Advertisement
০৪ জুন ২০২৪
নির্বিঘ্নে গ্রুপ ডি-র পরীক্ষা

বাড়তি কামরা চেয়ে বিক্ষোভ পরীক্ষার্থীদের

রাস্তায় বেশি পরিমাণে সরকারি বাস, বিভিন্ন সংগঠনের তরফে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে ক্যাম্প— নানা বন্দোবস্তে প্রায় নির্বিঘ্নেই মিটল রাজ্য সরকারের চতুর্থ শ্রেণি কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা।

হুড়োহুড়ি: পরীক্ষা শেষে বাসের ছাদে যাত্রা। অন্ডালে। —নিজস্ব চিত্র।

হুড়োহুড়ি: পরীক্ষা শেষে বাসের ছাদে যাত্রা। অন্ডালে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০২:১৯
Share: Save:

রাস্তায় বেশি পরিমাণে সরকারি বাস, বিভিন্ন সংগঠনের তরফে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে ক্যাম্প— নানা বন্দোবস্তে প্রায় নির্বিঘ্নেই মিটল রাজ্য সরকারের চতুর্থ শ্রেণি কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা। তবে তারই মাঝে বাড়তি কামরার দাবিতে বিক্ষোভের জেরে আসানসোলে ট্রেন ছাড়তে দেরি বা মোবাইল রাখার জন্য দুর্গাপুরের স্কুলে টাকা চাওয়ার অভিযোগের মতো কিছু ঘটনা ঘটে। তবে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী জানান, জেলার ১৬১টি কেন্দ্রে মোট ৬৩ হাজার জন পরীক্ষা দিয়েছেন।

এ দিন ভোরে কিছু পরীক্ষার্থীর বিক্ষোভের জেরে আসানসোল-হলদিয়া ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি ছাড়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনটি ভোর ৫টা ৪০ নাগাদ ছাড়ে। এ দিন এক দল পরীক্ষার্থী ট্রেনটিতে একটি অতিরিক্ত কামরা জোড়ার দাবি জানাতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত তা করা সম্ভব হয়নি। তবে পরীক্ষার্থীদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ৭টা নাগাদ ট্রেনটি ছাড়ে।

দুর্গাপুর স্টেশনের কাছে বাসস্ট্যান্ডে সকাল থেকে ‘চলমান স্বেচ্ছাসেবক’ হিসেবে হাজির হন সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের কর্মী-সদস্যেরা। পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রের হদিস, কোন রুটের বাস ধরতে হবে ও কোথায় নামতে হবে তা জানানো, পানীয় জলের ব্যবস্থা করেন তাঁরা। রাস্তায় অন্য দিনের তুলনায় যাত্রী কিছুটা কম হওয়ায় ও দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থা বেশ কিছু অতিরিক্ত বাস চালানোয় পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে তেমন কোনও অসুবিধা হয়নি। বেনাচিতির কিছু কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের কাছে পর্যাপ্ত পানীয় জল পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয় তৃণমূল। তবে পরীক্ষা শেষে ফেরার সময়ে হুড়োহুড়ি নজরে এসেছে। অনেককে বাসের ছাদেও চড়তে দেখা গিয়েছে। অনেক কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির হার বেশ কম ছিল বলে জানা গিয়েছে। যেমন, সিলামপুর হাইস্কুলে ৩৩৬ জনের মধ্যে মাত্র ৮৩ জন এসেছিলেন।

বেনাচিতির রামকৃষ্ণপল্লির বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠে পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন জমা রাখার জন্য ১০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। মোবাইল যাতে কোনও ভাবে বেহাত না হয় সে জন্য টাকার বিনিময়ে স্কুলের স্ট্যাম্প-সহ ‘টোকেন’ দেওয়া হয় পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষা শেষে বেশ কিছু পরীক্ষার্থী টাকা দিতে আপত্তি জানান। তাঁদের দাবি, সরকারি পরীক্ষায় স্কুল এমন করতে পারে না। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘এটা করা যায় না। কেন এমন করা হল তা জানতে চাওয়া হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে।’’

কাঁকসার নানা পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে প্রশাসনের তরফে জলের ট্যাঙ্ক রাখা হয়েছিল। পিয়ারিগঞ্জ চারুচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় ও মলানদিঘির একটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজে শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শুক্রবার বিকেল থেকেই ভিন্‌ রাজ্যের বহু পরীক্ষার্থী চলে আসেন। এলাকার লোকজন থাকার ব্যবস্থা করে দেন তাঁদের। ত্রিলোকচন্দ্রপুরের রাসবিহারী পাল উত্তরপ্রদেশের পাঁচ পরীক্ষার্থীকে নিজের দোকানের উপরের ঘরে থাকতে দেন। এক পরীক্ষার্থী সনৎ কুমার বলেন, ‘‘উনি ব্যবস্থা করায় আমরা কৃতজ্ঞ।’’

আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, পুরসভার তরফে ৮টি জায়গায় সহায়ক কেন্দ্র চালু করা হয়েছিল। এ দিন ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ, ঝরিয়া থেকে পরীক্ষা দিতে আসা ২৫ জন সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে না পেরে ফিরে যান। তাঁরা জানান, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ আসানসোল স্টেশনে নেমে বাঁকুড়ার কোতলপুর, পাত্রসায়রে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য রানিগঞ্জের বাস ধরেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছে জানতে পারেন, গন্তব্যে পৌঁছতে চার ঘণ্টারও বেশি সময় লাগবে। তাই ফিরে যেতে হচ্ছে।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয়বাবু বলেন, “বাস ও রেল কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত পরিষেবার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। কোনও জায়গায় পরিবহণজনিত কোন গণ্ডগোলে কাউকে পড়তে হয়েছে, এমন কোনও খবর আমাদের কাছে নেই।” অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন) শঙ্খবাবুও বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।’’

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সরাসরি: ‘মাছ ধরতে শেখানো উচিত’, আক্রমণ দেবজিতের

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Group D Examination Train Candidates Turmoil
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE