এক পক্ষের অভিযোগ, গ্রামের একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা চলাকালীন অন্য পক্ষ হামলা চালায়। অপর পক্ষের পাল্টা অভিযোগ, হামলা চালিয়েছে অন্য গোষ্ঠী। এ ভাবেই শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দলের ঘটনা ঘটল মন্তেশ্বরের জামনা পঞ্চায়েতের কুলে গ্রামে। পুলিশ জানায়, গ্রেফতার করা হয়েছে চার জনকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, ব্লকের পঞ্চায়েতে সভাপতি বদলের চেষ্টাকে কেন্দ্র করেই এই গোলমালের সূত্রপাত।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি মন্তেশ্বর ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েত এলাকায় দলীয় সভাপতিদের বদলের চেষ্টা করা হয়। জামনা পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের সভাপতি অসিত দাঁ। ব্লক কমিটি প্রকাশিত একটি তালিকা প্রকাশ করে সেখানে সভাপতি হিসেবে লালন শেখের নাম উঠে আসে। যদিও জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ জানিয়ে দেন, এ বিষয়ে জেলার অনুমোদন নেই। তৃণমূল সূত্রের খবর, তার পরে থেকেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয় কলহ।
গত ১২ অক্টোবর কুলে গ্রামের বাসিন্দা রেজাবুল মণ্ডল মন্তেশ্বর থানায় অভিযোগে জানান, তাঁরা কয়েক জন গ্রামের একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। সেই সময়ে কয়েক জন জানায়, ‘তোদের অঞ্চল সভাপতি হয়নি। সভাপতি আমাদেরই রয়েছে।’ অভিযোগ এর পরেই কিল, ঘুষি, চড় মারা হয়। রেজাবুলের অভিযোগ, লাঠি, টাঙ্গি দিয়েও হামলা চালানো হয়। এক জন মহিলা আটকাতে গেলে তাঁর শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। কয়েক জনকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন, ২৭ জন অভিযুক্তের অন্যতম, তৃণমূল নেতা সুকুর মল্লিক। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘কিছু কর্মী, সমর্থক ওই দিন দলীয় কার্যালয়ে বসেছিলেন। অন্য গোষ্ঠীর লোকজন হামলা চালান। তাতে আমাদের কয়েক জন জখম হন। তাঁদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে গেলে সেখানেও হামলা চালানো হয়।’’
পুলিশ জানায়, রেজাবুলদের অভিযোগের ভিত্তিতে শ্লীলতাহানি, হত্যার চেষ্টা ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধৃত কেতাবুল রহমান শেখ, আব্দুস সামাদ মণ্ডল, পারভেজ আলম মণ্ডল ও সুজাত মল্লিককে শনিবার কালনা আদালতে তোলা হলে সুজাতের ছ’দিন পুলিশি হেফাজত ও বাকিদের জেল হাজত হয়।
যদিও ঘটনাটিকে অরাজনৈতিক বলে দাবি করে তৃণমূলের মন্তেশ্বর ব্লক সভাপতি শেখ আজিজুল হক বলেন, ‘‘স্থানীয় একটি সম্পত্তি নিয়ে গোলমাল চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তার জেরেই এমন ঘটনা বলে শুনেছি।’’ জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘মন্তেশ্বরের কয়েক জন নেতাকে জেলা কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে।’’
অভিযুক্তদের আইনজীবী পার্থসারথি করের দাবি, ধৃতেরা চার জনই জখম। তবে পুলিশ ও জেল কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্তদের ঠিকমতো চিকিৎসা করানোর বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম ডালিয়া ভট্টাচার্য।
এ ছাড়া কালনার ধাত্রীগ্রামে তৃণমূল আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীতেও গোষ্ঠী কলহ সামনে আসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy