মন্দিরা পণ্ডা। নিজস্ব চিত্র
দু’বার ফল মিলেছে। তৃতীয় বারেও একই তাসে ভরসা রাখতে চাইছে সিপিএম।
এর আগে তমালিকা পণ্ডা শেঠকে সামনে রেখে কঠিন সময়ে হলদিয়া পুরসভা দখলে রেখেছিল সিপিএম। তার আগেই অবশ্য বিধায়ক এবং দলের নেত্রী হিসাবে তমালিকার যথেষ্ট প্রভাব প্রতিষ্ঠিত। একই ভাবে কয়েক মাস আগের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ঝড়ের বাজারেও হলদিয়া কেন্দ্রে সিপিএম বাজিমাত করতে পেরেছিল তাপসী মণ্ডলকে সামনে রেখে। মহিলা মুখ এগিয়ে দিয়ে লড়াইয়ের পরম্পরা এ বার লোকসভা উপনির্বাচনেও ধরে রাখতে চেয়ে সিপিএমের প্রার্থী মন্দিরা পণ্ডা।
ধারে ও ভারে তমালিকা অবশ্য এঁদের সকলের চেয়েই এগিয়ে ছিলেন। তাপসীও সাত বারের কাউন্সিলর হিসাবে হলদিয়া এলাকায় পরিচিত মুখ। সেই তুলনায় মন্দিরাকে এনে বড় ধরনের পরীক্ষার রাস্তাতেই হেঁটেছেন রবীন দেবরা। মন্দিরাদেবী দেউলপোতা লোকাল কমিটির সম্পাদক এবং সেই সুবাদে হলদিয়া জোনাল কমিটির সদস্য। সিপিএমের সংগঠনে লোকাল কমিটির সম্পাদক পদে মহিলা, বিরল ঘটনাই বটে! সংগঠনে মহিলাদের গুরুত্ব যে তাঁরা বাড়াতে চাইছেন, তুলনায় অপরিচিত মুখ হওয়া সত্ত্বেও মন্দিরাদেবীকে প্রার্থী করে সেই বার্তা দিতে চাওয়া হয়েছে বলে আলিমুদ্দিন সূত্রের বক্তব্য।
তবে সিপিএমের সমস্যা তাতে পুরোপুরি কাটছে না। একে তো তমলুক বামেদের জন্য খুবই কঠিন আসন। বিধানসভা নির্বাচনে তমলুক লোকসভার অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা এলাকার মধ্যে তিনটিতে বামেরা জিতেছিল। সেই জোরেই অধিকারী পরিবারকে ভাল লড়াই দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন পুর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। যদিও একই সঙ্গে তাঁদের আশঙ্কা, শুধু নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকাই বামেদের পথে বসিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট হতে পারে! এর উপরে বাড়তি ভাবনা থাকছে অপরিচিত প্রার্থীকে নিয়ে।
জেলা সিপিএমেরই একাংশের যুক্তি, মহিলা মুখকে গুরুত্ব দেওয়ার নীতি নিঃসন্দেহে ভাল। কিন্তু তমালিকা বা তাপসীদেবীকে লড়তে হয়েছিল বিধানসভা কেন্দ্রে। আর আনকোরা মন্দিরাদেবীকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে একেবারে লোকসভার লড়াইয়ে। যেখানে লোকাল কমিটির সম্পাদক হিসাবে তাঁর পরিচিতি স্থানীয় এলাকাতেই সীমিত। সংগঠনের নেত্রী বা মহিলা সমিতির মুখ হিসাবে বিরাট অংশের মানুষের কাছে তিনি পরিচিত, এমন নয়। জেলা পরিষদে ২০১৩ সালে লড়ে হারতে হয়েছিল মন্দিরাদেবীকে। হলদিয়ার সুতাহাটা বা সংলগ্ন এলাকার বাইরে লোকসভা কেন্দ্রের বাকি অংশে প্রার্থীকে পরিচিত করাতেই বেগ পেতে হবে বলে মনে করছে জেলা সিপিএমের এই অংশ।
প্রার্থী হিসাবে দু-তিনটি নাম জেলা সিপিএমে চর্চায় ছিল। দলের একাংশের এমনও বক্তব্য, সম্প্রতি হলদিয়া দক্ষিণ জোনাল কমিটির সম্পাদক শ্যামল মাইতি ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের সেন্ট্রাল জেলে বন্দি। দল মনে করে, শাসক দল মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসিয়েছে। এই কঠিন সময়ে তাঁকে প্রার্থী করলে দল চাইলে নির্দিষ্ট একটি বার্তা দিতে পারত।
পরিস্থিতি কঠিন মেনে নিয়েও সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলছেন, “রাজ্য বামফ্রন্ট প্রার্থী চাপিয়ে দেয়নি। মহিলা অথবা সংখ্যালঘু প্রার্থী আমাদের ভাবনা-চিন্তাতেই ছিল। সেইমতো প্রার্থী ঠিক হয়েছে। যাঁদের মধ্যে প্রার্থী নিয়ে সংশয় বা দ্বিধা রয়েছে, প্রার্থী প্রচারে নামলে তা কেটে যাবে বলে আশা করি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy