আলিঙ্গনে: কাঁথিতে ইদের নমাজের পর দুই খুদে। নিজস্ব চিত্র
পিঠোপিঠি রথ ও ইদ। এই দুই উৎসব ঘিরে সম্প্রীতির অন্য ছবি দেখল মেদিনীপুর।
সোমবার ইদ হওয়ায় আগের দিন থেকেই শহরের বিভিন্ন মহল্লায় ছিল সাজ সাজ রব। রবিবার বিকেল থেকেই শহরের বিভিন্ন রাস্তায় নামে ছোট থেকে বড় অসংখ্য রথও। এ দিন সন্ধ্যায় গোলকুয়াচক দিয়ে যখন রথের শোভাযাত্রা বেরোয়, তখন সব রকম সহযোগিতা করেন শেখ তাপ্পু, শেখ আসাউদ্দিনেরা। রথের রশি টানতে টানতে ক্লান্ত জয়দীপ নন্দী, কৌস্তভ দাসদের ঠান্ডা পানীয় জলও বিলি করেন তাঁরা। প্রায় ৫০০ বোতল জল বিলি করা হয়। ইদের দিন সকালেও মিষ্টি, চকোলেট বিলি করলেন শহরের মাসুম স্টার ক্লাবের সৌরভ বসু,
অনয় মাইতিরা।
গোলকুয়াচকের বাসিন্দা শেখ তাপ্পু, শেখ আসাউদ্দিনেরা বলছেন, “অনেকটা পথ পেরোনোর পরে রথ আমাদের এলাকায় এসেছিল। এতটা পথে রথ টানার ক্লান্তি তো থাকেই। রথযাত্রায় সামিল হওয়া লোকেদের ঠান্ডা জল খাইয়ে সেই ক্লান্তি দূর করার চেষ্টা করেছি। জলের আরেক নাম তো জীবন।”
আর মাসুম স্টার ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সৌরভ বসু ও অনয় মাইতিদের কথায়, “মেদিনীপুর শহর সম্প্রীতির শহর। শহরে আমরা সব ধর্মের মানুষই মিলেমিশে থাকি। তাই ক্লাবের সকলে মিলে মধুর মিলন উৎসবের আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিই।” সোমবার সকালে ক্লাবের উদ্যোগে এলাকায় মিষ্টি, চকোলেট বিলি করা হয়। ইদের সকালে মিষ্টি, চকোলেট পেয়ে বেজায় খুশি শেখ ওয়ারেশ, শেখ তাহিদুলদের মতো খুদেরা।
পঞ্চুরচকের অগ্নিকন্যা ক্লাবের উদ্যোগেও মহামিলন উৎসবের আয়োজন হয়। রবিবার সন্ধ্যায় রথযাত্রায় সামিল হওয়া
লোকজনেদের ক্লাবের পক্ষ থেকে সরবত বিলি করা হয়। সোমবার সকালে বিলি করা হয় মিষ্টি, চকোলেট। ক্লাবের সদস্য শিশির হাজরা বলছিলেন, “রথের সন্ধ্যায় সরবত বিলি করা হয়েছে। ইদের সকালে মিষ্টি, চকোলেট, লাড্ডু বিলি করা হয়েছে। মেদিনীপুর শহর তো সর্বধর্ম সমন্বয়ের এক আদর্শ প্ল্যাটফর্ম।”
রথ আর ইদ ঘিরে রবিবার ও সোমবার দিনভর শহরে ছিল উৎসবের আমেজ। সোমবার সকালে ইদের নমাজ পড়তে মসজিদগুলোয় ভিড় জমে।
শেখ সাহিল, সরফরাজ খানদের কথায়, “আজকের দিনটা একেবারেই আলাদা। এই দিনটার জন্য আমরা সকলেই অপেক্ষা করে থাকি। বন্ধুদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা মেরেছি। সঙ্গে খাওয়াদাওয়া তো ছিলই। টুকটাক কেনাকাটাও করেছি।” বিকেল গড়াতেই রঙিন আলোয় সেজে ওঠে মহল্লাগুলো। সিপাইবাজার থেকে কেরানিতলা- সর্বত্রই ছিল নানা রঙের আলোর সাজ।
মেদিনীপুরের জগন্নাথমন্দির সংস্কার কমিটির পল্টু সেন বলছিলেন, “মেদিনীপুর সম্প্রীতির শহর। এ বারও সেই সম্প্রীতির ছবিই দেখা গিয়েছে।” একইভাবে, মেদিনীপুর আলম কমিটির রাজেশ হোসেনের কথায়, “শহরে যে কোনও উৎসবের সঙ্গেই আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকেন সবধর্মের মানুষ। এ বারও তাই হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy