তৈরি হচ্ছে মূর্তি। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর বয়স তিনশো ছুঁই ছুঁই। এখনও পুরনো রীতি মেনে বিশেষ ধরণের নাড়ু ও ধুপ তৈরি করে দুর্গাপুজো করেন কাঞ্চননগর, কামারমহলের দাস বাড়ির সদস্যেরা।
দাস বাড়ির সূত্রে জানা গেল, অষ্টমীতে পুজোর জন্য হরিতকি, দেবদারু, শ্বেত ও রক্ত চন্দন, মুথা ঘাস সহ ২০ রকমের উপকরণ দিয়ে বিশেষ এক ধরণের ধুপ তৈরি করা হয়। প্রায় ১ ফুট লম্বা ধুপটি। ৪০টির মতো বড় এবং ৮০টি ছোট ধুপ তৈরি করা হয় বলে জানা গেল। এ ছাড়া পরিবারের পুরোহিতেরা গুড়, বেসন ইত্যাদি দিয়ে তৈরি করেন নাড়ু। অষ্টমী ও নবমীর দিন হরির লুঠের রীতির মাধ্যমে নাড়ু বিলনোর ব্যবস্তা করা হয়।
দুর্গার মূর্তি তৈরিতেও রয়েছে অভিনবত্ব। দাস বাড়ির সদস্য তপন দাস বলেন, “ প্রতি বছর রথের দিন নিয়ম করে দুর্গার কাঠামোয় প্রথম মাটি দেওয়া হয়। দেবীকে সাজানো শুরু হয় তৃতীয়ায়। চতুর্থীর দিনে দেবীকে বেদিতে তোলা হয়। ষষ্ঠীর দিন প্রতিমার কাজ সম্পূর্ণ হয়।” শুধু তাই নয়, বাড়ির সদস্যরাই বিশেষ পদ্ধতিতে দেবীর চুলও বেঁধে দেন। মহালয়ার পরের শনি অথবা মঙ্গলবারে পুজোর জন্য তৈরি করা হয় বিশেষ ধরণের আলো চাল।
পুজো শুরুর ইতিহাস হলতে গিয়ে দাস বাড়ির সদস্য দেবব্রত দাস জানান, পরিবারের পূর্ব-পুরুষ কিনুরাম দাস খণ্ডঘোষের সংসার গ্রাম থেকে কামারমহলে আসেন। তিনিই দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজোর প্রচলন করেন। বাড়ির অন্দর মহলে এখনও শোভা পায় ঝাড় বাতি। দেবব্রতবাবু জানান, ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত পুজোর সময় বাতিগুলি জ্বালানো হত। কিন্তু বর্তমানে রেড়ির তেল না মেলায় ঝাড়বাতিগুলি আর জ্বালানো সম্ভব হয় না। এই পুজোটি দাস বাড়ির হলেও আসলে তা বারোয়ারি। যেমন, পুজোর কথা বলতে গিয়ে খানিকটা নস্টালজিক শোনাল স্থানীয় বাসিন্দা পরেশনাথ ঘোষকে, তিনি বলেন “ছোটবেলায় আমাদের কাছে পুজো বলতে ওই দাস বাড়িই ছিল প্রধান আকর্ষণ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy