চূড়ান্ত ঘোষণা এখনও হয়নি। তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক যে হিন্দুস্তান কেবলসের দায়িত্ব নিতে চলেছে, তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ভারীশিল্প মন্ত্রকের উদ্যোগে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এখানে কী কী তৈরি করবে, তারও একটি খসড়া অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের বিশেষজ্ঞরা তৈরি করেছেন বলে সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। এর জন্য কারখানার খোলনলচে আমূল বদলে ফেলা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
হিন্দুস্তান কেবলসের রূপনারায়ণপুর ইউনিটটি শেষ বারের মতো অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের বিশেষজ্ঞেরা পরিদর্শন করতে এসেছিলেন গত বছর সেপ্টেম্বরে। সে বার পাঁচ সদস্যের একটি দল এসেছিল। কারখানার কোথায় কী কী ইউনিট তৈরি হবে, তার একটি আভাসও দিয়ে গিয়েছিলেন ওই দলের সদস্যেরা। কেবলসের রূপনারায়ণপুর ইউনিটের জনসংযোগ আধিকারিক হরিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় জানান, গত দু’বছরে বিভিন্ন পর্যায়ে পাঁচ বার অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের বিশেষজ্ঞরা এই কারখানা ঘুরে গিয়েছেন। তাঁরা লিখিত আকারে জানিয়েও দিয়েছেন, ঠিক কী ধরনের সামগ্রী এখানে তৈরি করা যেতে পারে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড এখানে পাঁচ রকমে সামগ্রী তৈরি করতে চায়। সেগুলি হল, পিনাকা মাল্টিপল রকেট লঞ্চার, রাতের যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য নাইট ডিভাইস ইকুইপমেন্ট, ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপের জন্য ক্ষেপণাস্ত্রের খোল তৈরি হবে। প্রাইম মাল্টিপল ডিভাইস, অর্থাৎ যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার্য বিধ্বংসী ট্যাঙ্কের বিভিন্ন যন্ত্রসামগ্রী, লোডেড বেরি কমপোনেন্ট (এলবিসি) ও যুদ্ধক্ষেত্রে ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী রকেট তৈরি হবে। হরিশঙ্করবাবু আরও জানান, কারখানা ও আশপাশের এলাকার একটি মানচিত্রও অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের সদস্যেরা নিয়ে গিয়েছেন।
রূপনারায়ণপুর ইউনিট সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানার শেড, যন্ত্রপাতি পরিদর্শনের সঙ্গে শহরের বিভিন্ন অঞ্চলও একাধিক বার ঘুরে দেখেছেন অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের সদস্যেরা। কারণ, গোপনীয়তার সঙ্গে এই সব সামগ্রী তৈরি করা হবে। তাই শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাটো করার জন্য কোথায় কী পদক্ষেপ করা দরকার, তা পরিদর্শন করে বোঝার চেষ্টা করেছেন তাঁরা।
কেবলসের আধিকারিকেরা মনে করেন, রূপনারায়ণপুর ইউনিটের বিষয়ে প্রায় সব তথ্যই অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের আধিকারিকদের হাতে সঁপে দেওয়ায় কারখানা অধিগ্রহণের প্রাথমিক প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। ফলে, অধিগ্রহণের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তবে তাঁদের আশঙ্কা, ডিভিসি-র কাছে প্রচুর টাকা বিদ্যুতের বিল বকেয়া পড়ে রয়েছে। রূপনারায়ণপুর ইউনিটের এই অবস্থায় যে কোনও সময়ে বিদ্যুতে্ সংযোগ ছিন্ন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাঁদের আশা, কেন্দ্রীয় ভারীশিল্প মন্ত্রক ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রক কারখানার বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ করায় ওই পরিস্থিতি থেকে নিস্তার মিলবে।
মঙ্গলবার সকালে কারখানা অধিগ্রহণের খবরে গোটা এলাকায় খুশির হাওয়া বয়ে গিয়েছিল। উৎসবের মেজাজে কাটিয়েছিলেন শ্রমিক-কর্মীরা। বুধবারও তার রেশ দেখা গিয়েছে ওই এলাকায়। কবে কারখানা অধিগ্রহণের কথা ঘোষণা হবে, এখন তারই অপেক্ষায় দিন গুনছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy