অভিযোগ, এই গেট দিয়েই চলে দুষ্কৃতীদের যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র।
২০১৭-র বছর শেষের দিন, সকাল ১০টা। আমলাদহি বাজারে কেনাকাটা করতে যাচ্ছিলেন এক মহিলা। আচমকা একটি মোটরবাইকে সওয়ার দু’জন ঝড়ের গতিতে এসে মহিলার কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ নিয়ে হাওয়া। রাস্তার নম্বর ৩৮।— এই ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় পৌঁছনোর আগেই ফের দ্বিতীয় ছিনতাই, একই কায়দায়। রাস্তার নম্বর, ৪০।
— দু’টি ঘটনা চিত্তরঞ্জন রেল শহরের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায়শই এই শহরের নানা এলাকায় মহিলাদের ব্যাগ ছিনতাই করছে মোটরবাইক আরোহী দুষ্কৃতীরা। আরও অভিযোগ, মোটরবাইক চুরির সংখ্যাও গত ছ’মাস আগে হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করে।
চিত্তরঞ্জন থানা জানায়, গত ২৬ ডিসেম্বর ৩২ নম্বর রাস্তায় বিকেলে এক মহিলার মোবাইল ছিনতাই করে দুষ্কৃতীরা। ওই দিনই আবার কল্যাণগ্রামগামী চিত্তরঞ্জনের রাস্তায় দুষ্কৃতীরা দুই মহিলার টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে চম্পট দেয়। ইংরেজি নতুন বছরের শুরুতেই ৩১ নম্বর রাস্তায় ভরসন্ধ্যায় পথচারী এক মহিলার গলায় সোনার হার ছিনিয়ে পালিয়েছে মোটরবাইকে সওয়ার দুই দুষ্কৃতী। বাসিন্দাদের দাবি, এই ধরনের দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য ৩১, ৩২, ৩৮, ৪০, ৪১ নম্বর রাস্তা, শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম ও অশোকরোড এলাকায় বেশি।
মহিলাদের অভিযোগ, সকাল হোক বা সন্ধ্যা, প্রায় সব সময়েই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। চুরি যাচ্ছে পার্স, মোবাইল বা গলার হার। চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজীব গুপ্তর অভিযোগ, ‘‘সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে এলাকার মহিলারা তো বাড়ির বাইরে বের হতেই ভয় পাচ্ছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।’’
শুধু যে এমন দুষ্কর্ম, তাইই নয়। বরং মাস ছয়েক আগে আচমকা এই শহরে মোটরবাইক চুরি ও ছিনতাইও বেড়ে যায়। চিত্তরঞ্জন থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাস দুয়েক আগে পাঁচটি চোরাই মোটরবাইক উদ্ধার করে। একটি আন্তঃরাজ্য মোটরবাইক চুরির চক্রকেও পাকড়াও করা হয়।
কিন্তু রেল শহরে দুষ্কৃতীদের এমন দাপাদাপি কেন? এক পুলিশ কর্তা জানান, শহরে ঢোকা-বেরনোর দু’টি রাস্তার মূল গেটে রেল নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা মোতায়েন থাকেন। ফলে দুষ্কৃতীরা ওই রাস্তা ধরে যাতায়াত করে না। কিন্তু লোয়ার কেশিয়া লাগোয়া শহরের শেষ প্রান্তে একটি ‘পকেট গেট’ রয়েছে। ওই গেট দিয়ে শুধুমাত্র মোটরবাইক যাতায়াত করতে পারে। এখানে কোনও নিরাপত্তারক্ষী থাকে না বলে জানান বাসিন্দারা। দুষ্কর্ম করে দুষ্কৃতীরা এই পথ দিয়েই ঝাড়খণ্ডে চম্পট দিচ্ছে বলে দাবি।
যদিও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘খবর পেলেই ঘটনার তদন্ত করে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে পুলিশ।’’ চিত্তরঞ্জন থানার পুলিশের দাবি, ওই ‘পকেট-গেটে’ পাহারা বসানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy