Advertisement
১১ মে ২০২৪
মিথ্যা মামলার অভিযোগ

কেশপুর নিয়ে আন্দোলনের পথে সিপিএম

মূল্যবৃদ্ধি, একশো দিনের কাজ, চিটফান্ড তো আছেই। এ বার মিথ্যা মামলার মতো বিষয়কে সামনে রেখে পশ্চিম মেদিনীপুরে আন্দোলনে নামতে চলেছে সিপিএম। কেশপুরের জগন্নাথপুরে জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যা কাকলি বরদোলুইকে খুনে নাম জড়িয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ-সহ ২৬ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর। প্রতিবাদে সরব হয়েছে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “এটা মিথ্যা মামলা। পুরো অভিযোগটাই সাজানো।” তাঁর দাবি, “কেশপুরের ঘটনাটি ওদের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জের। গোষ্ঠী কোন্দল ধামাচাপা দিতে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০৮
Share: Save:

মূল্যবৃদ্ধি, একশো দিনের কাজ, চিটফান্ড তো আছেই। এ বার মিথ্যা মামলার মতো বিষয়কে সামনে রেখে পশ্চিম মেদিনীপুরে আন্দোলনে নামতে চলেছে সিপিএম।

কেশপুরের জগন্নাথপুরে জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যা কাকলি বরদোলুইকে খুনে নাম জড়িয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ-সহ ২৬ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর। প্রতিবাদে সরব হয়েছে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “এটা মিথ্যা মামলা। পুরো অভিযোগটাই সাজানো।” তাঁর দাবি, “কেশপুরের ঘটনাটি ওদের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জের। গোষ্ঠী কোন্দল ধামাচাপা দিতে মিথ্যা অভিযোগ করছে।” দলীয় সূত্রে খবর, প্রতিবাদে আজ শুক্রবার দলের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে দীপকবাবু আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন।

বস্তুত, এই প্রথম নয়। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই দলের নেতা-কর্মীদের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা হয়েছে বলে দাবি সিপিএমের। কেমন? সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, কয়েক’টি ‘সাজানো’ কঙ্কাল মামলাতেই কয়েক’শো নেতা-কর্মীর নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়। দাসেরবাঁধের ঘটনায় ৪০ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। সিআইডি আবার তদন্তে নেমে ৫৮ জনের নামে চার্জশিট পেশ করে। পাঁওশার ঘটনায় ২৩ জনের নামে অভিযোগ হয়। মোহনপুরের ঘটনায় ২৬ জনের নামে! ঝর্ণাডাঙ্গার ঘটনায় ৩৯ জনের নামে অভিযোগ হয়। জেলায় সিপিএমের সংগঠন এখন বেশ নড়বড়ে। এই পরিস্থিতিতে মিথ্যা মামলার মতো বিষয়কে সামনে রেখে হারানো রাজনৈতিক জমি পুনরুদ্ধার করতে চাইছে সিপিএম।

দলের এক নেতার কথায়, “আমরা মনে করি, এই পরিস্থিতিতে গণসংগ্রামই একমাত্র পথ। আক্রমণের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। দীর্ঘ সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতও থাকতে হবে।” তাঁর কথায়, “গণসংগ্রাম গড়ে তুলতে পারলেই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কারণ, অত্যাচারীরা শেষ কথা বলবে না। মানুষই শেষ কথা বলবে।” বস্তুত, পশ্চিম মেদিনীপুর এক সময় সিপিএমের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পরপরই ছবিটা বদলায়। জেলায়ও সংগঠনে ধস নামে। একই হাল হয় গণ-সংগঠনগুলোয়ও।

এক সময়ের ‘লালদুর্গ’ বলে পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুরে লোকসভার ফল সিপিএম নেতৃত্বের কাছেও উদ্বেগজনক। জনসমর্থনে যে এতটা ভাটা পড়তে পারে, তার আগাম ইঙ্গিত ছিল না তাঁদের কাছে। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে জেলায় বামেদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৪ শতাংশ। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েতে তা কমে হয় ৩৪ শতাংশ। আর লোকসভায় তা আরও কমে হয়েছে ২৯ শতাংশ। যেখানে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ৫১ শতাংশ।

নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, যে বুথে অবাধ ভোট হয়েছে, সেখানে বামেরা ৩৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে যে রাতারাতি বেরোনো সম্ভব নয়, তা মানেন সিপিএমের একাংশ জেলা নেতাও। এক নেতার কথায়, “এই পরিস্থিতিতে কর্মীদের আত্মানুশীলন করে এগিয়ে যাওয়ার পথ বের করতে হবে।” সিপিএমের আন্দোলন কর্মসূচিকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। মিথ্যা মামলার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছে তারা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “মানুষ আর সিপিএমকে চাইছে না!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

keshpur murder tmc cpm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE