নিজের বৌদিকে ধর্ষণের মামলায় এক সিপিএম নেতাকে বেকসুর খালাস দিল ঝাড়গ্রাম আদালত। বাদল রাণা নামে ওই নেতা সিপিএমের সাঁকরাইল জোনাল কমিটির সম্পাদক। বুধবার ঝাড়গ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথি চক্রবর্তী বাদলবাবুকে বেকসুর খালাস দেন। এই মামলায় বছর খানেক আগেই অবশ্য শর্তাধীন জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন বাদলবাবু। আদালত সূত্রের খবর, অভিযোগকারী মহিলা ও তাঁর স্বামী আদালতে ‘বিরূপ সাক্ষ্য’ দেওয়ায় বাদলবাবুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয় নি।
গত বছর ১৭ জুন বাদলবাবুর বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম আদালতে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরই বড় বৌদি। ওই মহিলার অভিযোগ ছিল, গত বছর ১১ জুন বাদলবাবু তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন। এরপর আদালতের নির্দেশে গত ২১ জুন বাদলবাবুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের ধারায় মামলা রুজু করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। অভিযোগকারী মহিলার স্বামী হলেন বাদলবাবুর নিজের সহোদর দাদা। বাদলবাবুর ওই দাদা তৃণমূলের স্থানীয় নেতা। গত বছর ২ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হন বাদলবাবু। তিনি জেল হাজতে থাকাকালীন গত বছর ১ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। মামলাটি বিচারের জন্য ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে ওঠে। কিন্তু বিচার শুরু হওয়ার আগে গত বছর ২৫ নভেম্বর বাদলবাবুর মা যমুনা রানার মৃত্যু হয়। মানবিক কারণে বাদলবাবুর জামিন মঞ্জুর করে আদালত। ২৬ নভেম্বর জামিনে ছাড়া পেয়ে সাঁকরাইলের কুলটিকরি গ্রামের বাড়িতে ফিরে মায়ের শেষকৃত্যে যোগ দেন বাদলবাবু। এরপর মামলার বিচার শুরু হয়। ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। কিন্তু অভিযোগকারী মহিলা ও তাঁর স্বামী আদালতে ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে বিরূপ সাক্ষ্য দেন। চাপে পড়ে এমন অভিযোগ করেছেন বলেও আদালতকে জানান ওই মহিলা। বুধবার ছিল রায়দানের দিন। এ দিন বিচারক বাদলবাবুকে বেকসুর খালাস দেন।
রায় শোনার পরে আদালত থেকে বেরিয়ে বাদলবাবু বলেন, “আমি রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা আরও বাড়ল।” অভিযুক্তের আইনজীবী সুমন দাস মহাপাত্র বলেন, “অভিযোগকারী মহিলা ও তাঁর স্বামী আদালতে সাক্ষ্যদানের সময় ধর্ষণের অভিযোগটি অস্বীকার করেন। ফলে, এটি যে সাজানো অভিযোগ তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।” সরকারি কৌঁসুলি প্রবীর পাল বলেন, “অভিযোগকারী মহিলা ও তাঁর স্বামী মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায় অভিযোগ প্রমাণ করা যায় নি। রায়ের কপি পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy