Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জেলার ক্রিকেটকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে অমিত-অগ্নিভ

রঞ্জিতে বাংলার দুরন্ত জয়। হিমাচলের বিলাসপুরের মাঠে পঞ্জাবকে ১১৫ রানে হারিয়ে দিয়েছে মনোজ তিওয়ারির দল। আর বাংলার পঞ্জাব বধের ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন মেদিনীপুরের অমিত কুইল্যা ও অগ্নিভ পান। তাঁদের ঘিরে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন জেলার ক্রিকেটপ্রেমীরা।

অমিত কুইল্যা।—নিজস্ব চিত্র

অমিত কুইল্যা।—নিজস্ব চিত্র

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

রঞ্জিতে বাংলার দুরন্ত জয়। হিমাচলের বিলাসপুরের মাঠে পঞ্জাবকে ১১৫ রানে হারিয়ে দিয়েছে মনোজ তিওয়ারির দল। আর বাংলার পঞ্জাব বধের ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন মেদিনীপুরের অমিত কুইল্যা ও অগ্নিভ পান। তাঁদের ঘিরে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন জেলার ক্রিকেটপ্রেমীরা।

বাংলার রঞ্জি দলে সুযোগ পাওয়া এই প্রথম। প্রথম সুযোগেই নিজেদের প্রমাণ করেছেন মেদিনীপুরের দুই তরুণ। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে পঞ্জাব দলের ব্যাটিং লাইন আপকে ছত্রভঙ্গ করেছেন অমিত। একাই ভেঙেছেন প্রতিপক্ষের টপ অর্ডারকে। দ্বিতীয় ইনিংসেও দু’টি উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। আর প্রথম ইনিংসে অগ্নিভর ব্যাট থেকে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ ৭০ রান। এই দুই তরুণের পারফরম্যান্সে খুশি মনোজ তিওয়ারিরা।

সোমবার বিলাসপুর থেকে ফোনে অমিত বলেন, “সবে শুরু। আরও অনেক দূর এগোতে চাই।” আরও এগোনোর প্রত্যাশা অগ্নিভরও। জেলার ক্রিকেটপ্রেমীরা নিশ্চিত, অশোক দিন্দার পরে আগামী দিনে বঙ্গ-ক্রিকেটে দাপটের সঙ্গে খেলবেন অমিত, অগ্নিভ।

পঞ্জাবকে হারানোর পরে এ বার গন্তব্য ধরমশালা। প্রতিপক্ষ রেলওয়েজ। শৈলশহরেও এই দুই তরুণ ভাল পারফর্ম করবেন, আশায় মেদিনীপুরের ক্রিকেটপ্রেমীরা। বছর কয়েক আগেও মেদিনীপুরের মাঠে চুটিয়ে ক্রিকেট খেলেছেন অমিত, অগ্নিভ। মাসের পর মাস প্র্যাকটিসে ঘাম ঝরিয়েছেন।

অগ্নিভ পান।

বছর একুশের অমিতের বাড়ি খড়্গপুরে। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই ছোট থেকেই। বাবা সহদেব কুইল্যা একটিু কারখানায় কাজ করতেন। ক্রিকেট খেলা শুরু দশ-এগারো বছর বয়স থেকে। পরে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য মেদিনীপুরে আসা। কয়েকটি টুর্নামেন্টে খেলার পরই নজরে পড়ে যান তিনি। বছর উনিশের অগ্নিভ মেদিনীপুরেরই ছেলে। বাবা সুব্রত পান স্কুল শিক্ষক। প্রাক্তন অ্যাথলিট। প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য বছর কয়েক আগে কলকাতায় যান অগ্নিভ। একের পর এক দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

আগে বাংলার অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন অগ্নিভ। ওই দলের অধিনায়ক ছিলেন। অমিতও বাংলার অনুর্ধ্ব- ১৯ দলের হয়ে খেলেছেন। পরে অনূর্ধ্ব-২৩ দলে ঢুকে পড়েন। তবে রঞ্জিতে এ বারই প্রথম। অমিতের কোচ সুশীল শিকারিয়া বলছেন, “ওর মধ্যে বড় হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। প্রচুর পরিশ্রম করে। নেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেয়।” তাঁর কথায়, “পঞ্জাবের টপ অর্ডারকে তো একাই ভেঙেছে ও। মনন ভোরা, জীবনজ্যোৎ সিংহ, গুরকিরত সিংহদের মতো ঘরোয়া প্রথম শ্রেণি ক্রিকেটে পোড়খাওয়া ব্যাটসম্যানদের আউট করে অমিত বুঝিয়ে দিয়েছে, ও পারে। ওর মধ্যে আরও এগোনোর ক্ষমতা রয়েছে।”

সুশীল মনে করিয়ে দিচ্ছেন, “এক ইনিংসে পাঁচটা উইকেট নিয়ে ফেলা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। অমিত এটাই করেছে। ওর জন্য সত্যি গর্ব হচ্ছে।” ছেলে তো ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটের জন্য তৈরি? অগ্নিভর বাবা সুব্রতবাবুর কথায়, “সব সময় মাঠে নেমে ও নিজের সেরাটা দেওয়ারই চেষ্টা করে। পঞ্জাবের বিরুদ্ধেও তাই করেছে।” আগামী দিনে এই দুই তরুণই যে বাংলার অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠবেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বপ্নের দৌড় তো শুরু হয়ে গিয়েছে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ranji trophy Cricket
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE