Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘ওয়ান’-এ গতি পাবে ব্যবসা, দাবি

নদী বা সমুদ্র বন্দরের উপরে চাপ কমাতে স্থলবন্দর তৈরি হয়। জাহাজে ‘কনটেনার’ তোলা বা নামানোর আগে শুল্ক দফতরের যে ছাড়পত্র লাগে, তা-ও সেখান থেকে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে।

কাঁকসার বাঁশকোপায়। নিজস্ব চিত্র

কাঁকসার বাঁশকোপায়। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫৬
Share: Save:

তিনটি জাপানি সংস্থার মিলিত উদ্যোগ, ‘ওসেন নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস’ (ওয়ান) সোমবার থেকে দুর্গাপুর স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পূর্ব ভারতে যাত্রা শুরু করল। শিল্পপতি ও সংস্থা কর্তৃপক্ষের আশা, এর ফলে এক দিকে যেমন আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের নানা কারখানা কর্তৃপক্ষ উপকৃত হবে। অন্য দিকে, ব্যবসা বাড়বে গত কয়েক বছরে ধরে শিল্পের অভাবে ভুগতে থাকা স্থলবন্দরেও।

নদী বা সমুদ্র বন্দরের উপরে চাপ কমাতে স্থলবন্দর তৈরি হয়। জাহাজে ‘কনটেনার’ তোলা বা নামানোর আগে শুল্ক দফতরের যে ছাড়পত্র লাগে, তা-ও সেখান থেকে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। ‘কনটেনার’ সরাসরি জাহাজে গিয়ে তুলে দেওয়া যায়। তা ছাড়া স্থলবন্দর থেকে ‘কার্গো’ পাঠানোরও ব্যবস্থা থাকে। হলদিয়া ও কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে জাহাজে বহু পণ্য যাতায়াত করে। ওই দুই বন্দরের উপরে চাপ কমাতে ২০০৬-এ দুর্গাপুরের বাঁশকোপায় পূর্ব ভারতের প্রথম স্থলবন্দর গড়ে তোলে ‘অ্যালায়েড আইসিডি সার্ভিসেস’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা।

প্রায় পাঁচ হেক্টর জমিতে তৈরি ওই স্থলবন্দরে ‘কনটেনার’ ওজন করা, শুল্ক নেওয়া বা শুল্ক দফতরের ছাড়পত্র দেওয়ার মতো নানা ব্যবস্থা আছে। ২০১১-য় ভারতীয় রেলের অধীন ‘কনটেনার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া’-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রেল যোগাযোগও গড়ে ওঠে। ২০১৪ সালে সরাসরি বাংলাদেশে রফতানিও শুরু হয়। বছরে প্রায় ৬০ হাজার কনটেনার ওঠানো-নামানোর পরিকাঠামো রয়েছে সেখানে। কিন্তু এখন সাকুল্যে বছরে মাত্র ১৫-২০ হাজার কনটেনার ওঠানো-নামানো হয় বলে জানা গিয়েছে।

সংস্থার এক কর্তা জানান, ২০০৬-এ রাজ্যে শিল্পায়নের হাওয়া দেখে দুর্গাপুরে বন্দরটি তৈরি করা হয়। আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে নতুন-নতুন বহু কারখানা সেই সময়ে চালু হয়। কিন্তু পরে পরিস্থিতি বদলে যায়। আশানুরূপ ব্যবসা হয়নি। ‘ওয়ান’ আসায় ব্যবসা ফের বাড়বে বলেই মনে করছেন তিনি। ওয়ানের আধিকারিক সুব্রত চৌধুরী জানান, তাঁদের হাতে আড়াইশোরও বেশি জাহাজ রয়েছে। একশোরও বেশি দেশে তাঁরা পরিষেবা দিয়ে থাকেন। পূর্ব উপকূলে চেন্নাই, বিশাখাপত্তনমে তাঁদের জাহাজ রয়েছে। তবে হলদিয়া ও কলকাতায় তাঁরা তৃতীয় কোনও সংস্থার মাধ্যমে কাজ করবেন। তিনি বলেন, ‘‘গভীর সমুদ্র বন্দর দরকার। তাজপুর নিয়ে আমরা আশাবাদী। গভীর সমুদ্র বন্দর গড়া হলে আমরা নিজেদের জাহাজ নিয়ে আসতে পারব। খরচ অনেক কমে যাবে। উপকৃত হবেন ব্যবসায়ীরা।’’

দুর্গাপুরে শিল্পের সুদিন আর নেই বলে অভিযোগ শিল্পপতিদের। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও কেন তাঁরা এগিয়ে এলেন? সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘এখানকার ফিলিপস কার্বন ব্ল্যাক (পিসিবিএল) আমাদের পরিষেবা নিতে শুরু করেছে। কথা চলছে গ্রাফাইট ইন্ডিয়া-সহ আরও কিছু কারখানার সঙ্গেও। আমরা কাজ শুরু করায় এই এলাকার রফতানিকারীদের খরচ অনেকখানি কমে যাবে।’’ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে অনুশ্রী সেন বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে আমাদের ব্যবসাও থমকে গিয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার ধারে-কাছেও আমরা কোনও দিন পৌঁছতে পারিনি। ‘ওয়ান’ আসায় কিছুটা ব্যবসা বাড়বে আশা করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Land Port Trade Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE