Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নানা স্কুলের কন্যাশ্রী-শিক্ষাশ্রীর অ্যাকাউন্ট এক ব্যাঙ্কে, বিপাক

একটি ব্যাঙ্কেই একাধিক স্কুলের পড়ুয়ার কন্যাশ্রী ও শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা হয়েছে। ফলে, ব্যাঙ্কের উপরে চাপ পড়ছে বেশি। ভুগছে পড়ুয়ারাও। সমস্যার সমাধানে যে সব স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা বেশি, তাদের একাধিক ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার দাবি করেছে কাঁকসার বিভিন্ন স্কুল। সমস্যা সমাধানে বৃহস্পতিবার বৈঠক ডাকেন দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত। পরে মহকুমাশাসক বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ে যাতে সব পড়ুয়ার আমানত খোলার কাজ শেষ হয়, তা ব্যাঙ্কগুলি দেখবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৪ ০১:৩১
Share: Save:

একটি ব্যাঙ্কেই একাধিক স্কুলের পড়ুয়ার কন্যাশ্রী ও শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা হয়েছে। ফলে, ব্যাঙ্কের উপরে চাপ পড়ছে বেশি। ভুগছে পড়ুয়ারাও। সমস্যার সমাধানে যে সব স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা বেশি, তাদের একাধিক ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার দাবি করেছে কাঁকসার বিভিন্ন স্কুল। সমস্যা সমাধানে বৃহস্পতিবার বৈঠক ডাকেন দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত। পরে মহকুমাশাসক বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ে যাতে সব পড়ুয়ার আমানত খোলার কাজ শেষ হয়, তা ব্যাঙ্কগুলি দেখবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।”

কাঁকসা ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭ অগস্ট ব্লক লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটি এবং স্কুলগুলির সঙ্গে বৈঠকে কোন কোন স্কুলের কোন কোন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হবে, তা নির্দিষ্ট করা হয়। ১৩ অগস্ট সেই তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয় ব্লকের ২০টি স্কুলে। তালিকা অনুযায়ী, অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্কের একটি শাখায় একাধিক স্কুলের অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। যেমন, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পানাগড় শাখায় তিনটি স্কুল, আর একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পানাগড় শাখায় দু’টি, রাজবাঁধ শাখায় দু’টি এবং মলানদিঘি শাখায় দু’টি স্কুলের পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট খুলতে বলা হয়েছে।

স্কুলগুলির সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, কন্যাশ্রী ও শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের জন্য পড়ুয়াদের ‘জিরো ব্যালান্স’ অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার কথা। কিন্তু অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। তাদের দাবি, এই কাজের জন্য বারবার ঘুরতে হচ্ছে। অন্য দিকে, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারার আশঙ্কায় রয়েছেন প্রধান শিক্ষকেরা। এমনই একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “স্কুল থেকে যা যা করার তা করে পড়ুয়াদের পাঠানো হচ্ছে। তার পরেও ভিড় সামলাতে না পেরে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে অনেককে।” তিনি জানান, যে সব স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা তুলনায় বেশি সেগুলির জন্য একাধিক ব্যাঙ্কের ব্যবস্থা করা দরকার। তাহলে একটি ব্যাঙ্কে অযথা ভিড় হবে না। সমস্যায় পড়তে হবে না পড়ুয়াদেরও। আর এক প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, ‘জিরো ব্যালান্স’ অ্যাকাউন্টের কথা বললেও আগে আমানত খোলার জন্য ১০০ টাকা জমা নেওয়া হয়েছে। এখন আবার তা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা জমা নেওয়ার কথা বলছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। তিনি বলেন, “অত টাকা জমা রেখে আমানত খোলার সামর্থ্য অনেক পড়ুয়ারই নেই। এ ভাবে চললে তাঁদের আমানত খোলাই হবে না। সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে তারা।”

ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, যে সব ব্যাঙ্ক পিছু একটি করে স্কুল রয়েছে, সেগুলিতে সমস্যা তত প্রকট নয়। কিন্তু বেশ কিছু ব্যাঙ্কে একাধিক স্কুলের কাজ পড়ায় সমস্যায় পড়েছে ব্যাঙ্কগুলি। ব্যাঙ্কের কর্মীরা জানান, দৈনন্দিন কাজের বাইরে শত-শত পড়ুয়ার জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ যোগ হয়েছে। ফলে, নাজেহাল দশা তাঁদের। কাজের সুষম বণ্টনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়া ও ব্যাঙ্কেরদু’তরফেরই সমস্যা মেটাতে বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসকের উদ্যোগে একটি বৈঠক হয়।

মহকুমাশাসক জানান, নিয়ম অনুযায়ী যে কোনও পড়ুয়া যে কোনও ব্যাঙ্কেই আমানত খুলতে পারে। তবু কাজের সুবিধার জন্য ব্যাঙ্ক ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। আমানত খোলার ফর্ম পূরণ বা আনুষঙ্গিক অন্য কাজ বাইরের কাউকে দিয়ে করিয়ে ব্যাঙ্ক কর্মীদের কাজে সহযোগিতা করার কথা ভাবা হয়েছে। প্রয়োজনে ফের ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে বৈঠক হবে বলে জানান তিনি। মহকুমাশাসক বলেন, “আমানত খোলার ব্যাপারে কাঁকসা বাকি ব্লকগুলির তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। দ্রুত সেই ঘাটতি মিটিয়ে ফেলা হবে।” টাকা জমা নিয়ে আমানত খোলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “খবর পেলেই হস্তক্ষেপ করে সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kanyashree account at bank problem durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE