Advertisement
০৭ মে ২০২৪

হুগলি গিয়ে খুশি রাকেশ, রাতে দ্বারস্থ বাম-কংগ্রেস

দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে ভয় এবং প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ নিয়ে রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশের সঙ্গে দেখা করলেন বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং বিজেপি-র প্রতিনিধিরা। সোমবার রাতে ওই সাক্ষাতের আগে হুগলিতে গিয়ে অবশ্য প্রশাসনের কাজে মোটামুটি সন্তুষ্টিই প্রকাশ করেন সুধীরকুমার। তবে দুপুরে চন্দননগরে মাইক্রো-অবজার্ভারদের সঙ্গে বৈঠকে তাঁর সতর্কবার্তা, তাঁরা যেন রাজনৈতিক নেতা, মাস্লম্যান বা বহিরাগতদের প্ররোচনায় পা না দেন।

নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশের সঙ্গে হুগলির জেলাশাসক মনমীত নন্দা। সোমবার চুঁচুড়ায়। ছবি: তাপস ঘোষ।

নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশের সঙ্গে হুগলির জেলাশাসক মনমীত নন্দা। সোমবার চুঁচুড়ায়। ছবি: তাপস ঘোষ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪০
Share: Save:

দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে ভয় এবং প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ নিয়ে রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশের সঙ্গে দেখা করলেন বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং বিজেপি-র প্রতিনিধিরা।

সোমবার রাতে ওই সাক্ষাতের আগে হুগলিতে গিয়ে অবশ্য প্রশাসনের কাজে মোটামুটি সন্তুষ্টিই প্রকাশ করেন সুধীরকুমার। তবে দুপুরে চন্দননগরে মাইক্রো-অবজার্ভারদের সঙ্গে বৈঠকে তাঁর সতর্কবার্তা, তাঁরা যেন রাজনৈতিক নেতা, মাস্লম্যান বা বহিরাগতদের প্ররোচনায় পা না দেন। পরে চুঁচুড়ায় জেলাশাসক মনমীত নন্দা, পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী-সহ প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তাঁর নির্দেশ, তাঁরা যেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন। বৈঠক সেরে বেরিয়ে তাঁর আশ্বাস, “নির্বাচন যাতে অবাধ ও স্বচ্ছ হয়, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

রাতে সিপিএমের তরফে রবীন দেব, সুখেন্দু পানিগ্রাহীরা অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথায় প্ররোচিত হয়েই তৃণমূলের নিচু তলার কর্মী-সমর্থকেরা মারমুখী হয়ে উঠেছেন। বীরভূমে সিপিএম কর্মী হীরালাল শেখকে খুন করা হয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে কেশপুরের বিধায়ক রামেশ্বর দলুই আক্রান্ত হয়েছেন। চন্দ্রকোনায় ঘরছাড়াদের মারধর করা হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের কিছু জায়গায় টাকা ও মদ বিলি করা হচ্ছে। দক্ষিণ দিনাজপুুরে কিছু বুথে ভয় দেখানো হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে দুষ্কৃতী বাহিনী এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করছে। সব ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠিক ভাবে ব্যবহার করার দাবিও জানিয়েছে বামেরা। পরে সুখেন্দুবাবু বলেন, “রাকেশ বলেছেন, ভোট দিতে গিয়ে কেউ বাধা পেলে তৎক্ষণাৎ ওঁকে জানাতে।”

কংগ্রেসের বক্তব্য, কেশপুরে সিপিএম বিধায়কের উপরে যে হামলা হয়েছে বা বীরভূমে যে ভাবে তৃণমূল নেতারা হুমকি দিচ্ছেন, সেই পরিবেশ বজায় থাকলে মৃত্যু-মিছিলের আশঙ্কা রয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূল নেতারা প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশ করে ভোট লুঠের ছক করছেন বলেও অভিযোগ করেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, “প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের গোপন বৈঠকের খবর মিলেছে। শীতলখুচিতে যেমন হয়েছিল। এ ব্যাপারে রাকেশের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। দলের হয়ে জয়প্রকাশ মজুমদার অভিযোগও জমা দিয়েছেন। রাকেশ বলেছেন, পরের পর্যায়ে ত্রুটি শুধরে নেওয়া হবে।”

হুগলিতে ওঠা নানা অভিযোগে অবশ্য রাকেশ এ দিন তেমন গুরুত্ব দেননি। তাঁর কথায়, “বিরোধীদের তরফে যে সব অভিযোগ এসেছে, জেলা প্রশাসন সেই সব জায়গা ঘুরে কোনও সারবত্তা পায়নি। ধনেখালি, জাঙ্গিপাড়া, আরামবাগ, গোঘাট থেকে অভিযোগ এলেও নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হয়নি। বুথভিত্তিক যে সব গোলমালের কথা জানা গিয়েছিল, জেলা প্রশাসন সমস্ত ক্ষেত্রে আমাদের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়েছে। সব মিটিং-মিছিলের উপরে কমিশন নজর রাখছে। ভিডিও রেকর্ডিং করা হচ্ছে।”

বিরোধীদের অভিযোগ ধোপে না টেকায় স্বভাবতই উল্লসিত হুগলির তৃণমূল শিবির। শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “এত দিন আমরা যা বলে আসছিলাম, নির্বাচন কমিশনের কর্তা সেই সত্যকেই মান্যতা দিলেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী পাল্টা বলেন, “পুলিশ-প্রশাসন অভিযোগ নিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু তারা যে মাত্রায় উদ্যোগী হলে রাজনৈতিক কর্মীরা মনোবল ফিরে পাবেন, তা নেই। নির্বাচন কমিশন এ দিক থেকে ব্যর্থই বলতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE