Advertisement
১১ মে ২০২৪

গৃহপ্রবেশের আগের রাতেই বিস্ফোরণ

নতুন বাড়িতে গৃহপ্রবেশ ছিল সোমবার। কিন্তু তার আগের রাতেই দুষ্কৃতীদের ঘটানো বিস্ফোরণে ফাটল ধরল দেওয়ালে। কুলটির নিয়ামতপুরে রবিবার রাতে খনিকর্মীর নতুন বাড়িতে কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, সে নিয়ে ধন্দে পুলিশ।

নিয়ামতপুরে বিস্ফোরণ হয়েছে এই রান্নাঘরে। নিজস্ব চিত্র।

নিয়ামতপুরে বিস্ফোরণ হয়েছে এই রান্নাঘরে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলটি শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৩১
Share: Save:

নতুন বাড়িতে গৃহপ্রবেশ ছিল সোমবার। কিন্তু তার আগের রাতেই দুষ্কৃতীদের ঘটানো বিস্ফোরণে ফাটল ধরল দেওয়ালে। কুলটির নিয়ামতপুরে রবিবার রাতে খনিকর্মীর নতুন বাড়িতে কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, সে নিয়ে ধন্দে পুলিশ। তবে পরিবারটির সন্দেহ, বাড়ি নির্মাণের সময়ে কিছু যুবককে নেশার ঠেক বসাতে বাধা দেওয়ায় তারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।

খনিকর্মী অরবিন্দ গুপ্ত থাকতেন কুমারডুবি এলাকায়। সম্প্রতি তিনি নিয়ামতপুরে নিউরোড লাগোয়া এলাকায় বাড়ি তৈরি করেন। এ দিন গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠান ছিল বাড়িতে। সে জন্য রবিবার রাতে পাশেই আত্মীয়ের বাড়িতে চলে এসেছিলেন সপরিবারে। সেখানেই প্রস্তুতি চলছিল। অরবিন্দবাবু জানান, রাত ১০টা নাগাদ হঠাৎ বিকট আওয়াজ ভেসে এসে নতুন বাড়ি থেকে। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন গাড়ির চাকা অথবা বাজি-পটকা কিছু ফেটেছে। কিন্তু কাচ ভাঙারও আওয়াজ মেলায় তাঁর আতঙ্কিত হন।

অরবিন্দবাবু জানান, বাড়িতে ছুটে গিয়ে রান্নাঘর খুলে দেখা যায়, ভেন্টিলেটরের জায়গাটি ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। সেখানকার প্লাস্টার, ইট খসে গিয়ে ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। জানলার কাচ গুড়ো হয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলিংয়ের ফ্যানও। এমন ঘটনা নিয়ে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকার মানুষজনের মধ্যে। সোমবার সকালে পুলিশে অভিযোগ করেন অরবিন্দবাবু। এ দিন অনুষ্ঠানও হয় বাড়িতে।

ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরণের নমুনা সংগ্রহ করে পুলিশ। কীসের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, তা অবশ্য নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ছোটখাট ডিনামাইট বা জিলেটিন স্টিক ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। যদিও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, সেক্ষেত্রে দেওয়ালের একটা বড় অংশ ধসে পড়ত। কৌটো বোমা বা ওই জাতীয় কোনও বোমা ছুড়ে এই কাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। এসিপি (পশ্চিম) অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, ‘‘এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি প্রথমিক তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। তা শেষে হলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে।’’

ঘটনার পিছনে কাদের হাত থাকতে পারে, সে প্রশ্নে অরবিন্দবাবুর পরিবার দাবি করে, বাড়ি তৈরি হওয়ার সময়ে পাশের এলাকার কিছু লোকজন মদ-জুয়ার আসর বসানোর চেষ্টা করেছিল সেখানে। সে সবের প্রতিবাদ করেছিলেন তাঁর। তার জেরেই এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। আশপাশের বাসিন্দারাও অভিযোগ করেন, এলাকায় এক দল দুষ্কৃতীর দাপাদাপি বেড়েছে। প্রকাশ্যেই মদ-জুয়ার ঠেক চালাচ্ছে তারা। প্রতিবাদ করলে কটূক্তি, হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে। ওই দুষ্কৃতীরা এই কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলে প্রতিবেশীদেরও ধারণা। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন তাঁরা।

অভিযোগপত্রে অবশ্য ঠেক বসানোর প্রতিবাদের জেরে এমন হামলার অনুমানের কথা জানাননি অরবিন্দবাবু। তবে এসিপি (পশ্চিম) অগ্নিশ্বরবাবু জানান, তদন্তে সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

House warming Explosion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE