চলছে অবস্থান। নিজস্ব চিত্র।
প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত বর্ধমানে। চার দিন ধরে সংসদ দফতরের সামনে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ চলছিলই। শুক্রবার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংসদের সভাপতি অচিন্ত্য চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠকের পরেও আশার আলো না পেয়ে আন্দোলনের মাত্রা যেন বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রার্থীরা। সেই রাত থেকে তাঁদের প্রায় দেড়শো জন রিলে অনশন শুরু করেছেন বলে আন্দোলনকারীদের দাবি।
কাউন্সেলিংয়ের পরে পার্শ্বশিক্ষকের নথি দেখাতে না পারার কারণ দেখিয়ে চাকরি দেওয়া হয়নি বেশ কিছু প্রার্থীকে। প্রতিবাদে তাঁরা বুধবার দুপুর থেকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। এক দল প্রার্থীর দাবি, সমস্ত নথি দিয়েছেন, পাশ করেছেন। এসএমএস এবং ই-মেলে কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হয়েছে। স্কুল বাছাইও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখন আবার নথি চাওয়া হচ্ছে। আর আর এক দলের দাবি, ফর্মে পার্শ্বশিক্ষক হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে টিক চিহ্ন দেননি। কিন্তু সংসদের তালিকায় রয়েছে তাঁরা পার্শ্বশিক্ষক। এখন নথি কোথা থেকে দেবেন, সে নিয়ে চিন্তায় তাঁরা।
আগের দিনের মতো শনিবারও জেলার সংসদ সভাপতি অচিন্ত্যবাবু বলেন, ‘‘২৭ ফেব্রুয়ারি ফের প্রার্থীদের সঙ্গে মুখোমুখি বসে নথি পরীক্ষা করা হবে। সেখানেই বোঝা যাবে কাদের ভুল হয়েছিল। আমাদের তরফে কোনও ভুল হয়ে থাকলে রাজ্যকে জানানো হবে।” জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের নির্দেশমতো ওই নথি পরীক্ষার সময়ে এক জন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। পুরো প্রক্রিয়া ভিডিও রেকর্ড করে হবে বলে সংসদের তরফে জানানো হয়েছে।
যদিও এই প্রক্রিয়া মানতে নারাজ চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের বক্তব্য, ফের নথি দেখার নামে ভোলানোর চেষ্টা চলছে। আদতে চাকরি দেওয়া হবে না। এক প্রার্থীর কথায়, “ইন্টারভিউয়ের আগে নথি যাচাই হয়েছে। তার পরে আমাদের এসএমএস করে ডাকা হয়েছে। কাউন্সেলিংও হয়ে গিয়েছে। তার পরে বলছে যাচাইয়ে গণ্ডগোল রয়েছে!”
শনিবার দফতরে তালা ছিল। তবু রিলে অনশন চালান প্রার্থীরা। দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক জন প্রার্থী বসে রয়েছেন। তাঁরা জানালেন, রিলে অনশন চলছে, অনেকে আশপাশে রয়েছেন। কয়েক জন বলেন, “ভালই বুঝতে পারছি, আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তাই সোমবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব ঠিক করেছি। আইনজীবীর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে।” সেক্ষেত্রে এ ভাবে জেলা প্রশাসনের দফতরে যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলনের দরকার কী? বর্ধমানের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রায়ের কথায়, “জেলা শিক্ষা সংসদের ভূমিকা মানুষের নজরে আনার জন্যই আমাদের এই আন্দোলন।” শুক্রবার রাতেই বর্ধমান সদরের (উত্তর) মহকুমাশাসক মুফতি শামিম শওকত রিলে অনশন বন্ধের জন্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাতে কাজ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy