প্রতীকী ছবি।
শিক্ষকের কাছে চিঠি লিখে নিজের বিয়ে আটকাল দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। মঙ্গলবার ভাতারের ওরগ্রামের ঘটনা। এ দিনই আবার কাটোয়ার অগ্রদ্বীপে সদ্য বিবাহিত এক নাবালিকাকে উদ্ধার করেন প্রশাসনের কর্তারা।
আউশগ্রামের নওয়াদা গ্রামের ওই আদিবাসী ওই কিশোরী ওরগ্রাম চতুষ্পল্লি হাইমাদ্রাসায় পড়ে। মঙ্গলবার হাইমাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিজাম আহমেদকে লেখা চিঠিতে সে জানায়, তাকে কিছু না জানিয়েই বাবা-মা বিয়ে ঠিক করেছেন। সোমবার বিকেলে বা়ড়ি ফিরে সে কথা জানতে পারে সে। আজ, বুধবার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার মাদ্রাসায় এসেই শিক্ষককে সে জানায়, তাকে হস্টেলে রাখার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। না হলে বাড়ি ফিরলেই বিয়ে দেওয়া হবে। ওই শিক্ষক সঙ্গে-সঙ্গে ভাতার ব্লক প্রশাসনকে খবর দেন। প্রশাসনের কর্তারা ওরগ্রাম ফাঁড়ির পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হাইমাদ্রাসায় যায়। মেয়েটির বাবা-মাকে সেখানে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদের বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ করা হয়। দিন সাতেকের জন্য মেয়েটিকে হস্টেলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। নিজাম আহমেদ বলেন, ‘‘মেয়েটি মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে। সে কন্যাশ্রী ক্লাবেরও সদস্যা। নিজেরও বিয়ে যে ভাবে রুখল, তা অন্যদেরও সাহস জোগাবে।’’
মেয়েটি জানায়, বিভিন্ন কন্যাশ্রী ক্লাবের সভায় গিয়ে কম বয়সে বিয়ের কুফল সম্পর্কে জেনেছে। সে কথা বাবা-মাকে জানালেও তাঁরা বিয়ে বন্ধে রাজি হননি। সে জন্যই স্কুলের শিক্ষকের দ্বারস্থ হয় সে। ভাতারের বিডিও শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, ব্লক কন্যাশ্রী প্রকল্পের আধিকারিক উজ্জ্বল সামন্তেরা বলেন, ‘‘নিরন্তর সরকারি প্রচার যে কাজে আসছে, তা এর থেকেই প্রমাণ।’’ মেয়েটির বাবা-মা বলেন, ‘‘এই বয়সে আমাদের গ্রামের অনেক মেয়েরই বিয়ে হয়ে যায়। আমরাও বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু এর খারাপ দিক জানা ছিল না।’’
কালনার নান্দাইয়ের এক নাবালিকা সপ্তাহখানেক আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করে কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের একটি ছেলেকে। তার অভিযোগ, অভিভাবকেরা তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করছিলেন। কোনওক্রমে সে আবার শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে আসে। এই খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করলেন প্রশাসনের কর্তারা। মঙ্গলবার কালনা ১ বিডিও দেবলীনা সর্দার, কাটোয়া ২ বিডিও শিবাশিষ সরকার, ব্লক সমাজকল্যাণ আধিকারিক সুদর্শন মজুমদারকে নিয়ে সেখানে যান চাইল্ডলাইনের কর্তারা। নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে কম বয়সে বিয়ের কুফল বোঝান তাঁরা। মেয়েটিকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান আধিকারিকেরা। তার উপরে যাতে নির্যাতন না হয় সে দিকে খেয়াল রাখা হবে বলে জানান দেবলীনাদেবী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy