ঘটনাস্থল: এখানেই খুন হন অর্পণবাবু। ফাইল চিত্র
সাক্ষীদের আস্থা হারিয়েছে সিআইডি। বার্নপুরের সিপিএম নেতা অর্পণ মুখোপাধ্যায় খুনের ঘটনায় শুক্রবার সিআইডি-র তদন্ত সম্পর্কে এ ভাবেই অসন্তোষ প্রকাশ করলেন হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। সেই সঙ্গে খুনের তদন্তভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-কে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বাসিন্দাদের দাবি, ওই খুনের ঘটনার একাধিক সাক্ষী রয়েছে। অথচ এ দিন বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘প্রাতর্ভ্রমণকারীরা সিআইডি-র তদন্তকারীদের কাছে ভয়ে মুখ খুলছেন না। যে প্রাতর্ভ্রমণকারীরা খুনের কথা জানালেন, তাঁদেরকেই তদন্তকারী অফিসার জিজ্ঞাসাবাদ করলেন না। ফৌজদারি ব্যবস্থায় সাক্ষীরাই নাক, চোখ, মুখ। অথচ সিআইডি সাক্ষীদেরই বিশ্বাস হারাতে বসেছে!’’
২০১২ সালের ১০ মে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন সিপিএমের হিরাপুর জোনাল কমিটির নেতা অর্পণবাবু। ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ‘আইবি’ বিভাগ। পরে পরিবারের দাবি মেনে তদন্তের দায়িত্ব নেয় সিআইডি। কিন্তু তদন্তে সন্তুষ্ট না হয়ে ২০১৪ সালে অর্পণবাবুর ছেলে অর্কদেব সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন।
গত কয়েক মাস ধরে সেই মামলার শুনানি চলছিল হাইকোর্টে। অর্কদেবের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এ দিন আদালতে দাবি করেন, ‘‘ওই একই এলাকায় দু’টি খুনের কিনারা করতে পারেনি রাজ্য পুলিশ।’’ কী কারণে অর্পণবাবু খুন হন, তা-ও সিআইডি-র তদন্তে উঠে আসেনি বলে পর্যবেক্ষণ বিচারপতির। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘তদন্তকারীরা সাক্ষীদের বিশ্বাসই অর্জন করতে পারেনি! উল্টে তদন্তকারীরা নিম্ন আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়ে জানালেন, তদন্ত শেষ। কিন্তু কী তদন্ত হয়েছে, তা আদালতে জানানো হল না!’’
সরকারি আইনজীবী তালে মাসুদ সিদ্দিকি এ দিন আদালতে দাবি করেন, ‘‘সিআইডি চেষ্টা করেছে।’’ তা শুনে বিচারপতি বাগচী বলেন, ‘‘আমি চাই না, রাজ্য পুলিশের তদন্তে সব সময় হস্তক্ষেপ করতে। কিন্তু সিবিআই-কে তদন্তভার দিতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ, এটি বিরলতম ঘটনা। সিআইডি-র উচিত, এই তদন্তে সিবিআই-কে সব রকম ভাবে সাহায্য করা।’’ এ দিন প্রয়াত নেতার ছেলে অর্কদেবও বলেন, ‘‘সিআইডি ঠিক মতো তদন্ত করতে পারেনি। তবে সিবিআই-কে প্রয়োজনে সিআইডি সাহায্য করবে বলে আশা রাখি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy