শোকার্ত স্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।
সাতদিন নিখোঁজ থাকার পর এক যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার হল দুর্গাপুরের বিধাননগর আবাসনে। শুক্রবার, আবাসনের একটি কোয়ার্টারের সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতর থেকে বীরেন্দ্র মণ্ডল (৩০) নামে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর নিউটাউনশিপ থানার পুলিশের অনুমান, ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মণি মাইতি ও চন্দন মাইতি নামে দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২ অক্টোবর ওই যুবকের পরিবারের তরফে থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বীরেন্দ্রবাবুর মোবাইলটির খোঁজ মেলেনি। তবে ওই যুবকের কললিস্ট খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে বীরেন্দ্রবাবুর সঙ্গে মাঝেসাঝেই মণিদেবীর কথা হতো। কললিস্টের শেষ ফোনটিও মণিদেবীকেই করা বলে পুলিশের দাবি। দিন তিনেক আগে পুলিশ ওই দম্পতিকে জেরা করে। জেরায় অসঙ্গতি মেলায় তাঁদের আটক করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে, বীরেন্দ্রবাবুকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন ওই দম্পতি। শুক্রবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, এই খুনের পিছনে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের যোগ থাকতে পারে। যদিও জেরায় মণিদেবী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, বীরেন্দ্র মাঝেসাঝেই কুপ্রস্তাব দিলেও তিনি তা স্বীকার করেননি। কিন্তু তারপরেও তাঁকে ওই যুবক উত্যক্ত করত বলে অভিযোগ। তদন্তকারীদের দাবি, ২ অক্টোবর রাতে মণিদেবী ফোন করে ডেকে পাঠান বীরেন্দ্রকে। ওই দম্পতির বাড়িতে বীরেন্দ্রবাবু পৌঁছলে তাঁকে ঘুমের ওষুধ মেশানো খাবার খাইয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি। এরপরই বীরেন্দ্রবাবুকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে পুলিশের অনুমান। খুনের পর ওই দম্পতি উঠোনের পাশে থাকা সেপটিক ট্যাঙ্কে দেহটি লুকিয়ে রাখে বলেও অভিযোগ। এ দিন দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সুচেতা হত্যাকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই প্রায় একই জায়গায় ফের এমন খুনের ঘটনা ঘটল। ২৭ অগস্ট বিধাননগর আবাসনেই সুচেতা ও তাঁর চার বছরের মেয়েকে ব্যাঙ্ক আধিকারিক সমরেশ বিশ্বাস খুন করে বলে অভিযোগ। তারপর দু’জনের দেহ কেটে ব্যাগে করে গঙ্গায় ফেলে দিয়ে লোপাটেরও চেষ্টা করা হয়। বীরেন্দ্র খুনের ঘটনায় ধৃত দম্পতি বিধাননগর আবাসনে একটি বেসরকারি সংস্থার আধিকারিকের কোয়ার্টারের ‘আউট হাউস’-এ থাকেন। দেড় মাসের ব্যবধানে একই জায়গায় এমন ঘটনা পুলিশের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় স্থানীয় বাসিন্দারাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy