Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নিচুতলার দাবি মেনেই আজ ঝাড়গ্রামে সূর্যকান্ত

নিচুতলার কর্মীদের দাবি সত্ত্বেও জঙ্গলমহলের পঞ্চয়েত ও পুরভোটের প্রচারে তাঁকে দেখা যায়নি। বিগত দু’টি নির্বাচনেই জঙ্গলমহলে ধুয়ে মুছে যায় বামেরা। এ বার অবশ্য আগাম পরিস্থিতি আঁচ করে লোকসভা ভোটে আঁধারদশা কাটাতে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের উপরই ভরসা রাখছে সিপিএম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৫৭
Share: Save:

নিচুতলার কর্মীদের দাবি সত্ত্বেও জঙ্গলমহলের পঞ্চয়েত ও পুরভোটের প্রচারে তাঁকে দেখা যায়নি। বিগত দু’টি নির্বাচনেই জঙ্গলমহলে ধুয়ে মুছে যায় বামেরা। এ বার অবশ্য আগাম পরিস্থিতি আঁচ করে লোকসভা ভোটে আঁধারদশা কাটাতে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের উপরই ভরসা রাখছে সিপিএম।

পঞ্চায়েত ও পুরভোটের ‘শিক্ষা’ নিয়ে এ বার দলের অন্দরে লোকসভা ভোটের প্রচারে সূর্যবাবুকে নিয়ে আসার জন্য জোরালো দাবি তুলেছিলেন সিপিএমের নিচুতলার কর্মীরা। দলীয় সূত্রের খবর, সেই দাবি মেনেই সূর্যবাবুকে জঙ্গলমহলে প্রচারে নামাচ্ছে আলিমুদ্দিন। আজ, শুক্রবার বিকেল তিনটেয় ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী পুলিনবিহারী বাস্কের সমর্থনে ঝাড়গ্রাম শহরের রবীন্দ্র পার্কের সামনে প্রকাশ্য সভা করবেন সূর্যবাবু। এরপর সাড়ে পাঁচটায় বেলদায় মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই প্রার্থী প্রবোধ পাণ্ডার সমর্থনে দ্বিতীয় সভাটি করবেন তিনি।

কেন সূর্যবাবুকে প্রচারে আনা হচ্ছে? সিপিএমের স্থানীয়-নেতা কর্মীরা বলছেন, এই মুহূর্তে দলের পলিটব্যুরো সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র’র ভাবমূর্তি জনমানসে যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। তিনি সুবক্তা এবং জেলারই বিধায়ক। সূর্যবাবু দীর্ঘ দিন অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন। তাই তিনি এ বার ভোট-প্রচারে এলে আখেরে লাভ হবে বলেই মত সিপিএমের একটি মহলের।

সিপিএমের গোষ্ঠী রাজনীতির কারণে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সূর্যবাবুর রাজনৈতিক কর্মসূচি বিশেষ দেখা যায় না। দলের একটি মহলের বক্তব্য, সেই কারণেই পঞ্চায়েত ও পুরভোটের প্রচারে সূর্যবাবুকে দেখা যায়নি। গত পঞ্চায়েত ও পুর নির্বাচনে জঙ্গলমহলে বামেদের কার্যত বিপর্যয় ঘটে। ঝাড়গ্রাম মহকুমার ৮টি পঞ্চায়েত সমিতিই দখল করে নেয় তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে গত বছর ঝাড়গ্রাম পুরভোটের প্রচারে সূর্যবাবুকে নিয়ে আসার ব্যাপারে সিপিএমের ঝাড়গ্রাম শহর জোনাল কমিটির তরফেই জোরদার দাবি ওঠে। কিন্তু দলীয় সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত সূর্যবাবুকে পুরভোটের প্রচারে নিয়ে আসার ব্যাপারে কোনও আগ্রহই দেখাননি দলের জেলা নেতৃত্ব। গত পুরভোটে তিন দশকের লালদুর্গ ঝাড়গ্রাম পুরসভাটিও হাতছাড়া হয় বামেদের। একটি বাদে বাকি সব আসনগুলিতেই জয়ী হয় তৃণমূল। বামেদের তরফে কেবলমাত্র একটি আসন পায় সিপিআই। ঝাড়গ্রাম পুরসভায় সিপিএম একটি আসনেও জিততে পারেনি।

ঝাড়গ্রাম পুরভোটের ফলাফলের নিরিখে সিপিএমের জেলা নেতৃত্বকে কার্যত নিচুতলার কর্মীদের তোপের মুখে পড়তে হয়। এ বার তাই আর ঝুঁকি নিচ্ছে না সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, জেলা নেতৃত্বের সুপারিশক্রমে সম্প্রতি রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে সূর্যবাবুকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রচারে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অবশেষে প্রায় দেড় বছর পরে জেলায় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসছেন সূর্যবাবু।

২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর কেশিয়াড়িতে সিপিএমের কৃষকসভার জেলা সম্মেলনে সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার ও সূর্যবাবুকে শেষবার একমঞ্চে দেখা গিয়েছিল। শুক্রবার অবশ্য ঝাড়গ্রামে সূর্যবাবুর সভায় দীপকবাবু থাকছেন না। তবে দলীয় প্রার্থী পুলিনবিহারী বাস্কে সূর্যবাবুর সভায় থাকবেন। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ সরকার বলেন, “শুক্রবার দীপকবাবু অন্য কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকবেন বলে ঝাড়গ্রামের সভায় আসতে পারছেন না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমাদের জমসমর্থন বাড়ছে। ঝাড়গ্রামের সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের জমায়েত হবে বলে আমরা আশাবাদী।”

ঝাড়গ্রামে সিপিএমের সূর্যোদয় আদৌ হয় কি-না, সেটাই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

suryakanta jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE