দোকানের ভিড়ে বেদখল ফুটপাথ। দোকানের আবর্জনা জমে অবরুদ্ধ শহরের একাংশ নিকাশি নালাও। ফলে, সামান্য বৃষ্টিতেই মেদিনীপুরের রাস্তায় জল জমে যায়। মুরগির মাংসের দোকানের সামনে সমস্যা তুলনায় বেশি। সেই সমস্যা মেটাতে আপাতত মুরগির মাংসের দোকানের সামনে টাকার বিনিময়ে ভ্যাট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।
মেদিনীপুরের উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “পুরসভা তো রাস্তার দু’পাশে দোকান বসায়নি। ফলে দোকানদারদেরই খরচ দিয়ে ভ্যাট নিতে হবে। সেখান থেকে আবর্জনা ফেলার দায়িত্ব নেবে পুরসভা।’’ এ ব্যাপারে হকার ও ক্ষুদ্র পরিবহণ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক শঙ্কর দাসের বক্তব্য, “আমরাও চাই শহর সুন্দর থাক। আমাদের দোকানের সামনের অংশটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুক। তার জন্য সামান্য কিছু খরচ করতে হলে করব।”
মুরগির মাংসের দোকানের সামনে পুরসভা ভ্যাট বসাচ্ছে তা জানার পরেই অন্যান্য এলাকাতেও একই ব্যবস্থা চালু করার দাবি উঠেছে। ধরা যাক, এলআইসি চকের কথা। তার দু’দিকে একগুচ্ছ ফলের দোকান। শহরের অন্যান্য প্রান্তেও ফলের দোকান রয়েছে। এখন আবার কিছু ফলের দোকানে ফলের রসও বিক্রি হয়। ফলের খোসা বা ফলের ফেলে দেওয়া অংশটি দোকানের সামনেই সারাদিন রাখতে হয়। কখনও আবার ফলের খোসা গিয়ে পড়ে নিকাশি নালায়। দিনের শেষে তা ফেলা হয় ভ্যাটে। অনেকেই আবার যত্রতত্র ফেলে দেন বলে অভিযোগ। এই সব পচনশীল আবর্জনার জন্য প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়ায়। বাড়ে মাছির উত্পাত। তা থেকে দূষণ ছড়ায়। গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে ফাস্ট ফুডের দোকানও। যেখানে মাংসের হাড়, টুকরো শশা, সস-সহ নানা ধরনের আবর্জনা পড়ে থাকে। সেগুলিও পচনশীল। পচনশীল হওয়ার কারনে দুর্গন্ধ ছড়ায়। নিকাশি নালাও বন্ধ হয়ে যায়। আবার যে সব ক্ষেত্রে পচনশীল থাকে না সেগুলি নিকাশি নালাকে দ্রুত বন্ধ করে দেয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভ্যাট দেওয়ার পর দোকানদারদের একবার করে সরিয়ে নিকাশি নালা পরিষ্কার করে দিলে তা সহজে বুজে যাবে না। ভেতর দিয়ে নিকাশির জল যাবে। সে জল রাস্তায় উঠবে না। আবার আবর্জনার জন্য দোকানের সামনের যে হতশ্রী চেহারা দেখা যায়, ভনভনিয়ে মাছি উড়ে বেড়ায়, তাও থাকবে না।
এখন প্রশ্ন, একটি ভ্যাটের জন্য পুরসভা ৫০০ টাকা নিলে দোকানদারেরা কি রাজি হবেন? পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এই কারণে একাধিক দোকানদারের জন্য একটি ভ্যাট রাখা হবে। ১০-১২ জন মিলেই ৫০০ টাকা দেবেন বলেই আশা। উপ-পুরপ্রধানের কথায়, “শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হলে এটা করা ভীষণ জরুরি। এতে নিকাশি নালাগুলিও বাঁচবে, শহরও জঞ্জালমুক্ত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy