Advertisement
০২ মে ২০২৪

প্রচারের শেষবেলায় ভোটারের তারা-দর্শন

প্রচারের শুরুতে বড় নেতা, তারকারা না থাকলেও শেষ পাতে কয়েকজন তারকার দেখা মিলল জেলায়। মূলত শাসকদলের সভা, রোড শোতেই টলিউডের একাধিক অভিনেতাকে দেখা গেল। বাকিরা কেউ বাড়ি বাড়ি ঘুরে, কেউ আবার ভোটের দিনের নানা প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেই কাটালেন প্রচারের শেষ দিন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪০
Share: Save:

প্রচারের শুরুতে বড় নেতা, তারকারা না থাকলেও শেষ পাতে কয়েকজন তারকার দেখা মিলল জেলায়। মূলত শাসকদলের সভা, রোড শোতেই টলিউডের একাধিক অভিনেতাকে দেখা গেল। বাকিরা কেউ বাড়ি বাড়ি ঘুরে, কেউ আবার ভোটের দিনের নানা প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেই কাটালেন প্রচারের শেষ দিন।

কাটোয়া, দাঁইহাট, কালনায় বৃহস্পতিবার সভা, পথসভা করেন অভিনেতা হিরণ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, সাংসদ সুনীল মণ্ডল প্রমুখেরা। তবে তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে হিরণের বক্তব্য শোনার চেয়ে তাঁকে দেখতে, একটু ছুঁতেই ভিড় ছিল বেশি। সকাল ১১টা নাগাদ কাটোয়ার মজরুল মঞ্চে তৃণমূলের সভায় হিরণকে দেখতে জড়ো হয়েছিলেন বহু কমবয়েসী ছেলেমেয়েরাও। পছন্দের তারকার সঙ্গে মোবাইলে একটা ছবি তুলতে ভিড় জমান তাঁদের অনেকেই। হিরণ বলেন, ‘‘সারা রাজ্যে পরিবর্তন হলেও কাটোয়ায় হয়নি। উন্নয়নের জন্য কাটোয়া পুরসভার পরিবর্তন চাই।’’ চেনা গড়ে কংগ্রেস অবশ্য শেষ দিন বিশেষ কিছু করেনি। বরং ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার, কয়েকটা মোড়ে পথসভাতেই স্বচ্ছন্দ ছিলেন প্রার্থীরা। বিজেপি শেষ দিনে হিরণের টক্করে অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে আনতে চাইলেও বুধবার বেশ রাতে তিনি আসতে পারবেন না বলে জানা যায়। ক্ষুব্ধ কর্মীরা কাটোয়ায় দলীয় কার্যালয়েই ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ।

কালনাতেও বেশ কিছু তারকা সমাবেশ দেখা যায়। বুধবার রাতেই শহরে চলে আসেন অভিনেতা লোকেশ ঘোষ। সকালে সাত নম্বর ওয়ার্ডে বিদায়ী পুরপ্রধান বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর সঙ্গে প্রচারে পা মেলান তিনি। ১২টা পর্যন্ত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বিভিন্ন ওয়ার্ড চষে ফেলেন। সিনেমার পর্দার বাইরে অভিনেতা হিরণকে দেখতে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সকাল থেকেই ভিড় জমে যায়। রোদ এড়াতে মাথায় আঁচল, ওড়না দিয়ে ভিড় দেখা যায় মহিলাদের। ১টা নাগাদ খবর আসে শুধু হিরণ নন, লোকগীতি শিল্পী পরীক্ষিত বালা এবং রাজ্যের ক্ষুদ্র, কুটির শিল্পও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও আসছেন। তাঁদের আগেই ওখানে পৌঁছে যান টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র। পৌনে দুটো নাগাদ হিরণ পৌঁছনোর পরেই শুরু হয় প্রচার। প্রচার মঞ্চে রসিকতা করে স্বপনবাবু বলেন, ‘‘হিরণ জামাই চারশো বিশের শুটিংয়ে ব্যাঙ্ককে ব্যস্ত ছিল। ওর সিনেমা রিলিজ হবে জামাইষষ্ঠীর দিন। তবে সিনেমায় হিরণকে ৪২০ বলে মেনে নিলেও বাস্তবে মেনে নেব না। কারণ ও খুব ভাল ছেলে।’’ স্বপনবাবুর কথা শেষ হতে না হতেই হাততালির ঝড় বয়ে যায়। পরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তারকা অভিনেতা বলেন, ‘‘১৮টি ওয়ার্ডেই তৃণমূলকে জেতাতে হবে। আপনারা ভোট দেবেন দুটি বিষয় দেখে। একটি প্রতীক, অন্যটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ সভায় খালি গলায় গান গেয়ে দর্শকদের আনন্দ দেন পরীক্ষিতবাবু। ছোট সভা সেরে ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী লীনা মল্লিক বসুকে নিয়ে শুরু হয় একটি মিছিল। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী তন্দ্রা বারুরীর হয়ে প্রচারে নামেন আর এক অভিনেতা দেবরাজ রায়। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে একটি টোটোতে চড়ে প্রচার সারেন তিনি। শুধু ১২ নম্বর ওয়ার্ডই নয়, টোটো পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন দিয়ে সাজিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচার সারেন তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএম কর্মীরাও। এ ছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে বেশ কিছু ছোট ছোট সভাও করে বিজেপি প্রার্থীরা। বিজেপি নেতা সুশান্ত পাণ্ডের অভিযোগ, কয়েকটি সভার খুব কাছে এসে তৃণমূলের লোকজন উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করে। সিপিএম কয়েকটি টুকরো টুকরো মিছিল করলেও জোর দেয় বাড়ি বাড়ি প্রচারেই।

মেমারিতেও নানা দল নানা ভাবে ফায়দা তোলে শেষ দিনের প্রচারের। মেমারি ১ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ মাঠের কাছে সাতসকালে কংগ্রেস একটি প্রচার সভা করে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী স্বপন ঘোষাল ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে হাতজোড় করে ভোট চান। বিজেপিও শেষ দিন রাজ্যনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে এনে একটি রোড-শো করে। প্রচারে এসেছিলেন বাংলা টিভি সিরিয়ালের বেশ কয়েকজন অভিনেত্রীও। সিপিএমের তরফে মঙ্গলবারই মেমারিতে মহামিছিল করা হয়। এ দিন তারা জোর দেন বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটারদের বোঝানোতেই।

এখন সভা, তারকা সমাবেশ না কি ভোটারদের বাড়ি পৌঁছে যাওয়া— কোনটা রঙে ডুবলেন ভোটারেরা তা বোঝা যাবে শনিবারই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE