মিছিলে হাজির উৎপল রায় (সবুজ পাঞ্জাবি)। নিজস্ব চিত্র
টিকিট না পেয়ে বিক্ষুব্ধদের নির্দল হিসেবে প্রার্থী হওয়ার তোড়জো়ড়ে এমনিতেই নাজেহাল অবস্থা। তার উপরে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার মিছিলে পুরোভাগে এক বেআইনি কয়লা কারবারে অভিযুক্তের উপস্থিতি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হল তৃণমূলের অন্দরে।
শনিবার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী, সদ্য দলে যোগ দেওয়া প্রাক্তন সরকারি আমলা দিলীপ অগস্তি মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে আসেন। সেই মিছিলে ছিলেন শহরে বেআইনি কয়লা কারবারে অভিযুক্ত উৎপল রায়। দিলীপবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমি জানিই না এমন কেউ মিছিলে ছিলেন কি না। জানলে আমি নিজেই মিছিল থেকে সরে যেতাম।’’
সেপ্টেম্বরে বেনাচিতির একটি বাড়ি থেকে বেশ কিছু তলোয়ার, হকি স্টিক, রড, কৌটো বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। সেই ঘটনায় নাম জড়ায় উৎপলের। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারও করে। এ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে আর এক বেআইনি কয়লার কারবারি রাজু ঝা-এর সঙ্গে কয়লা, গাঁজা ও অস্ত্র পাচারের পুরনো মামলা রয়েছে। সেই মামলায় বেশ কিছু দিন জেলও খেটেছেন তিনি। সেই উৎপলবাবুকে এ দিন মিছিলে সামনে সারিতে দেখা গিয়েছে।
নানা কারণে দলীয় নেতৃত্বের উপরে ক্ষোভ জানিয়ে তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর ও দলীয় কর্মী মিলিয়ে ১৪ জন নির্দল হিসেবে মনোনয়ন তুলেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসতে হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল নেতা স্বপন দেবনাথকে। তার পরে আবার এ দিনের ঘটনায় দলের একাংশে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। দুর্গাপুরের এক নেতার অভিযোগ, ‘‘ওই কয়লা কারবারি এক সময়ে বামেদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। আমাদের দলের কয়েক জন এখন তাঁর উপরে ভরসা করে কিছু ওয়ার্ডে জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। এ সব করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন তাঁরা।’’
দুর্গাপুরে পুরভোটে তৃণমূলের অন্যতম পর্যবেক্ষক হিসেবে রয়েছেন আসানসোলের মেয়র তথা বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এ দিন জিতেন্দ্রবাবুকেও ওই কয়লা কারবারির সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলতে দেখা যায়। জিতেন্দ্রবাবু অবশ্য দাবি করেন, তিনি তাঁকে চেনেন না। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ কথা বলতে এলে জবাবে কিছু বলতেই হয়। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’’
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার দাবি করেন, ‘‘বরাবরের মতো পেশিশক্তিতে ভরসা করেই জয়ের স্বপ্ন দেখছে শাসকদল। এ দিনের ঘটনাতেই তা প্রমাণ হয়ে গেল। নির্বিঘ্নে ভোটের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy