Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ত্রাণ না মেলায় বিক্ষোভ, অবরোধ

টানা বৃষ্টিতে ডুবেছে ঘরবাড়ি। ত্রাণ শিবিরেও ঠাঁই নেই। এই পরিস্থিতিতে ত্রাণ সামগ্রী না মেলার অভিযোগে পথ অবরোধ করলেন জামালপুর ব্লকের সাহাপুর গ্রামের বাসিন্দারা। শুক্রবার দুপুরের দিকে ব্লক অফিসে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। খবর ছড়িয়ে পড়তে ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরও হাজার পাঁচেক মানুষ ব্লক অফিসে জড়ো হয়ে যান।

রাস্তা আটকে চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তা আটকে চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৫ ০৩:২৭
Share: Save:

টানা বৃষ্টিতে ডুবেছে ঘরবাড়ি। ত্রাণ শিবিরেও ঠাঁই নেই। এই পরিস্থিতিতে ত্রাণ সামগ্রী না মেলার অভিযোগে পথ অবরোধ করলেন জামালপুর ব্লকের সাহাপুর গ্রামের বাসিন্দারা। শুক্রবার দুপুরের দিকে ব্লক অফিসে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। খবর ছড়িয়ে পড়তে ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরও হাজার পাঁচেক মানুষ ব্লক অফিসে জড়ো হয়ে যান। অমরপুর, সাহাপুর, করলাঘাট, আঝাপুর প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারাও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, ত্রাণ হিসেবে দেওয়া চাল বা শুকনো খাবার কিছুই পাননি তাঁরা। এমনকী মাথার ছাউনি হিসেবে ত্রিপলও তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি। এ দিকে ত্রাণ শিবিরগুলিতে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় দূরে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অথবা কোনও রকমে এখানে ওখানে থাকতে হচ্ছে বলেও তাঁদের দাবি।

জামালপুরের যুগ্ম বিডিও দীপক ঘোষ বলেন, ‘‘সাহাপুরে মানুষ পথ অবরোধ করেছেন জানি। ওখানে সরকারি উদ্যোগে একটা ত্রাণ শিবির চলছে। গ্রামের মানুষের কাছে জেনেছি ওখানে পাঁচশো পরিবার জলমগ্ন হয়েছেন। কিন্তু সরকারি ভাবে কোনও পরিসংখ্যান এখনও পাইনি। এ ছাড়া জামালপুরের কোথায়, কোন গ্রামে, কত মানুষ জলে ডুবে আছে সেই তথ্য সংগ্রহের কাজও চলছে। যেমন জানতে পারছি সেই মতো জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে জানাচ্ছি।’’ ত্রাণ সামগ্রী খুব শীঘই চলে আসবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। জেলার বিপর্যয় আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার জানিয়েছেন, জামালপুরের ব্লক প্রশাসনের সাথে কথা বলে তাদের চাহিদা মতো চাল খাদ্যসামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। জেলার ত্রাণ সামগ্রী মজুত ভাণ্ডারে কোনও অভাব নেই বলেও তাঁর দাবি।

দাঁইহাটের চরপাতাইহাট, চৌধুরী পাড়া, জেলে পাড়া প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারাও ত্রাণ না মেলার অভিযোগ করেছেন। যদিও পুরপ্রধানের দাবি, ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। বাকি সামগ্রী এলে সেগুলিও বিলি করা হবে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কমিউনিটি হল, স্কুল মিলে ১১টি ত্রাণ শিবির করা হয়েছে। আড়াইশোরও বেশি বাসিন্দা সেখানে রয়েছেন বলেও পুরসভার দাবি। এর মধ্যেই ঝড়ে গাছ পড়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে এলাকা। পাইপ লাইন ফেটে যাওয়ায় জলও সরবরাহ করা যায়নি দুটি ওয়ার্ডে।

কাটোয়ার সিঙ্গী পঞ্চায়েতের নানা জায়গাতেও ত্রাণ না মেলার অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। শিমুলগাছি গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, বেশিরভাগ জায়গা ডুবে গেলেও ত্রাণ শিবির খোলার ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন। বাধ্য হয়ে পড়শিদের উঁচু বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন তাঁরা। মেমারি পুরসভার তৃণমূলের কাউন্সিলর মানসুরা বেগম, চিরঞ্জিত ঘোষদেরও অভিযোগ, “আমরা পুরসভার কাছ থেকে ঠিকমতো ত্রাণ পাচ্ছি না। পুরপ্রধান বা উপপুরপ্রধান আমাদের কোনও কথাই শুনছেন না। ত্রাণ দিতে না পারায় আমাদের মার খাবার জোগাড় হয়েছে।” তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর স্বপন ঘোষালেরও অভিযোগ, “ত্রাণ নিয়ে বৈষম্য করছে পুরসভা।” যদিও পুরসভা ত্রাণ নিয়ে বৈষম্যের কথা অস্বীকার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE