আদালতে ক্ষুদিরাম হেমব্রম। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
স্ত্রী-র প্রেমিক সন্দেহে পড়শিকে খুনের দায়ে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিল ঝাড়গ্রাম জেলা ও দায়রা আদালত। শুক্রবার ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক বিভাসরঞ্জন দে এই সাজা ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত বেলপাহাড়ির জরমা গ্রামের বছর চুয়াল্লিশের ক্ষুদিরাম হেমব্রম-কে দু’হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা ও জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাবাসের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
সরকারি কৌঁসুলি প্রবীর পাল জানান, ২০১২ সালের ২৩ মে জরমা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছিল। ওই দিন দুপুরে ক্ষুদিরামের বাড়িতে সস্ত্রীক গল্পগুজব করতে গিয়েছিলেন প্রতিবেশী বংশীরাম মাণ্ডি (৪০)। ক্ষুদিরামের স্ত্রী ও তাঁর মা-ও সেখানে ছিলেন। গল্পগুজব করার সময় আচমকা বচসার জেরে একটি ধারালো ছুরি দিয়ে বংশীরামের গলায় আঘাত করেন ক্ষুদিরাম। ঘটনাস্থলেই বংশীরামের মৃত্যু হয়। মৃতের দাদা দিনু মাণ্ডির অভিযোগের ভিত্তিতে সেদিনই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় রক্তমাখা ছুরি। অভিযুক্তকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, বংশীরামের সঙ্গে স্ত্রী-র সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতেন ক্ষুদিরাম। ঘটনার দিন গল্পগুজব করার সময় সেই প্রসঙ্গ তুলে আচমকা ধারালো ছুরি নিয়ে বংশীরামের উপর চড়াও হন ক্ষুদিরাম।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বংশীরামের স্ত্রী মাধবী মাণ্ডি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেন। অভিযুক্ত জেলবন্দি থাকাকালীন ২০১২ সালের ৩১ জুলাই এসিজেএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। এরপর মামলাটি বিচারের জন্য দায়রা সোপর্দ হয়। ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে ঝাড়গ্রাম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে মামলাটির বিচার শুরু হয়। ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। বৃহস্পতিবার ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় ক্ষুদিরামকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। শুক্রবার সাজা ঘোষণা হয়। সরকারি কৌঁসুলি প্রবীর পাল বলেন, “সর্বসমক্ষে নৃশংস ভাবে খুন করার ঘটনাটি প্রমাণিত হওয়ায় ক্ষুদিরামকে যথাযোগ্য সাজা দিয়েছেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আসামী উচ্চ আদালতে আবেদনের সুযোগ পাবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy