Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
গাড়ি আটকে টাকা আদায়ের অত্যাচার

টোল-প্লাজায় বৃহন্নলা আতঙ্ক

‘টোল’ দেওয়ার জন্য গাড়ি দাঁড় করালেই জানলায় টোকা পড়ছে। গাড়ি-চালকদের অভিযোগ, এক এক জন বৃহন্নলা ২০ থেকে ১০০ বা তারও বেশি টাকা দাবি করেন।

সুব্রত জানা
সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

মুম্বই রোড তথা ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধূলাগড়ি টোল-প্লাজা এখন গাড়ি-চালকদের কাছে আতঙ্ক! কারণ, বৃহন্নলাদের ‘উৎপাত’।

‘টোল’ দেওয়ার জন্য গাড়ি দাঁড় করালেই জানলায় টোকা পড়ছে। গাড়ি-চালকদের অভিযোগ, এক এক জন বৃহন্নলা ২০ থেকে ১০০ বা তারও বেশি টাকা দাবি করেন । না-দিলেই গালিগালাজ, কটূক্তি। গাড়ির সামনে তাঁরা দাঁড়িয়ে পড়েন। গাড়িতে মহিলা আরোহী থাকলেও রেয়াত করা হচ্ছে না। আর এই ‘উৎপাত’ বন্ধে টোল-প্লাজা কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ উদাসীন বলেও অভিযোগ।

দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্যই হাওড়ার সাঁকরাইলের ওই টোল-প্লাজায় ‘টোল’ দিয়ে রাস্তাটি ব্যবহার করেন গাড়ি-চালকেরা। কিন্তু কয়েক মাস ধরে দিনে-রাতে যে ভাবে ‘উৎপাত’ বাড়ছে, তাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে গিয়েও দেখা গিয়েছে, বৃহন্নলাদের সঙ্গে দর কষাকষিতে ব্যস্ত গাড়ি-চালকেরা। আর তার জেরে যানজট। বিয়েবাড়ির গাড়ি দেখলে বৃহন্নলাদের টাকার অঙ্ক অনেকটাই বেড়ে যায় বলেও অভিযোগ।

লরি-চালক অনিল প্রসাদ চৌরাশিয়াকে প্রায়ই ওই টোল-প্লাজা ব্যবহার করতে হয়। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘ধূলাগড় টোল-প্লাজা এড়াতে পারি না। কিন্তু ওখানে দাবি মতো টাকা না-দিলেই বৃহন্নলারা গাড়ির সামনে পথ আটকে দাঁড়িয়ে পড়েন। পুলিশ দেখেও দেখে না।’’ আর এক ভাড়া গাড়ির চালক শেখ জাকির হোসেন বলেন, ‘‘টোল-প্লাজায় পুলিশ থাকে। কিন্তু বারবার বলেও কাজ হয় না। সারাদিনের রোজগার থেকে আমাদের ওই টাকা চলে যা। গাড়ির মালিক সেই টাকা আমাদের দেন না। এতে তো আমাদের ক্ষতি। কেন ওঁদের টাকা দিতে হবে?’’

সমস্যা নিয়ে টোল-প্লাজা কর্তৃপক্ষ পুলিশের কোর্টেই বল ঠেলেছেন। টোল-প্লাজার ম্যানেজার রবি মিশ্রের দাবি, ‘‘রাস্তায় কী হচ্ছে, সেটা দেখার কথা পুলিশের। আমাদের নয়। পুলিশ ঠিকঠাক নজর রাখছে না বলেই বৃহন্নলাদের উৎপাত বাড়ছে।’’ পক্ষান্তরে, হাওড়া (গ্রামীণ) জেলার পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘টোল-প্লাজার পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’

উৎপাতের অভিযোগ মানেননি বৃহন্নলারা। তাঁদের পক্ষে ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য তৃতীয় লিঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ’-এর সদস্য অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের পাশে কেউ নেই। আমরা কী ভাবে জীবিকা নির্বাহ করব? বাধ্য হয়েই সাধারণ মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে হয়।’’

কিন্তু ভুক্তভোগীরা বলছেন, সাহায্য চাওয়াটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দাবির পর্যায়ে পৌঁছে যায়। আর তার জেরে হেনস্থার মুখেও পড়তে হয়। অবিলম্বে এই সমস্যা নিরসনের দাবি তুলেছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sankrail Third gender
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE