ভোগান্তি: দীর্ঘ অপেক্ষা উপভোক্তাদের।
জ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলছেন সরকারি অফিসে কর্মসংস্কৃতি বজায় রাখার কথা। কিন্তু খোদ শাসকদল পরিচালিত পঞ্চায়েতেই আধিকারিক ও কর্মীর অভাবে পরিষেবা লাটে উঠেছে। অবস্থা এমনই যে, পঞ্চায়েত অফিসে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে!
শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েত অফিস-সহ নানা জায়গায় পোস্টার লাগিয়ে বলে দেওয়া হয়েছে, কর্মী নেই। তাই পঞ্চায়েত অফিস থেকে কোনও পরিষেবা মিলবে না। প্রয়োজনে ব্লক অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। ঘটনাটি তারকেশ্বরের পূর্ব রামনগর পঞ্চায়েত এলাকায়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি পঞ্চায়েতে সাধারণত চার ধরনের আধিকারিক-কর্মী থাকেন। সকলের উপরে থাকেন নির্বাহী সহায়ক। তার নীচের পদটি হল পঞ্চায়েত সচিবের। এই দু’টি পদই আধিকারিক মর্যাদার। সচিবের নীচে আছেন সহায়ক। এছাড়া আছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। ওই পঞ্চায়েতের নির্বাহী সহকারী আগেই অবসর নিয়েছেন। পঞ্চায়েতের সচিব চলতি বছরের জুলাই মাসে অন্যত্র বদলি হয়ে গিয়েছেন। সহায়ক পদটি তিন বছর ধরে খালি। পঞ্চায়েতে এখন কর্মী বলতে রয়েছেন দু’জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। তাঁদের পক্ষে কোনও সরকারি পরিষেবা দেওয়াই সম্ভব নয়। ফলে পঞ্চায়েতের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র, একশো দিনের কাজ, নতুন বাড়ির অনুমোদন, ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া, সমব্যাথী-সহ বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার মানুষ।
পূর্ব রামনগর পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন। ওই পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি পরিষেবা পাওয়ার জন্য তাঁদের প্রাথমিক ভরসা পঞ্চায়েত। ২০১৩ সালের নির্বাচনে ওই পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনেই জিতেছিল তৃণমূল। স্থানীয় ট্যাংরা এলাকার বাসিন্দা সনাতন ভূমি জানান, কয়েক দিন আগে তাঁর মা মারা গিয়েছেন। তাই সমব্যথী প্রকল্পের টাকার জন্য অনেকবার পঞ্চায়েতে এসেছেন এবং ফিরে গিয়েছেন। রামনগরের হারাধন ভট্টাচার্য নতুন বাড়ি তৈরি করবেন। তার জন্য পঞ্চায়েতের অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু পঞ্চায়েতে তো কেউ নেই। একই সমস্যায় পড়েছেন শ্যামপুরের নবকুমার দাস-সহ অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দার ক্ষোভ, সরকারি প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও এলাকার গরিব মানুষ সেই সুবিধা পাচ্ছেন না।
ব্যাহত পরিষেবা
• জন্ম-মৃত্যু-সহ যাবতীয় শংসাপত্র প্রদান।
• একশো দিনের কাজের হিসেব রাখা।
• অসংগঠিত শ্রমিকদের পেনশন সংক্রান্ত কাজ।
• সমব্যাথী প্রকল্পের টাকা বিলি।
• ব্যাঙ্কের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা।
• নতুন বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া।
• রোজকার কাজের হিসেব রাখা।
পঞ্চায়েতের প্রধান বাপি রায়ের আক্ষেপ, ‘‘কমবেশি চার মাস ধরে অচলাবস্থা চলছে। এলাকার মানুষ কোনও পরিষেবা পাচ্ছেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ব্লক ও জেলা প্রশাসন শুধু বলছে, শূন্যপদে শীঘ্রই নিয়োগ হবে। কিন্তু সেটা কবে কেউ বলতে পারছেন না! বিষয়টি নিয়ে টানাবাহালার জন্য বাপিবাবু আঙুল তুলেছেন তারকেশ্বর বিডিও অফিসের কর্তাদের দিকে।
তারকেশ্বরের বিডিও জয়গোপাল পাল বলেন, ‘‘সরকারি কর্মীদের বদলি থেকে অবসর সবই নিয়ম মেনে হয়। পূর্ব রামনগর পঞ্চায়েতের সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সমস্যা মিটে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy