিনই দুপুরে পরিবারের লোকজন খবর পান, কাছাকাছি রাজারচর এলাকায় বন্যার জল দেখতে গিয়ে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বছর পনেরোর সন্দীপনের। সুজিতবাবুর দাবি, এর পরেই তাঁরা খোঁজখবর করে জানতে পারেন পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে তাঁর ছেলেকে। সন্দীপনের বাড়ির তরফে পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে জানানো হয়েছে, স্কুলেরই এক ছাত্রের প্রেমে বাধা দেওয়ার সন্দেহে খুন করা হয়েছে তাকে।

সুজিতবাবুর দাবি, যেখানে ছেলের মৃত্যু হয়েছিল পরের দিন সেখানে গিয়ে বেশ কিছু তথ্য পান তাঁরা। ওই তথ্য অনুযায়ী, রাজারচর এলাকায় আগে থেকেই হাজির ছিল দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র। পরে সন্দীপনকে নিয়ে ওখানে যায় তার ছয় সহপাঠী। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দেখে সাঁতার জানা সত্ত্বেও জলে ডুবে যাওয়া ভান করে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রটি। পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্দীপনকে সামনে রেখে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু ওই ছাত্রটি জল থেকে উঠে আসার আগে ফেলে দেয় সন্দীপনকে। পরে জলের মধ্যে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। খুনের কারণ হিসেবে তাঁদের দাবি, স্কুলেরই এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রটির। সন্দীপনেরও ওই ছাত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল। যা মেনে নিতে পারেনি অন্য ছেলেটি। এর জেরেই সন্দীপনকে সে খুন করে বলে অভিযোগ। মৃত ছাত্রের মামা সমীরণ নন্দনের দাবি, ‘‘এলাকায় ভাল ছেলে হিসেবে পরিচিতি ছিল না ওই ছেলেটির। তাই যে মেয়েটির সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল, তাকে সরে আসার পরামর্শ দিয়েছিল সন্দীপন। আমাদের ধারণা, সেই কারণেই খুন হতে হয় তাকে।’’ পুলিশের হাতে সমস্ত তথ্য-প্রমাণ তুলে দেওয়া হয়েছে বলেও তাঁদের দাবি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মদনমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। তবে যে দিনের ঘটনা সে দিন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি চলায় স্কুলে শিবির হয়। পাশাপাশি বিডিও-র নির্দেশে স্কুলও খোলা থাকে। তবে ক্লাস হয়নি। পুলিশ তদন্তের কাজে স্কুলে এলে তা জানানো হয়েছে বলেও তাঁর দাবি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এলাকার দু’জন বাসিন্দার জবানবন্দিও নথিভুক্ত করা হয়েছে। পূর্বস্থলী থানার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ঘটনাটিতে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE