নো এন্ট্রির রাস্তা ছেড়ে অন্যত্র দাঁড়িয়ে মালবাহী গাড়ি। বা়ড়ছে যানজট। কাটোয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
বাসস্ট্যান্ড পেরিয়ে শহরে ঢোকার পর থেকেই গতি থমকে যেত। যানবাহন তো দূর, হেঁটেই এগোনো যেত না। একের পর এক মালবাহী গাড়ি, মোটরবাইক, সাইকেল, টোটো, রিকশা, ভ্যানে অতিষ্ঠ হয়ে যেতেন পথচারীরা। ছোটখাট দুর্ঘটনাও লেগেই থাকত। যানজটের ফাঁস আলগা করতে সপ্তাহখানেক আগে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কিছু রাস্তায় ‘নো এন্ট্রি’র সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের জেরে মালবাহী গাড়ি ঢুকতে না পারায় সমস্যার অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, বেশির ভাগ ট্রাক বা ম্যাটাডর শহরে ঢুকতে রাত দশটা-বারোটা বেজে যাচ্ছে। ততক্ষণ দোকান খুলে বসে থাকতে হচ্ছে। আবার তখন মাল না পেলে ব্যবসা লাটে উঠছে। যদিও তাঁদের এই দাবিতে প্রশ্ন উঠছে কোন দিকটা দেখবে প্রশাসন। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য না ব্যবসায়ীক প্রয়োজন কী প্রাধান্য পাবে উঠছে সে প্রশ্নও।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন বাজার চৌরাস্তা, কাছারি রোড ও পুরসভা মোড়ে চারটি সিগন্যাল পয়েন্ট রয়েছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ার থাকলেও মালবাহী গাড়ির সাথে টোটো, রিকশা দাপটে যানজট দিনদিন বাড়ছিল। বাসস্ট্যান্ডে বাসগুলো অতিরিক্ত যাত্রী তোলার জন্য বেশি সময় দাঁড়ানোয় যানজট বাড়ত আরও। আর রেলগেট বন্ধ থাকলে তো কথায় নেই। স্টেশন বাজারে আবার দোকানের সামনে রাস্তায় ডাঁই করে জিনিস রাখেন ব্যবসায়ীরা। ফলে মালপত্র, সব্জি, প্লাস্টিকের জিনিস, আবর্জনার স্তুপ পেরিয়ে পথ চলা দায় ছিল। ফল, সব্জি বয়ে আনা পণ্যবাহী গাড়ি ঘন্টার পর ঘন্টা ওই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকায় মুশকিল বাড়ত আরও।
সমস্যা মেটাতে টোটো ইউনিয়ন, লরি ইউনিয়নের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মহকুমাশাসক। ঠিক হয়, পুরসভা মোড়, বাজারের মতো ব্যস্ত এলাকায় সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মালবাহী গাড়ি ঢুকতে পারবে না। সিদ্ধান্ত বলবৎ হওয়ার পরে যানজটের সমস্যা বেশ খানিকটা মেটেও। কিন্তু এ বার ব্যবসায় লোকসানের অভিযোগ তুললেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী অনুপ সাহা, শঙ্কর খান্ডেলওয়াল, সাধন দাসদের কথায়, ‘‘রাজস্থান, আলিগড়, কলকাতা, আসানসোল থেকে মালপত্র আসে। রাত্রে ঢোকা পণ্য নামানোর শ্রমিক পাচ্ছি না। এমনকী, মজুরি বেশি দিতে চাইলেও হরিপুর, খাজুরডিহি, মাঠপাড়া থেকে আসা শ্রমিকরা রাতে কাজ করতে চাইছেন না।’’ সবমিলিয়ে ব্যবসা বন্ধ করার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, যে সময় স্কুল--অফিস-বাজারের ব্যস্ততা কম তখন ঘণ্টা দুয়েকের ছাড় দেওয়া হোক। মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির মুখপাত্র বিদ্যুৎ নন্দীর দাবি, দুপুরে কয়েক ঘণ্টা মালবাহী গাড়ি ঢোকার অনুমতি চেয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy