আহত সোনুবাবু। নিজস্ব চিত্র
পাঁচিল টপকে দোকানে ঢুকে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে টাকা হাতিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। শনিবার রাতে বর্ধমানের নবাবহাটের ১০৮ মন্দিরের কাছে এই ঘটনার পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের কাছে দরবার করেছেন। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “তিন-চার জন বহিরাগত দুষ্কৃতী এই ঘটনায় যুক্ত বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নবাবহাটের ১০৮ মন্দির পেরিয়ে কালভার্টের কাছে মাস সাতেক আগে পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুরের কয়েক জন ব্যবসায়ী মার্বেল পাথর ও টাইলসের দোকান খোলেন। রাজস্থানের মাকরানার এক ব্যবসায়ীরও তার অংশীদার। তাঁর মাধ্যমে সেখান থেকে এই দোকানে মার্বেল আসে। সে জন্য অন্য দোকানের থেকে তুলনামূলক কম দামে পাথর বিক্রি করায় বর্ধমান শহর ছাড়াও নানা এলাকা থেকে বরাত মিলছিল বলে দাবি দোকানের অন্যতম অংশীদার বিজয় প্রসাদের।
বিজয়বাবুরা পুলিশকে জানান, শনিবার সন্ধ্যায় এক খরিদ্দার দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে মার্বেল পাথর নিয়ে যান। দোকান বন্ধ করার পরে বসে হিসেব মেলাচ্ছিলেন আর এক অংশীদার সোনু কর্মকার বর্মণ। তখন পাঁচিল টপকে ভিতর ঢুকে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। সোনুবাবুর হাতে গুলি লাগে। তিনি পড়ে যান। তখন ক্যাশবাক্স থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। সোনুবাবু বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে ভর্তি রয়েছেন।
রবিবার হাসপাতালের বিছানায় বসে সোনু বলেন, “রাত সওয়া ৯টা নাগাদ খাবার আনার জন্য বিজয় ও দোকানের কর্মী সৈয়দ নুরুল ইসলাম বাইরে যান। তখনই পাঁচিল টপকে তিন জন ঢুকে টাকা চায়। আমি অস্বীকার করলে ডান হাতে গুলি করে। তার পরে লাথি মেরে ক্যাশবাক্স থেকে টাকা নিয়ে জ্যাকেটে ভরে পালায়।” বিজয়বাবুরা জানান, খাবার নিয়ে ফেরার সময়ে গুলির শব্দ পান তাঁরা। ছুটে গিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় সোনু পড়ে রয়েছে। তাঁকে সঙ্গে-সঙ্গে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বর্ধমান শহরে প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি এক পুলিশকর্মীর ফাঁকা বাড়িতেও লুঠপাঠ হয়েছে। শনিবার রাতের ঘটনার পরে নবাবহাটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বিজয় প্রসাদ বলেন, “রাত ৯টা নাগাদ শহরের কাছে গুলি করে লুঠের ঘটনা ঘটবে, ভাবতেও পারিনি!” স্থানীয় ব্যবসায়ী শশীরঞ্জন চৌধুরী, নারায়ণ সোমদের কথায়, “রাত সওয়া ৯টা নাগাদ দুষ্কৃতী-হামলা হলে তো সন্ধের পরে দোকান খোলাই রাখা যাবে না! আমরা পুলিশের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছি।”
পুলিশ জানায়, রাত ১১টা নাগাদ খবর পাওয়ার পরে ভোর পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েও দুষ্কৃতীদের খোঁজ মেলেনি। পুলিশকর্তাদের ধারণা, দুষ্কৃতীরা বয়সে তরুণ। তারা লুঠের ব্যাপারে এখনও পাকাপোক্ত হয়ে ওঠেনি। অন্তর্ঘাতের কারণে লুঠ কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy