Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আধারেই ঘরে ফেরার আশার আলো

আধার কার্ডে ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্য নথিভুক্ত করার যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে হোমের পাঁচ কিশোরীর বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পেতে সহায়ক হয়েছে আধারের ব্যক্তিগত তথ্যই।

দিশা: বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় এই পাঁচ কিশোরীর। নিজস্ব চিত্র

দিশা: বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় এই পাঁচ কিশোরীর। নিজস্ব চিত্র

সৌমেশ্বর মণ্ডল
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১১
Share: Save:

রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি থেকে নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা সরকারি পরিষেবা— সবেতেই আধার কার্ড এখন বাধ্যতামূলক। সেই আধার আবার বাড়ির ঠিকানাও খুঁজে দিতে পারে। এমনই ঘটনার সাক্ষী খড়্গপুর।

আধার কার্ডে ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্য নথিভুক্ত করার যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে হোমের পাঁচ কিশোরীর বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পেতে সহায়ক হয়েছে আধারের ব্যক্তিগত তথ্যই।

খড়্গপুর-২ ব্লকের গোকুলপুরে রয়েছে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মেয়েদের হোম ‘মাদারচক নবোদয় কিশলয় সঙ্ঘ’। ৪৯ জন আবাসিকের মধ্যে মানসিক প্রতিবন্ধী ২৭ জন, মূক-বধির ২২ জন। গত জুনে হোম পরিদর্শনে এসেছিলেন ‘চাইল্ড লাইফ অ্যান্ড ট্রাফিকিং’-এর ডিরেক্টর রিচা মিশ্র। হোমের মেয়েদের ‘আধার কার্ড’ ও ‘প্রতিবন্ধী শংসাপত্র’ করার জন্য হোম কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে যান তিনি।

সেই মতো গত রবিবার হোমে মেয়েদের আধার কার্ড তৈরি হচ্ছিল। মেয়েদের আঙুলের ছাপ নেওয়ার সময় দেখা যায় পাঁচ কিশোরীর হাতের ছাপ-সহ যাবতীয় তথ্য আগেই নথিভুক্ত রয়েছে। সেখান থেকেই ওই পাঁচজনের বাড়ির ঠিকানা জানা যায়। হোমের সম্পাদক অতনুশঙ্কর রাজ বলেন, ‘‘আধার তৈরির সময় ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’ থেকে পাঁচ কিশোরীর বাবার নাম, ঠিকানা সবই জানা গিয়েছে।’’

১৩-১৮ বছরের এই পাঁচ কিশোরীর মধ্যে ঝাড়খণ্ডের সিমদেগা জেলার বানোয় বাড়ি ১১ বছরের মানসিক প্রতিবন্ধী জয়ন্তীকুমারীর। বাবা গোকুল নাগ। ১৩ বছরের মূক-বধির মাদো হাঁসদার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার সর্ডিহায়। বাবা জাদু হাঁসদা। পূর্ব সিংভূমেরই গোয়েলকেরা গ্রামে বাড়ি ১৩ বছরের মূক-বধির কিশোরী আন্না হুরাদ। বাবার নাম করণ হুরদা। ১৪ বছরের নার্গিস খাতুন মানসিক প্রতিবন্ধী। বাড়ি উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার জেলার ভগবানপুরে। আর ১৮ বছরের মূক-বধির চায়না মহাপাত্রের বাড়ি নয়াগ্রামের কলমাপুকুলিয়াতে। বাবা বিমল মহাপাত্র।

হোমের সম্পাদক অতনুবাবুর কথায়, ‘‘পরিচয় সঠিক কিনা জানতে আধার কার্ড থেকে পাওয়া পাঁচ কিশোরীর নাম-ঠিকানা-ছবি জেলাশাসকের কাছে জমা দিয়েছি।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশ প্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘এই ঠিকানাগুলিতে যোগাযোগ করা হবে। পরিচয় ঠিক হলে ওই কিশোরীদের বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’ গত এক বছর ধরে হোমে থাকা খুশি চায়না, নার্গিস, জয়ন্তীরা এখন সেই ঘরে ফেরারই অপেক্ষায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Aadhaar enrollment centre আধার কার্ড
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE