মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ ঘিরে আলোড়ন পড়েছে মেদিনীপুরে। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন সুকুমার ভুঁইয়া নামে শহরের এক তৃণমূল নেতা। এ বার ঘটনার তদন্ত শুরু করল সিআইডি। জেলে গিয়ে সুকুমারবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে শুক্রবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে আবেদন জানিয়েছিল সিআইডি। তা মঞ্জুর হয়েছে। আজ, শনিবার মেদিনীপুর জেলে গিয়ে সুকুমারবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে সিআইডি সূত্রে খবর। এরপর ধৃতকে হেফাজতে চেয়েও আবেদন জানাবে সিআইডি।
সিআইডি প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে, তছরুপ হওয়া টাকার অঙ্ক অনেকটাই বেশি, প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার। অন্তত অভিযোগ এমনই। সিআইডি-র এক কর্তার কথায়, “টাকার পরিমাণটা বাড়তেও পারে। কারণ, তদন্তে এমন অনেক কিছুরই হদিস মিলছে যার উল্লেখ অভিযোগপত্রে নেই।”
মেদিনীপুর শহরের বার্জটাউনে রয়েছে ‘মহিলা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি’। ব্যাঙ্কের দু’টি শাখা রয়েছে খড়্গপুর ও চন্দ্রকোনা রোডে। গ্রাহক সব মিলিয়ে সাড়ে চার হাজার। এই ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির সম্পাদিকা মধুমিতা ভুঁইয়া ধৃত সুকুমারবাবুর স্ত্রী। অভিযোগ, স্ত্রীকে সামনে রেখে সব কিছু পরিচালনা করতেন সুকুমারবাবুই। তছরুপের অভিযোগ ওঠার পরে মধুমিতাদেবী-সহ সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মকর্তারা পলাতক। সিআইডি তাঁদের খুঁজছে।
দিন কয়েক আগে খড়্গপুরের এক মহিলা গ্রাহক পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে জানান, তাঁর নথিপত্র ও সই জাল করে ঋণ বাবদ ১২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সুকুমারবাবুরা। ১৪ মে সুকুমারবাবু গ্রেফতার হন। তারপর তদন্ত শুরু করে সমবায় দফতরও। প্রাথমিক তদন্তে অনিয়মের হদিস পেয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান পশ্চিম মেদিনীপুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার অফ কো-অপারেটিভ সোসাইটি (এআরসিএস) তপন দাস। তারপরই তদন্তভার নেয় সিআইডি। তপনবাবু বলেন, “ওই ব্যাঙ্কে বেশ কিছু অনিয়ম রয়েছে। সব পুলিশকে জানিয়েছি।”
ধৃত সুকুমারবাবু একাধিকবার দলবদল করেছেন। এক সময় ফরওয়ার্ড ব্লকের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক ছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনের পরে নাম লেখান বিজেপিতে। তারপর ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে ডেবরা থেকে বিজেপির টিকিটে লড়ে হেরে যান। তারপর তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। শাসকদলে তেমন পদ না থাকলেও মেদিনীপুর শহরে তৃণমূলের কর্মসূচিতে প্রথম সারিতেই দেখা যায় সুকুমারবাবুকে। ফলে, অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি তথা বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী বলেন, “কেউ দোষী হলে তাকে আমাদের দল আড়াল করে না। তবে সুকুমার ভুঁইয়া নেতা নন, কর্মী হিসেবেই কাজ করছিলেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy