সচেতনতার বার্তা। নিজস্ব চিত্র
দীপাবলি এলেই নানা বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও শব্দবাজির তাণ্ডব প্রায় প্রতি বছরই দেখা যায়। কিন্তু এ বার তা যাতে না হয়, সে বার্তা দিতে সচেতনতা প্রচারে মঙ্গলবার সকালে পথে নামল আসানসোলের একটি বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা। তাদের আরও আর্জি, শব্দবাজিতে টাকা খরচ নয়, বরং তা খরচ করা হোক পথশিশুদের জন্য। শুধু তাই নয়, ওই পড়ুয়ারা প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছে, তারা নিজেরা কোনও রকম বাজি পোড়াবে না।
মঙ্গলবার সকাল। স্থান, আসানসোল। আচমকা দেখা গেল সেনরেলে রোড লাগোয়া ওই স্কুলের পড়ুয়ারা হাতে পোস্টার, ব্যানার নিয়ে পথে পথে প্রচার শুরু করেছে। তাতে আর্জি, ‘শব্দ নয়/ সঙ্গীত বাঁধ..’। চড়া রোদ মাথায় করে পড়ুয়াদের সঙ্গী হলেন কয়েক জন শিক্ষকও।
পড়ুয়াদের এমন প্রচার দেখে দাঁড়িয়ে পড়লেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী পার্থ চট্টরাজ-সহ একাধিক পথচারী। পার্থবাবু বলেন, ‘‘কয়েক জন খুদে পড়়ুয়া মিলে সমাজের চোখ খুলে দিল।’’ তবে কাজটা এক দিনে হয়নি। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী দামিনী মুখোপাধ্যায়, ষষ্ঠ শ্রেণি অর্পণ ভৌমিকরা জানায়, গত এক মাস ধরে বিষয়টি নিয়ে তাদের পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রথমে স্কুলের বন্ধুরা প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত শপথ নিয়েছে, এ বার দীপাবলিতে তারা কোনও রকম বাজি পোড়াবে না। বাজির জন্য বরাদ্দ টাকা অভিভাবকদের কাছ থেকে নিয়ে উৎসবের মুখে পথশিশুদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী উপহার দেবে। এর পরেই পড়ুয়ারা ঠিক করে, তাদের এই বার্তা ছড়ানো দরকার শহরেও।
স্কুলের তরফে সুদৃপ্ত ঠাকুর বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা বাজির খরচ বন্ধ করে নিজেরাই প্রায় সাত হাজার টাকা তুলেছে। তা বস্তি এলাকার শিশুদের খাওয়ানোর জন্য আসানসোলের শিক্ষক চন্দ্রশেখর কুণ্ডুর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু পড়ুয়ারা যে সত্যিই বাজি না কিনে সেই টাকা জড়ো করেছে তা কী ভাবে নিশ্চিত হচ্ছেন তিনি। সুদৃপ্তবাবু জানান, পড়ুয়াদের অভিভাবকেরাও স্কুলে এসে জানিয়েছেন, কেউই এ বার সন্তানদের বাজি কিনে দিচ্ছেন না।
পড়ুয়াদের এমন উদ্যোগ নিয়ে আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘এমন চিন্তাশীল প্রজন্মই আসানসোলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy