Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Education

বিনা খরচে মেডিক্যালের প্রশিক্ষণ দেবে প্রশাসন

বিহারের ‘সুপার ৩০’-র মতো ‘স্বপ্ন উড়ান’ প্রকল্প চালু করতে চলেছে তারা। রবিবার বর্ধমানের একটি স্কুলে এই সুযোগ পেতে প্রায় ৪৬০ জন পড়ুয়া পরীক্ষা দেয়। তাদের মধ্যে ১০০ জনকে বেছে নিয়ে জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

এক মনে: পরীক্ষা দিতে ব্যস্ত পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

এক মনে: পরীক্ষা দিতে ব্যস্ত পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৮ ০১:৩২
Share: Save:

সর্বভারতীয় স্তরে পরীক্ষার ভয় কাটিয়ে ও যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে আরও বেশি ছেলেমেয়েকে মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ করে দিতে চাইছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। বিহারের ‘সুপার ৩০’-র মতো ‘স্বপ্ন উড়ান’ প্রকল্প চালু করতে চলেছে তারা। রবিবার বর্ধমানের একটি স্কুলে এই সুযোগ পেতে প্রায় ৪৬০ জন পড়ুয়া পরীক্ষা দেয়। তাদের মধ্যে ১০০ জনকে বেছে নিয়ে জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

প্রকল্পটি জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের মস্তিস্কপ্রসূত। রবিবার তিনি বলেন, “বিভিন্ন স্কুল ও শিক্ষানুরাগীদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারি, আমাদের জেলায় প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাবে সর্বভারতীয় স্তরে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় দাঁড়াতে পারছে না। সে কারণেই জেলার ১০০ জন মেধাবী পড়ুয়াকে এক বছর প্রশিক্ষণ দিয়ে মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য তৈরি করা হবে।” এর জন্য দিল্লির একটি স্বেচ্ছ্বাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তিনি। প্রতি দু’মাস অন্তর সেখান থেকে শিক্ষকেরা বর্ধমানে এসে প্রশিক্ষণ দেবেন। এ ছাড়াও ওই সংস্থার মাধ্যমে স্টাডি মেটেরিয়াল পাওয়া যাবে। সুযোগ থাকবে ভিডিও কনফারেন্স, সোশ্যাল মিডিয়া ও ই-মেলে প্রশিক্ষণেরও।

জেলাশাসক বলেন, “আপাতত ৬ জন স্থানীয় শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা পড়ুয়াদের প্রাথমিক পাঠ দেবেন। শনি-রবিবার ছাড়াও সপ্তাহে চার দিন বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’’ কাটোয়া-কালনার মতো দূরের পড়ুয়াদের জন্য প্রয়োজন হলে যাতায়াতেরও বিশেষ ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলে তাঁর দাবি।

বিহারের ‘সুপার ৩০’ প্রকল্পের প্রশিক্ষণে মাথায় ছিলেন পুলিশ প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তা। সারা বছর ধরে রাজ্যের ৬টি জায়গা থেকে ‘স্ক্রিনিং টেস্টের’ মাধ্যমে পড়ুয়া বাছত একটি সংস্থা। প্রথম দিকে আইএএস-আইপিএস প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। পরে আইআইটিরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

জেলাশাসকের কথায়, “আপাতত মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পরে আইআইটির জন্যও প্রশিক্ষণ দেওয়ার ভাবনা রয়েছে।” তাঁর দাবি, ভূমি রাজস্বের একটা অংশ সামাজিক কাজে খরচ করার জন্য জেলা প্রশাসন পায়। সেখান থেকে প্রশিক্ষণের খরচ চালানো হবে। প্রশাসনের দাবি, এক বছরের প্রশিক্ষণের জন্য দশ লক্ষ টাকা খরচের সম্ভাবনা রয়েছে।

এ দিন বর্ধমানের কৃষ্ণপুর হাইস্কুলে পরীক্ষা দিতে আসা বেশ কিছু পড়ুয়া বলে, “ডাক্তারি পড়তে গেলে সর্বভারতীয় পরীক্ষা দিতে হয়। রাজ্যের জয়েন্টের চেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। এ ধরণের প্রশিক্ষণ খুবই কাজে লাগবে।” মঙ্গলকোটের শিমুলিয়া গ্রামের পরিতোষ দাস কিংবা কাটোয়ার অর্জুনডিহি গ্রামের রফিক মল্লিকদের কথায়, “আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্য ও মনের জেদে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছি। সরকারি স্তরে প্রশিক্ষণ থাকলে অনেক পড়ুয়াই মনের জোর পাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE