তাঁর দায়িত্ব ছিল ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু সেটা না গিয়ে তিনি ট্রেনের যাত্রীদের কাছ থেকেই জোর করে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছিলেন বলে অভিযোগ। যাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে মাঝপথে ট্রেনে উঠে ওই রেল পুলিশ কর্মীকে ধরা হয়েছে বলে দাবি রেল কর্তাদের।
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তি জিআরপির অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর পদে রয়েছেন। যাত্রীদের কাছে থেকে জোর করে টাকা আদায় করার অভিযোগে প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণ হওয়ায় ওই কনস্টেবল বারুইচন্দ্র পালকে আপাতত লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। রেল পুলিশের এক ডিএসপি ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছেন। তাঁর রিপোর্ট পাওয়ার পরেই ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।
চলন্ত ট্রেন থেকেই মোবাইল মারফৎ এক যাত্রী ওই ঘটনাটি জানিয়েছিলেন রেলের কন্ট্রোলে। কিন্তু ততক্ষণে ট্রেনটি বর্ধমানের কাছে পৌঁছে যাওয়ায় রেল পুলিশ ঘটনাটি জানিয়ে দেয় বর্ধমান জিআরপি থানায়। ট্রেনটি বর্ধমান স্টেশনে থামলে রেল ও রেল পুলিশের একটি দল কামরায় উঠে ওই ব্যক্তিকে আটক করেন। পরে দেখা যায়, আটক ব্যক্তি ট্রেন যাত্রীদের সুরক্ষা দেওয়ার জিআরপি এসকট দলের দলের এক জন পুলিশকর্মী হিসাবে ট্রেনটিতে যাচ্ছিলেন।
পূর্ব রেল সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটে সোমবার। হাওড়া থেকে ট্রেনটি ছাড়ার পরেই রেল পুলিশের ওই এএসআই ট্রেনটির সাধারণ কামরায় ঢুকে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা শুরু করেন। টাকা না দিলে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। শ্রীরামপুর থেকে ওই ট্রেন ওঠেন আনন্দ খান্দসা নামে এক ব্যবসায়ী। অভিযোগ, ট্রেনে ওঠার পরেই ওই পুলিশ কর্মী আনন্দবাবুর কাছ থেকেও জোর করে ৬০ টাকা আদায় করেন। কিন্তু তিনি উপায়ন্তর না দেখে টাকা দিলেও পরে নিজের মোবাইল থেকে রেলের কন্ট্রোলে ঘটনাটি জানান। আনন্দবাবু এদিন বলেন, ‘‘ওই কামরার কোনও যাত্রীই বুঝতে পারেননি, লোকটি পুলিশকর্মী। প্রথমে মনে হয়েছিল রেলের টিকিট পরীক্ষক। পরে বর্ধমানে রেল পুলিশ আসার পরে বিষয়টি সবার কাছে পরিস্কার হয়।’’
এতদিন যাত্রীদের অভিযোগ করার জায়গাই ছিল না। সব স্টেশনে জিআরপি থানাও নেই। কিন্তু সুরেশ প্রভু আসার পরে রেল কর্তারা বাধ্য হয়েই সোশাল নেওয়ার্কে হাজির হওয়ায় যাত্রীদের অভিযোগগুলি এখন টের পাচ্ছেন তাঁরা। পাশাপাশি নানা ধরণের মোবাইল অ্যাপ চালু হওয়ায় যাত্রীরা এখন সহজেই তাঁদের অভিযোগগুলি জানাতেও পারছেন।
এক রেল কর্তারা কথায়, রেল বোর্ডের নির্দেশে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিটের মধ্যেই যাত্রীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কী কাজ করা হল, সেটাও এখন জানিয়ে দিতে হচ্ছে ওই সোস্যাল মিডায়াতে। ফলে বাধ্য হয়েই যাত্রীদের অভিযোগ সঙ্গে সঙ্গে নিষ্পত্তি করতে হচ্ছে রেলকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy