Advertisement
১০ মে ২০২৪

জ্বরে কিশোরের মৃত্যু দুর্গাপুরে, সন্দেহ ডেঙ্গি

অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল দুর্গাপুরের এক কিশোরের। বৃহস্পতিবার দুপুরে শোভাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ঋষি দাশগুপ্তকে (১২)। গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়।

মৃত ঋষি দাশগুপ্ত।

মৃত ঋষি দাশগুপ্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৬ ০২:০৮
Share: Save:

অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল দুর্গাপুরের এক কিশোরের। বৃহস্পতিবার দুপুরে শোভাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ঋষি দাশগুপ্তকে (১২)। গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, সম্ভবত ডেঙ্গি হেমারেজিক জ্বরে আক্রান্ত হয়েই কিশোরটির মৃত্যু হয়েছে বলে।

ডিএসপি টাউনশিপের জয়দেব অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা ঋষি একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। সে সম্পর্কে দুর্গাপুরের মেয়র পারিষদ মনি দাশগুপ্তের ভাইপো। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ২১ নভেম্বর ঋষি জ্বরে আক্রান্ত হয়। ২৩ নভেম্বর শারীরিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। স্থানীয় এক ডাক্তার চিকিৎসা করছিলেন। ২৪ নভেম্বর সকাল থেকে শরীর ঠান্ডা হতে শুরু করায় ঋষিকে দুপুর ১টা নাগাদ ডিএসপি মেন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে সেখান থেকে তাকে রেফার করা হয় শোভাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গির চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। ঋষির কাকা আশিস দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘নাক ও মুখ দিয়ে প্রবল রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যু হয়।’’

বাড়ির অদূরে নোংরা নালা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঋষির মৃত্যু ডেঙ্গিতেই কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানোর পর্যাপ্ত সময় মেলেনি। সম্ভবত ডেঙ্গি হেমারেজিক জ্বরে আক্রান্ত হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে এই জ্বরের লক্ষণ ও উপসর্গ ডেঙ্গির মতোই। জ্বর আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রক্তের প্লাজমা ভাঙতে শুরু করে। পেটে ব্যাথা, বমি, এমনকী শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। রোগী অচেতন হয়ে পড়ে। চিকিৎসায় দেরি হলে দ্রুত তা ‘ডেঙ্গি শক সিনড্রোম’-এর দিকে এগোতে থাকে।

পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুব মর্মান্তিক ঘটনা। পুরসভার পক্ষ থেকে মশার উপদ্রব রোধে ধারাবাহিক ভাবে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তার পরেও এমন ঘটে গেল।’’ তাঁর দাবি, নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার, আগাছা সাফ করা হচ্ছে। ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো, মশা মারার ওষুধ দেওয়ার কাজ চলছে। বাসিন্দাদের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, শহর সাফ রাখতে ব্যর্থ পুরসভা। সেই কারণেই ইদানীং দুর্গাপুর শহরে অজানা জ্বরে আক্রান্তের ঘটনা ঘটে চলেছে পরপর। অনেকেরই প্রাথমিক রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। যদিও চূড়ান্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির প্রমাণ মেলেনি। এর আগে সেপ্টেম্বরে বিধাননগরের এক বেসরকারি হাসপাতালে মীনাক্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় (৩৯) নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিকিৎসকেরা ‘ডেঙ্গি শক সিনড্রোম উইথ মাল্টি অর্গান ফেলিওর’ উল্লেখ করেন। তবে তিনি দুর্গাপুরের বাসিন্দা ছিলেন না। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কাটোয়ার খাজুরডিহি থেকে নিয়ে এসে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল ওই হাসপাতালে।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE