Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সিপিএমের পার্টি অফিস খোলার পরেই আরামবাগে আক্রান্ত কর্মীরা

প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর প্রশাসনের উপস্থিতিতে সোমবার সকালে আরামবাগ সিপিএমের ৩ নম্বর লোকাল কমিটির ডোঙ্গলমোড়ের কার্যালয়টি খোলা হয়। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই এলাকার কয়েকটি গ্রামে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কাপসিট গ্রামের মোড়ে তৃণমূলকে পাল্টা মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। কাপসিটের ঘটনায় দু’পক্ষের ৪ জনকে (১ জন তৃণমূল এবং ৩ জন সিপিএম) আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০২
Share: Save:

প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর প্রশাসনের উপস্থিতিতে সোমবার সকালে আরামবাগ সিপিএমের ৩ নম্বর লোকাল কমিটির ডোঙ্গলমোড়ের কার্যালয়টি খোলা হয়। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই এলাকার কয়েকটি গ্রামে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কাপসিট গ্রামের মোড়ে তৃণমূলকে পাল্টা মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। কাপসিটের ঘটনায় দু’পক্ষের ৪ জনকে (১ জন তৃণমূল এবং ৩ জন সিপিএম) আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরও জনা ছয়েকের চিকিৎসা হয়েছে স্থানীয় ভাবে। দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিপিএমের ডোঙ্গলমোড়ের লোকাল কমিটির কার্যালয়টি ২০১১ সালের মে মাসে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর দিন থেকেই বন্ধ। ওই লোকাল কমিটির সম্পাদক শ্যাম চক্রবর্তীর অভিযোগ, তৃণমূলের হুমকি এবং সন্ত্রাসের জেরেই দলীয় কার্যালয়ে তালা মেরে এলাকা ছাড়তে হয় নেতা-কর্মীদের। দিন দশেক আগে কার্যালয়টি খুলতে চেয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে আর্জি জানায় সিপিএম। তারই ভিত্তিতেই এ দিন পুলিশি নিরাপত্তায় এবং প্রশাসনের উপস্থিতিতে কার্যালয়টি খোলা হয়। সিপিএমের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা কয়েদতলা থেকে ডোঙ্গলমোড় পর্যন্ত মিছিলও করেন। সেই মিছিলে যোগদানকারীদেরই কয়েক জনকে গ্রামে ফিরে অথবা ফেরার পথে রাস্তায় তৃণমূলের হামলার মুখে পড়তে হল বলে সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ। অভিযোগ মানেননি তৃণমূল নেতৃত্ব।

কাপসিটে মারপিটের ঘটনাটি ঘটে সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ। সিপিএমের দলীয় কার্যালয়টি খোলা এবং ছোট নির্বাচনী সভার শেষে সাইকেলে বাড়ি ফিরছেলেন স্থানীয় ডিহিবাগনান গ্রামের জনা ১৫ সিপিএম কর্মী। তখনই হামলা চলে বলে অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিশির সরকারের অভিযোগ, “আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী রতনপুর গ্রামের আলু ব্যবসায়ী সঞ্জয় মণ্ডল-সহ তিন জন কাপসিট মোড়ের একটি দোকানে বসেছিলেন। সিপিএমের জনা কুড়ি লোক বিনা প্ররোচনায় তাঁদের মারধর করে।” ওই তৃণমূল নেতার অভিযোগ, সিপিএমের শ্যাম চক্রবর্তী এবং বিনয় দত্তের নেতৃত্বে ঘটনাটি ঘটেছে। অন্য দিকে, শ্যামবাবুর অভিযোগ, মিছিল এবং সভা সেরে দলীয় কর্মীরা বাড়ি ফেরার পথে কাপসিট মোড়ে তৃণমূলের ছেলেরা সিপিএমের ডিহিবাগনান শাখা সম্পাদক সনাতন সাঁতরা-সহ কয়েক জন কর্মীর উপরে লাঠিসোঁটা, বোল্ডার নিয়ে চড়াও হয়। সাইকেল এবং টাকা পয়সা ছিনতাই করে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয় সিপিএমের লোকজনকে। পাল্টা হামলা বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, “তৃণমূলের যিনি মাথায় আঘাত পেয়ে আহত হয়েছেন, তিনি তাঁর দলেরই কর্মীদের ছোঁড়া বোল্ডারে চোট পেয়েছেন।” ডোঙ্গলমোড়ে মিছিলে পা মেলানোয় সিপিএম কিছু কর্মী-সমর্থককে বেড়াবেড়ে, বেউর, বসন্তবাটি এবং সুভয়পুরেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শ্যামবাবু। সে কথা অবশ্য মানতে চায়নি তৃণমূল।

এ দিকে, রাতের দিকে সিপিএমের ওই পার্টি অফিসেই আগুন লেগে কিছু কাগজপত্র নষ্ট হয়েছে। দমকলের গাড়ি আসে। সিপিএমের দাবি, তৃণমূলই এই ঘটনায় জড়িত। তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য পাল্টা দাবি, সিপিএম কর্মীরা নিজেরাই এই কাণ্ড ঘটিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arambagh cpm tmc clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE