গরম পড়তেই চড়তে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। কিন্তু ভোটের উত্তেজনাও তো কম নয়। তাই বৈশাখের প্রখর রোদ আর গরমকে সঙ্গী করেই রবিবার ভোটের প্রচারে পথে নামলেন সব দলের প্রার্থীরা।
রবিবার তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীরা পদযাত্রা, মিছিল করে এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালান। পাশাপাশি ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে থাকা পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভা এলাকায় প্রচার চালান কংগ্রেস ও সিপিআই প্রার্থীরা। তমলুক লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী এ দিন সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত কোলাঘাট ব্লক ও হলদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালান। এ দিন বেলা ১২ টা নাগাদ শুভেন্দুবাবু দলের প্রায় এক হাজার কর্মী-সমর্থককে নিয়ে কোলাঘাটের বৈষ্ণবচক গ্রামপঞ্চায়েতের মাছিনান বাজার থেকে পদযাত্রা করেন। কাশিগোড়ি গ্রাম পর্যন্ত এই পদযাত্রায় ছিলেন কোলাঘাটের বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরী, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মানব সামন্ত, ব্লক তৃণমূল নেতা মদন মিশ্র, বদ্রু মল্লিক প্রমুখ। পদযাত্রার পর কাশিগোড়ি গ্রামে কর্মিসভা করেন শুভেন্দুবাবু। এ দিন বিকেলেই কোলাঘাটের সিদ্ধা এলাকার ধুলিয়াড়া গ্রামে, খন্যাডিহি গ্রামপঞ্চায়েতের সজিনাগাছি ও পুলশিটা গ্রামপঞ্চায়েতের দেউলিয়া ফুলবাজারের সভা করেন শুভেন্দুবাবু।
অন্য দিকে, এ দিন সকালে মেচেদা বাসস্ট্যান্ডে মিছিল করেন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী ইব্রাহিম আলি। এরপর মহিষাদলের রবীন্দ্র পাঠাগারে বামফ্রন্টের কর্মিসভায় যোগ দেন তিনি। সভায় ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক সরকার, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তমালিকা পণ্ডা শেঠ, নিরঞ্জন সিহি, সিপিআই জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন ঘড়া, আরএসপি জেলা সম্পাদক অমৃত মাইতি প্রমুখ। বিকেলে তমলুক ব্লকের নাইকুড়ি বাজারে কর্মিসভা ও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের সাবলআড়া, কাখরদা গ্রামে পথসভা করে প্রচার চালান ইব্রাহিম।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী আনোয়ার আলি এ দিন সকালে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের জানুবসান এলাকায় দলের ব্লকের কর্মিসভা করেন। বিকেলে কাঁকটিয়া বাজারে রোড-শো করে প্রচার চালান আনোয়ার আলি। তমলুকের বিজেপি প্রার্থী বাদশা আলম এ দিন বিকেলে ডিমারী বাজার এলাকায় পথসভা করেন। তমলুক লোকসভার এসইউসি প্রার্থী বিবেকানন্দ রায় এদিন প্রচার করেন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। সকালে গোকুলনগরের অধিকারী পাড়ায় জমিরক্ষা আন্দোলনে শহিদ-বেদিতে মালা দিয়ে প্রচার শুরু করেন বিবেকানন্দবাবু। সকালে নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়াবাজার ও নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে পথসভা করেন এসইউসি এই প্রার্থী। এরপর বিকেলে নন্দীগ্রামের মহেশপুর বাজার ও তেখালি বাজারে পথসভায় করে প্রচার চালান তিনি। এসইউসি প্রার্থীর প্রচারসভায় ছিলেন দলের নন্দীগ্রাম লোকাল কমিটির সম্পাদক মনোজ দাস, লোকাল কমিটির সদস্য আনসার হোসেন, অসিত জানা, অসিত প্রধান, দলের মহিলা সাংস্কৃতিক সঙ্ঘের জেলা সভানেত্রী আরতি খাটুয়া প্রমুখ।
এ দিন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়া পাঁশকুড়া বিধানসভা এলাকায় প্রচার চালান। ভোট প্রচারে এসে পাঁশকুড়া-আরামবাগ রেলপ্রকল্প রূপায়ণের দাবিতে সোচ্চার হন তিনি। রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁশকুড়ার বিভিন্ন গ্রামে পায়ে হেঁটে, দলীয় কর্মীর মোটর সাইকেল, গাড়িতে চেপে প্রচার চালান মানসবাবু। তিনি বলেন, “পাঁশকুড়া থেকে আরামবাগ পর্যন্ত রেললাইনের দাবি দীর্ঘ দিনের। তা আজও পূরণ হয়নি।” ঘাটালের কংগ্রেস প্রার্থীর কথায়, “আমি উন্নয়নের মডেল নিয়ে যে ভাবে সবংকে সাজিয়েছি, একই ভাবে পাঁশকুড়া, ঘাটাল, পিংলা, ডেবরা, কেশপুর, দাসপুর এলাকাকে সাজাতে চাই।” অন্য দিকে, ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রাণা এ দিন বিকেলে পাঁশকুড়ার চাপাডালি বাজার থেকে পাঁশকুড়া স্টেশন পর্যন্ত পদযাত্রা করেন ও পাঁশকুড়া নতুন বাসস্ট্যান্ডে পথসভা করেন।
এগরা বিধানসভা এলাকাটি মেদিনীপুর লোকসভার অন্তর্গত হওয়ায় প্রথম দিকে এই এলাকায় প্রচারে কম তৎপরতা দেখা গিয়েছিল। তবে ভোটের হাওয়া বাড়তেই এই এলাকাতেও জোর কদমে শুরু হয়ে গিয়েছে সর্বদলের প্রচার। গত শনিবার এবং ছুটির দিন রবিবারকেও কাজে লাগিয়েছে সব দল। শুক্রবার এগরা শহরে প্রচার চালান বিজেপি প্রার্থী প্রভাকর তেওয়ারি। শনিবার বিকেল চারটে নাগাদ এগরা কলেজ সংলগ্ন মাঠে কয়েক হাজার সমর্থককে সঙ্গে নিয়ে প্রচার চালান মেদিনীপুরের সিপিআই প্রার্থী প্রবোধ পাণ্ডা। সঙ্গে ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার প্রমুখ। শনিবারই তৃণমূলের যুব সংগঠনের আয়োজিত সভায় তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যা রায়কে জেতানোর আবেদনও জানানো হয়। রবিবার সকালে এলাকায় প্রচারে এসেছিলেন মেদিনীপুরের কংগ্রেস প্রার্থী বিমল রাজ। তাদের মূল স্লোগান ছিল, “আর নেই দরকার সারদার সরকার।” এ দিন বিকেলে এগরা শহরের মিলনী এলাকায় প্রচার করেন এসইউসি প্রার্থী তুষার জানা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy