Advertisement
১১ মে ২০২৪

প্রকাশ্যেই মারপিট তৃণমূলের দু’পক্ষের

ব্লকের প্রাক্তন ও নতুন সভাপতির অনুগামীদের মধ্যে প্রকাশ্যে গোলমাল বাধল দুর্গাপুরে। সোমবার সকালে সগড়ভাঙায় মারপিটে দু’পক্ষের মোট চার জন জখম হন।

গোলমালের পরে। নিজস্ব চিত্র।

গোলমালের পরে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৬ ০০:১৯
Share: Save:

ব্লকের প্রাক্তন ও নতুন সভাপতির অনুগামীদের মধ্যে প্রকাশ্যে গোলমাল বাধল দুর্গাপুরে। সোমবার সকালে সগড়ভাঙায় মারপিটে দু’পক্ষের মোট চার জন জখম হন। দলের অফিসের সামনে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় জানান, খোঁজ নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিধানসভা ভোটে দুর্গাপুরের দু’টি আসনেই ভরাডুবির পরে এই শিল্পাঞ্চলে দলের সব কমিটি ভেঙে দেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস। নতুন কমিটি গড়া হয় ১৮ অগস্ট। আগের সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়কে মাথায় রেখেই ১৬ সদস্যের কোর কমিটি গড়া হয়। সামনের বছর দুর্গাপুরে পুরভোট হওয়ার কথা। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটে হারের ধাক্কা সামলে পুরসভা দখলে রাখাই এখন তাদের পাখির চোখ। সে কারণে সংগঠন পোক্ত করতে তিনটি ব্লকের সভাপতিই বদল করা হয়েছে। তিন ব্লকে সভাপতি পদে নতুন মুখ এনেছে তৃণমূল।

দুর্গাপুর ৩ ব্লকে দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সভাপতি পদে ছিলেন প্রবীণ নেতা সুনীল চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে কোর কমিটিতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি ওয়ার্ডের সভাপতি পদেও রয়েছেন। তাঁর জায়গায় ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন ভীমসেন মণ্ডল। সোমবার সকালে সুনীলবাবু ও ভীমবাবুর অনুগামীরাই মারপিটে জড়িয়ে পড়েন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সগড়ভাঙায় ভীমসেনবাবুর অনুগামীরা দলের নতুন একটি অফিস তৈরি করেছেন। সেখানে রবিবার রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয়েছিল। ছিলেন ভীমসেনবাবু। তবে দলের অন্য কোনও নেতাকে সে ভাবে দেখা যায়নি। সোমবার সকালে সেই অফিসের সামনে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স পোড়া অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সে নিয়ে দলেরই দু’টি পক্ষের মধ্যে বিতণ্ডা শুরু হয়ে যায়। সুনীলবাবুর অনুগামী আশিস কেশকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এর পরেই। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। পুলিশের সামনেই দু’পক্ষ মারপিটে জড়িয়ে পড়ে। দু’পক্ষের দু’জন করে আহত হন। পরে পুলিশের বড় বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ভীমসেনবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত মনোজ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘সুনীলবাবুরা বারবার দলের কর্মসূচিতে অসহযোগিতা করছেন। ফ্লেক্স পোড়ানোর পিছনে তাঁদেরই হাত আছে।’’ সুনীলবাবু পাল্টা অভিযোগ করেন, তিনি ওয়ার্ডের সভাপতি। তাঁর স্ত্রী শেফালিদেবী বরো চেয়ারম্যান। অথচ, দলের কর্মসূচিতে তাঁদের ডাকা হয় না। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা দলের প্রবীণ কর্মী। দলনেত্রীর ফ্লেক্স পোড়ানোর মিথ্যে অভিযোগ এনে কোনও লাভ হবে না। প্রোমোটার ও দূষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। আমি ইতিমধ্যে বিষয়টি দলের উচ্চস্তরে জানিয়েছি।’’ তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলীয় স্তরে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দরকার হলে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE