Advertisement
০৫ মে ২০২৪
কেশপুরে স্ত্রী-মেয়েকে খুন

খুনের আগে তালাক চায় ধৃত সামসুল

স্ত্রী মানুয়ারা এবং দেড় বছরের মেয়ে মুসকান খাতুনকে খুনের অভিযোগে সামসুলকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। শুক্রবার তাকে মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হয়। ধৃত সামসুলকে ৬ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ।

ধৃত: সামসুল আলি। —নিজস্ব চিত্র।

ধৃত: সামসুল আলি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ২৩:৫৬
Share: Save:

স্ত্রী মনুয়ারা বেগমের থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ চাইছিল শেখ সামসুল আলি। অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েই তার এই পদক্ষেপ। জোড়া খুনের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এমনটাই মনে করছে।

স্ত্রী মানুয়ারা এবং দেড় বছরের মেয়ে মুসকান খাতুনকে খুনের অভিযোগে সামসুলকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। শুক্রবার তাকে মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হয়। ধৃত সামসুলকে ৬ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে কি বিচ্ছেদ চাইছিল সামসুল? জেলার এক পুলিশ কর্তা মানছেন, “গত কয়েক মাস ধরে ওদের মধ্যে মনোমালিন্য চরমে পৌঁছেছিল। ধৃত যুবক স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে চাইত না। তদন্তে এই দিকটিও দেখা হচ্ছে।’’

মনুয়ারার দাদা শেখ মোর্তাজা আলিও বলছিলেন, “ও (সামসুল) ইদানীং বোনের সঙ্গে ঘর করতে চাইত না। ইচ্ছে করেই অশান্তি করত। বোন অবশ্য জানিয়েছিল, সে সংসার ভাঙতে পারবে না।’’ স্বামীর অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক জেনে ফেলায় মানুয়ারার উপর অত্যাচার হত বলেও অভিযোগ তাঁর দাদার। তিনি আরও বলেন, “বোন যে সংসার ভাঙবে না সেটা ওরা বুঝতে পেরেছিল। তাই মাস কয়েক আগে বোনকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টাও করেছিল ওরা।’’ মনুয়ারার এক প্রতিবেশীরও বক্তব্য, “মনুয়ারা খুব সাধারণ মেয়ে ছিল। ও মন দিয়েই সংসারটা করতে চেয়েছিল। কিন্তু সামসুল ওর সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলা করত।”

কেশপুরের মতো এলাকায় বিবাহ বিচ্ছেদ নতুন নয়। তবে সম্প্রতি তিন তালাক প্রথা রদ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত বলেছে, ইসলাম ধর্ম অনুসারে তিন তালাক গ্রহণযোগ্য নয়। তার আগেই অবশ্য তালাক দিতে চেয়েছিল সামসুল। কেশপুরের ইছাইপুর গ্রামের এই স্বামী-স্ত্রীর অশান্তি নিয়ে একবার সালিশিও হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, সালিশিতে মনুয়ারার সঙ্গে সংসার করার কথাই সামসুলকে বলেছিলেন গ্রামের মাতব্বররা। তাকে জানানো হয়েছিল, পরকীয়া চলবে না। এরপরও অন্য কোনও মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে প্রয়োজনে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তারপরেও অশান্তি থামেনি। বছর খানেক আগে থানা-পুলিশও হয়েছিল। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশও তখন সামসুলকে সতর্ক করেছিল। অবশ্য সে শোধরায়নি।

বুধবার রাতে ঘরেই খুন হন মনুয়ারা এবং তার দেড় বছরের শিশুকন্যা মুসকান। লোহা কাটার হ্যাকশ’ ব্লেড দিয়ে স্ত্রী ও মেয়ের গলার নলি কেটে দেয় সামসুল। বৃহস্পতিবার রাতে কেশপুরেরই কলাগ্রাম থেকে এই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী-মেয়েকে খুনের কথা স্বীকার করেছে সামসুল। তবে খুনে ব্যবহৃত হ্যাকশ’ ব্লেডের খোঁজ এখনও পায়নি পুলিশ। সামসুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই ব্লেডের খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE