খুনের মামলায় সরকারি আইনজীবীর (পাবলিক প্রসিকিউটর ইন-চার্জ) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল হাইকোর্ট। শ্রীরামপুর আদালতে একটি মামলায় সরকারি আইনজীবীর ভূমিকায় বিস্ময় প্রকাশ করে ভর্ৎসনা করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ।
২০১৫ সালের ১৬ মে হুগলির রিষড়ায় একটি খুনের ঘটনা ঘটেছিল। খুন, একাধিক লোক মিলে দুষ্কর্ম, অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়। নব্বই দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। ধৃতদের জেলে রেখে শুনানি (কাস্টডি ট্রায়াল) শুরু হয় শ্রীরামপুর আদালতে। সম্প্রতি এক অভিযুক্ত হাইকোর্টে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে জামিনের আবেদন করে। মামলার নথি খতিয়ে দেখে আদালতের পর্যবেক্ষণ, সরকারি আইনজীবী ঠিক ভাবে শুনানি করাতে পারেননি। পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দেওয়া সত্ত্বেও প্রত্যক্ষদর্শী আদালতে বিরূপ হয়েছেন। অথচ সরকারি আইনজীবী তাঁদের পাল্টা জেরার অনুমতি চাননি।
‘কেস ডায়েরি এবং অভিযুক্তকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সরকারি আইনজীবীর ভূমিকা দেখে’ জামিন নাকচ করে আদালত। সরকারি আইনজীবীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালত বিষয়টি পাবলিক প্রসিকিউশন ডিরেক্টরের কাছে পাঠায়। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছেও প্রতিলিপি পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, মামলার শুনানিতে তদন্তকারী অফিসারের সাক্ষী হয় শেষে। অথচ এ ক্ষেত্রে মাঝপথেই তা করা হয়েছে। শেষে পুলিশের তরফে স্পেশ্যাল সরকারি আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।
আর এমন ঘটনার জেরে শ্রীরামপুর আদালতে আইনজীবীদের মধ্যে শোরগোল পড়েছে। সেখানকার সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী দীপ্তব্রত বটব্যালের অভিযোগ, ‘‘যা ঘটল তা নজিরবিহীন। এতে সরকারের বদনাম হল।’’ জয়দীপ জানান, গোটা বিষয়টি জানিয়ে আইনমন্ত্রী, পাবলিক প্রসিকিউশন ডিরেক্টর এবং শ্রীরামপুরের আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট মামলাটির সরকারি আইনজীবী জয়দেব সিংহরায় জানান, বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট আইনি দফতরে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিয়ে এসেছেন। ওই আদালতে সরকারি আইনজীবীদের ইন-চার্জ মোহনলাল নাড়ু বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার সব সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy