—প্রতীকী চিত্র।
স্কুল উন্নীত হয়েছে মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে। চালু হয়েছে নতুন-নতুন বিষয়। অথচ, উপযুক্ত শিক্ষকের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে পঠনপাঠন— এমনই অভিযোগ অভিভাবক ও পড়ুয়াদের। স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের অনেকে এই অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়েই জানান, দীর্ঘদিন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে থাকায় জোড়াতালি দিয়ে কোনও রকমে কাজ চালাতে হচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতি।
পুরনো স্কুলগুলিতে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষকের আকাল ছিল। তার উপরে গত কয়েক বছরে পড়ুয়াদের সমস্যার কথা ভেবে অনেক মাধ্যমিক স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত করেছে রাজ্য সরকার। অথচ, নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি সেই সব স্কুলে। ফলে, কোথাও মাধ্যমিকের শিক্ষক, কোথাও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। তাতে আখেরে ক্ষতি হচ্ছে পড়ুয়াদের, অভিযোগ অভিভাবকদের। পড়ুয়াদেরও বক্তব্য, শিক্ষকের অভাবে পড়াশোনা হচ্ছে না ঠিকমতো।
দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ভুড়কুন্ডা এনসি ইনস্টিটিউশনে সংস্কৃত, দর্শন ও ভূগোলের স্থায়ী শিক্ষক নেই। নতুনডাঙা হাইস্কুলে পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যা ও ভূগোলের শিক্ষক নেই। দুর্গাপুরের বেনাচিতি হাইস্কুলে নিউট্রিশন, সগড়ভাঙা হাইস্কুলে গণিত ও বাংলার শিক্ষক নেই। অন্ডাল গার্লস হাইস্কুলে অঙ্ক ও রসায়নে স্থায়ী শিক্ষকের পদ ফাঁকা। কাঁকসার মলানদিঘি হাইস্কুলে ইতিহাসের শিক্ষক নেই গত পাঁচ বছর ধরে। ২০১৩ সালে জামদহ হাইস্কুল উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হয়। নতুন শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। মাধ্যমিকের শিক্ষকেরা বাকি বিষয়গুলি পড়ালেও দর্শন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে সমস্যা মেটেনি। এমন পরিস্থিতি বহু স্কুলেরই।
ভুড়কুন্ডা এনসি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ আলি জানান, ২০১৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক চালু হয় স্কুলে। নতুন শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। পরিবেশ বিজ্ঞান, ইতিহাস, বাংলা, ইংরেজির পঠনপাঠন পুরনো শিক্ষকেরাই চালাচ্ছেন। কিন্তু দর্শন, ভূগোল ও সংস্কৃতের কোনও শিক্ষক নেই। তিনি বলেন, ‘‘ক্লাস চালাতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। ছাত্রদের সুবিধের কথা ভেবেই উচ্চ মাধ্যমিক চালু করা হয়েছে। অথচ, উপযুক্ত শিক্ষক না থাকায় পড়ুয়ারা আগের মতোই ২০ কিলোমিটার দূরের দুর্গাপুর শহরে যেতে বাধ্য হচ্ছে।’’ নতুনডাঙা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সন্তোষ চট্টরাজের বক্তব্য, ‘‘এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হচ্ছে পড়ুয়ারাই।’’ দুর্গাপুরের এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘শিক্ষক না থাকায় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার মান ভাল হচ্ছে না। এর প্রভাব পড়ছে পরীক্ষার ফলে। সার্বিক ভাবে ছাত্রছাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’’
জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর অবশ্য সমস্যা মেটার আশ্বাস দিয়েছে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষক-সমস্যায় ভোগা স্কুলগুলির তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলেই সমস্যা মিটে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy