Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
পরিবারের দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই খুন

কিশোরের রক্তাক্ত দেহ

তাঁর দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে কান্দরায় টিউশন যাওয়ার জন্য বাস না পাওয়ায় ফুঁটিসাঁকো থেকে কান্দরার বাস ধরতে গিয়েছিল জসিমুদ্দিন। সুলতানপুরের কাছে দুই দুষ্কৃতী তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ফের স্কুলে যাওয়ার সময়ও একদল রাস্তায় ধরে তাকে হুমকি দেয়।

জসিমুদ্দিনের দেহ। নিজস্ব চিত্র

জসিমুদ্দিনের দেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৪
Share: Save:

বাসস্ট্যান্ডের ধারে জমি থেকে রক্তাক্ত দেহ মিলেছে এক কিশোরের। পরিবারের দাবি, ধারালো অস্ত্রের কোপে খুন করা হয়েছে কেতুগ্রামের কাঁটারির বাসিন্দা জসিমুদ্দিন শেখকে (১৭)। রাজনৈতিক কারণে খুন বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। মাথার পিছনে ইঞ্চি দুয়েক চওড়া ও দেড় ইঞ্চি গভীর ক্ষত রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। যদিও সন্ধ্যা পর্যন্ত কারও নামে অভিযোগ হয়নি।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ার কিছুক্ষণ পরে এক বন্ধুর ফোনে বাড়ি থেকে বেরোয় জসিমুদ্দিন ওরফে রানা। শুক্রবার সকাল ছ’টা নাগাদ মাঠে কাজ করতে গিয়ে কাঁটারি হাইাদ্রাসার দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র জসিমুদ্দিনের উল্টোনো দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। মুখ, গলায় রক্তে ভাসছিল। আঘাতের চিহ্ন ছিল থুতনিতেও। নিহতের বাবা নাসিরুদ্দিন শেখ বলেন, ‘‘বন্ধুদের ডাকে কাঁটারিতে তৃণমূলের নতুন কার্যালয়ে যাবে বলে বেরিয়েছিল। ভোরে এই খবর এল।’’

তাঁর দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে কান্দরায় টিউশন যাওয়ার জন্য বাস না পাওয়ায় ফুঁটিসাঁকো থেকে কান্দরার বাস ধরতে গিয়েছিল জসিমুদ্দিন। সুলতানপুরের কাছে দুই দুষ্কৃতী তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ফের স্কুলে যাওয়ার সময়ও একদল রাস্তায় ধরে তাকে হুমকি দেয়। এমনকী, জসিমুদ্দিন কখন স্কুল থেকে ফিরছে তাও নজরে রাখা হয়েছিল বলে নাসিরুদ্দিনের দাবি। কিন্তু ১৭ বছরের ছেলেকে এ ভাবে খুনের কারণ?

জানা যায়, নিহতের দুই পিসতুতো দাদা লোটাস শেখ ও তুফান শেখ দীর্ঘদিন ধরে শাসকদলের কর্মী। কেতুগ্রামের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাহের শেখ খুনের অন্যতম অভিযুক্তও তারা। ১২ এপ্রিল ওই খুনের ঘটনার পর থেকে তারা এলাকাছাড়া। বছর দুয়েক আগে বেরুগ্রামের উপপ্রধান বাদশা শেখ খুনেও নাম জড়িয়েছিল লোটাস, তুফানের। ওই বছর সাহিনা খাতুন নামে এক মহিলাকে খুন ও মারধরেরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধ। লোটাস, তুফানের মা তথা নিহতের পিসি আনসারা বিবির দাবি, ‘‘আমার ছেলেরা অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ। বিধায়কের লোকজন ওদের এলাকায় না পেয়ে ভাইপোকে ভয় দেখাত। শেষমেশ মেরেও দিল।’’

নাসিরুদ্দিনেরও অভিযোগ, ‘‘আমার ছেলে বামুন্ডিতে রাজনৈতিক কাজে যায়, তথ্য আদানপ্রদানের কাজ করে এমনটা ভাবত দু্ষ্কৃতীরা। দিন পনেরো আগে হুমকিও দিয়েছিল।’’ ওই কারণে খাসপুরে মামারবাড়িতে থেকেই জসিমুদ্দিন পড়াশোনা করত বলেও তাঁর দাবি। তবে দিন সাতেক হল কাঁটারিতে বাড়ি ফিরেছিল সে। পুলিশের অবশ্য দাবি, নেশা করত জসিমুদ্দিন। তার ভাইয়ের উপর যাতে এর কুপ্রভাব না পড়ে সেই জন্য তাকে মামারবাড়িতে রাখা হয়েছিল।

কেতুগ্রামের তৃণমূল পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।’’ বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE