Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
নিরাপত্তা নেই হাসপাতালে

স্ট্যান্ড থেকেই উধাও হচ্ছে বাইক-সাইকেল

ঘণ্টা চারেক বাদে স্ট্যান্ডে গিয়ে সুশীলবাবুর চোখ ছানাবড়া। স্ট্যান্ড থেকে বাইক উধাও। নেই ওই দুই নিরাপত্তারক্ষীও। অনেক খোঁজ করেও বাইক পেলেন না তিনি। অগত্যা গত ১৭ জুন খড়্গপুর টাউন থানায় বাইক চুরির মামলা রুজু করেন সুশীলবাবু।

নজর-নেই: স্ট্যান্ড থেকেই চুরি যাচ্ছে বাইক। নিজস্ব চিত্র

নজর-নেই: স্ট্যান্ড থেকেই চুরি যাচ্ছে বাইক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০১:২৭
Share: Save:

স্ট্যান্ড থেকেই উধাও হয়ে যাচ্ছে সাইকেল-বাইক! বিপাকে পড়ছেন রোগীর পরিজনেরা। খড়্গপুর রেল হাসপাতালে নিরাপত্তার এখন এমনই হাল।

গত ১৬ জুন শ্বশুরকে দেখতে বাইকে করে রেল হাসপাতালে গিয়েছিলেন ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল ব্লকের বাসিন্দা সুশীলকুমার মাহাতো। হাসপাতালে অস্থি বিভাগের ভবনের বাইরে বাইক রাখতে যান তিনি। বাধা দেন দুই নিরাপত্তারক্ষী। পরে রক্ষীদের দাবি মতো সাইকেল স্ট্যান্ডে তিনি বাইক রেখে হাসপাতালে ঢোকেন। ঘণ্টা চারেক বাদে স্ট্যান্ডে গিয়ে সুশীলবাবুর চোখ ছানাবড়া। স্ট্যান্ড থেকে বাইক উধাও। নেই ওই দুই নিরাপত্তারক্ষীও। অনেক খোঁজ করেও বাইক পেলেন না তিনি। অগত্যা গত ১৭ জুন খড়্গপুর টাউন থানায় বাইক চুরির মামলা রুজু করেন সুশীলবাবু।

শুধু সুশীলবাবু নন, হাসপাতালে ভর্তি থাকা পরিজনেদের দেখতে এসে প্রায়ই এ ভাবেই বিপাকে পড়ছেন রোগীর আত্মীয়েরা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের প্রধান এই হাসপাতালে বহু দূর থেকে অনেক রেল কর্মী তাঁদের চিকিৎসার প্রয়োজনে আসেন। হাসপাতালে ঢোকার জন্য রয়েছে দু’টি প্রবেশপথ। দ্বিতীয় প্রবেশপথের পাশে রয়েছে সাইকেল স্ট্যান্ড। অস্থি বিভাগের ভবনের ডানদিকে রয়েছে হাসপাতালের কর্মীদের সাইকেল রাখার জন্য আলাদা স্ট্যান্ড। স্ট্যান্ডে নজর রাখার জন্য নিরাপত্তারক্ষীও রয়েছেন।

যদিও দিনের অধিকাংশ সময়ে ওই স্ট্যান্ডের বাইরেই হাসপাতাল চত্বরে যত্রতত্র বাইক-সাইকেল-গাড়ি পার্কিং করেন রোগীর পরিজনেরা। রক্ষী থাকলে তাঁরাই রোগীর পরিজনেদের স্ট্যান্ডে বাইক রাখতে বাধ্য করেন। যদিও তারপরে তাঁরা ঠিক মতো নজরদারি করেন না বলে অভিযোগ। এক রোগীর পরিজনের অভিযোগ, ‘‘নিরাপত্তারক্ষীরাই স্ট্যান্ডে সাইকেল-বাইক রাখতে বাধ্য করেন। যদিও ঠিক মতো নজরে রাখেন না। তাঁদের গাফিলতির জন্যই বাইক-সাইকেল উধাও হয়ে যায়। তবে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে।’’

হাসপাতাল ভবনের ভিতরে ও কয়েকটি জায়গায় সিসি ক্যামেরা থাকলেও সাইকেল স্ট্যান্ডের কাছে কোনও ক্যামেরা নেই। ফলে বাইক চুরি গেলেও কে এই কাজ করল তা বোঝার উপায় প্রায় নেই বললেই চলে। হাসপাতালে আসা এক রেলকর্মী সত্যজিৎ দত্ত বলছিলেন, “হাসপাতাল থেকে মাঝে মধ্যেই বাইক-সাইকেল চুরির ঘটনা শুনছি। হাসপাতাল চত্বরে এমন ঘটনা কাম্য নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত স্ট্যান্ডে সর্বক্ষণ নিরাপত্তাকর্মী রাখা।”

বাইক চুরির ভয়ে আতঙ্কিত হাসপাতালের নার্স জাসমিন টিগ্গা বলছেন, “স্কুটি নিয়ে হাসপাতালে আসি। কর্মীদের জন্য বরাদ্দ স্ট্যান্ডেও স্কুটি রাখা নিরাপদ নয়। নজরদারি বাড়াতে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা
করা প্রয়োজন।”

বাইক চুরি রুখতে কেন পদক্ষেপ করছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? সদুত্তর এড়িয়ে রেল হাসপাতালের সুপার এ মণ্ডল দাবি করছেন, “নিরাপত্তাকর্মী আছে তো। বাইক চুরি হচ্ছে বলে কোনও অভিযোগ
জানা নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE