Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রচারে রাস্তা নিয়ে বিক্ষোভের মুখে কল্যাণ

রোড-শো করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন শ্রীরামপুরের বিদায়ী সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জগৎবল্লভপুর বিধানসভা এলাকার ডোমজুড়ে রুদ্রপুর পঞ্চায়েতের জাবতাপোতা মোড়ে রাস্তায় বাঁশ ফেলে তাঁরা গাড়ি আটকানো হয়। প্রার্থী অবশ্য গাড়ি ছেড়ে নামেননি। নির্বাচন কমিশনের এমসিসি-দলের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমজুড় শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৪ ০২:২৬
Share: Save:

রোড-শো করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন শ্রীরামপুরের বিদায়ী সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জগৎবল্লভপুর বিধানসভা এলাকার ডোমজুড়ে রুদ্রপুর পঞ্চায়েতের জাবতাপোতা মোড়ে রাস্তায় বাঁশ ফেলে তাঁরা গাড়ি আটকানো হয়। প্রার্থী অবশ্য গাড়ি ছেড়ে নামেননি। নির্বাচন কমিশনের এমসিসি-দলের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।

পুলিশ ও তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন রুদ্রপুরে কল্যাণবাবুর রোড-শো ছিল। তিনি ছিলেন একটি হুডখোলা গাড়িতে। সঙ্গে গোটা চারেক মিনি ট্রাকে কর্মী-সমর্থকেরা। বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে বেলা ১১টা নাগাদ জাবতাপোতা মোড়ের কাছে পৌঁছে তাঁরা দেখেন, আড়াআড়ি বাঁশ ফেলে পথ আটকানো হয়েছে। সেখান থেকে রাজাপুর পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। ২০১০-এ কাজ শুরু হলেও শেষ হয়নি। তা নিয়েই বিক্ষোভ।

গ্রামবাসীরা জানতে চান, “রাস্তার কাজ শেষ হচ্ছে না কেন?” প্রার্থী দাবি করেন, বামফ্রন্ট কাজ শেষ না-হওয়ার জন্য দায়ী। তাতে আরও চটে গিয়ে গ্রামবাসী পাল্টা বলেন, “গত আড়াই বছর ধরে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায়। হাওড়া জেলা পরিষদও আপনাদের হাতে। আপনারা কেন কাজ শেষ করেননি?” প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকের দাবি, এ কথা শোনার পরেই উত্তেজিত হয়ে কল্যাণবাবু গ্রামবাসীদের উদ্দেশে কটূক্তি করতে থাকেন। তাঁদের তিনি ‘সিপিএমের দালাল’-ও বলেন।

এর পরেই গোলমাল বেধে যায়। ঝগড়া শুনে গ্রাম থেকে দলে-দলে মহিলারা এসে হাজির হন। প্রার্থীর গাড়িতে চড়-চাপড় মারতে থাকেন তাঁরা। মিনি ট্রাকে থাকা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কিছু গ্রামবাসীর ধস্তাধস্তিও শুরু হয়। পুলিশ কোনও মতে গাড়ি ঘুরিয়ে প্রার্থীকে বের করে নিয়ে যায়। তাঁর সঙ্গীসাথিরা মিনি ট্রাক ফেলে চলে আসেন। ভণ্ডুল হয়ে যায় রোড-শো। গ্রামবাসীরা ট্রাক আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পরে ডোমজুড় থানা থেকে বাহিনী গিয়ে তাঁদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে দুপুর ১টা নাগাদ ট্রাকগুলি উদ্ধার করে। থানায় অভিযোগও দায়ের করেন কল্যাণবাবু।

তৃণমূলের অভিযোগ, ঘটনার পিছনে সিপিএমের ইন্ধন রয়েছে। কল্যাণবাবুর দাবি, “কিছু গ্রামবাসী রাস্তা নিয়ে আমার কাছে অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। আমি জানাই, টাকা বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। ভোটের পরেই কাজ শুরু হবে। তাতে তাঁরা চলে যান।” তাঁর অভিযোগ, “পরে সিপিএম চক্রান্ত করে ফের লোক জুটিয়ে বিক্ষোভ সংগঠিত করে। বাঁশ ফেলে রাস্তা আটকায়। গাড়িতে চড়-চাপড় মারে। নিরাপত্তারক্ষীদের উপরে চড়াও হয়। পুরো ঘটনাটা জেলাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়েছি।”

স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আবুল কাশেম মোল্লাও দাবি করেন, “রাস্তার কাজ শেষ করার জন্য জেলা পরিষদ টাকা দিয়েছে। কল্যাণবাবু বারবার গ্রামবাসীদের তা বুঝিয়ে বলা সত্ত্বেও তাঁরা অসদাচরণ করলেন। এর পিছনে সিপিএমের চক্রান্ত রয়েছে।”

বামফ্রন্ট পরিচালিত পূর্বতন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ, সিপিএমের আনন্দ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, “২০১০-এ আমরা রাস্তার কাজ শুরু করেছিলাম। পরের বছর তৃণমূল সরকার এসেই জেলা পরিষদের ক্ষমতা কেড়ে নেয়। অথচ আড়াই বছরে তারা নিজেরাও রাস্তাটি করতে পারল না। তাই গ্রামবাসীরা খেপেই ছিলেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE