Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রয়েই গিয়েছে জবরদখল কাঁটা, উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত

জবরদখলকারীদের দাপটে থমকে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ। গত ১৮ নভেম্বর ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোডের চৌরঙ্গী থেকে ইন্দা পর্যন্ত অংশে রাস্তার দু’ধার থেকে হকারদের সরে যেতে বলে বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে ২৫ নভেম্বরের মধ্যে রাস্তার দু’ধার পরিষ্কার করে দিতে বলা হয়। তারপরেও রাস্তা পুরোপুরি হকার মুক্ত না হওয়ায় জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন।

স্বেচ্ছায় কয়েকজন জবরদখলকারী নিজেদের দোকান ভেঙে দিলেও এই উদ্যোগ চোখে পড়েনি সর্বত্র। খড়্গপুরের ওটি রোডে। ছবি: কিংশুক আইচ।

স্বেচ্ছায় কয়েকজন জবরদখলকারী নিজেদের দোকান ভেঙে দিলেও এই উদ্যোগ চোখে পড়েনি সর্বত্র। খড়্গপুরের ওটি রোডে। ছবি: কিংশুক আইচ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০১:২১
Share: Save:

জবরদখলকারীদের দাপটে থমকে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ। গত ১৮ নভেম্বর ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোডের চৌরঙ্গী থেকে ইন্দা পর্যন্ত অংশে রাস্তার দু’ধার থেকে হকারদের সরে যেতে বলে বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে ২৫ নভেম্বরের মধ্যে রাস্তার দু’ধার পরিষ্কার করে দিতে বলা হয়। তারপরেও রাস্তা পুরোপুরি হকার মুক্ত না হওয়ায় জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন।

ওড়িশা ট্র্যাঙ্ক রোড দেখাশোনার দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। জবরদখলকারীদের ১২০ ফুট চওড়া রাস্তা ক্রমে সঙ্কীর্ণ হয়েছে। মুম্বই-কলকাতা ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে এই রাস্তা ধরেই শহরে ঢুকতে হয়। বর্তমানে মাত্র ১৮ ফুট চওড়া রাস্তায় যানজ নিত্যদিনের সমস্যা। একাধিকবার রাস্তা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হলেও পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। বছর খানেক আগে পূর্ত দফতরের মেদিনীপুর ডিভিশনের অধীনে চলে যায় রাস্তাটি। গত জানুয়ারি মাসে রাস্তাটি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়। বরাদ্দ হয় ৯ কোটি টাকা।

রাস্তা সম্প্রসারণের আগে পূর্ত দফতরের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ ও টেলিফোন লাইনের তার, বিদ্যুতের খুঁটি, জলের পাইপ লাইন সরানোর জন্য আবেদন জানানো হয় মহকুমা প্রশাসনের কাছে। মহকুমা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিতে বিষয়টি জানায়। যদিও সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি থেকে জানানো হয়, রাস্তা দখলমুক্ত না করা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও টেলিফোন লাইন সরানোর কাজ সম্ভব নয়। ঠিক হয়, পুজোর আগেই ইন্দার ওটি রোড সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে। যদিও পুজোর আগে কাজ শুরু করা যায়নি।

সম্প্রতি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজে নেমেছে পূর্ত দফতর। আপাতত রাস্তার যে অংশে জবরদখল নেই সেখানেই পাইলিংয়ের কাজ চলছে। যদিও রাস্তার বাকি অংশ দখলমুক্ত করতে গত ১৮ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে প্রশাসন। অনেক হকার স্বেচ্ছায় দোকান সরিয়েও নেয়। বুধবার বিজ্ঞপ্তির সময়সীমা শেষ হয়ে গেলেও রাস্তার কিছু অংশে এখনও জবরদখল রয়ে গিয়েছে। ইন্দা কলেজের কাছে এক দোকানদারের কথায়, ‘‘আমরাও চাই উন্নয়ন হোক। কিন্তু এই দোকানের ওপর আমার সংসার নির্ভরশীল। তবে সরকার আগে আমাদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিক।”

শহরবাসীরও একাংশের দাবি, যানজট কমাতে দ্রুত রাস্তা সম্প্রসারণ করা হোক। ইন্দার বাসিন্দা সোমা সেনগুপ্ত, সোমনাথ আচার্য বলেন, ‘‘শহরের জীবনরেখা এই রাস্তায় প্রতিদিন যানজটে নাভিশ্বাস ওঠে। জবরদখলকারীরা উন্নয়নের স্বার্থে জায়গা না ছাড়লে রাস্তার কাজ আটকে যাবে।’’ তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা চাই দ্রুত রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ হোক। তবে দরিদ্র হকারদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও বিবেচনা করে দেখুক প্রশাসন।’’

কী ভাবছে প্রশাসন?

খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “জবরদখলকারীদের স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার জন্য ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম। তবে যাঁরা এখনও সরে যায়নি, তাঁদের ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তার কাজে কোনওরকম বাধা বরদাস্ত করা হবে না।’’ তবে কেউ যদি পুনর্বাসনের আবেদন জানায় সে বিষয়েও বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE