সব কাউন্সিলরকে এক জন করে সহকারী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মেদিনীপুর পুরসভা। তিনি কার্যত আপ্ত-সহায়ক (পিএ)-এর কাজ করবেন। ইতিমধ্যে পুরবোর্ডের বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবশ্য এখনও তা কার্যকর হয়নি। পুরসভার এক সূত্রে খবর, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পুরবোর্ডের বৈঠক হতে পারে। সেখানে এ নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হবে।
পুর-কর্তৃপক্ষের মতে, এখন কাউন্সিলরদের কাজের চাপ বাড়ছে। সেই চাপ সামলাতেই কাউন্সিলরদের একজন সহকারী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “কাউন্সিলরদের একজন করে সহকারী দেওয়ার ব্যাপারে পুরবোর্ডের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। অবশ্য এখনও তা কার্যকর হয়নি। আগামী দিনে আলোচনা করেই ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।” উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসের বক্তব্য, “সব কাউন্সিলরই এ ব্যাপারে সহমতে পৌঁছেছেন। এখন কাজের চাপ বাড়ছে। সহকারী থাকলে সেই সমস্ত কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব হবে।”
মেদিনীপুর পুরসভায় ২৫ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। সকলেই একজন করে আপ্ত-সহায়ক পাবেন। কে আপ্ত-সহায়ক হবেন, তা সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরই ঠিক করবেন। এক পুর-কর্তার কথায়, “এটা কোনও সরকারি পদ নয়। তাই সহকারীরা ভাতা পাবেন। পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকেই ওঁদের ভাতা দেওয়া হবে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, সহকারীদের মাসে ৪-৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে।” ওই পুর-কর্তার মতে, এলাকার দৈনন্দিন সমস্যা, পুর-পরিষেবা বাদেও কাউন্সিলরদের বিভিন্ন কাজ দেখভাল করতে হয়। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মাঝেমধ্যেই নানা কর্মসূচি রূপায়ণের নির্দেশ দেয়। এখন বিভিন্ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের দেওয়া শংসাপত্রও বাধ্যতামূলক। একজন সহকারী থাকলে কাজের চাপ কিছুটা হলেও কমবে।
পুরবোর্ডের বৈঠকে সিদ্ধান্তের পরেও তা কার্যকর হচ্ছে না কেন?
পুরসভার এক সূত্রে খবর, পুর-কোষাগারের অবস্থা ভাল নয়। তাই এই পরিস্থিতি। এখন শহরের জনসংখ্যা প্রায় পৌনে দু’লক্ষ। ২৫টি ওয়ার্ডে বাড়ির সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। পুরকর বাবদ ( হোল্ডিং ট্যাক্স) পুরসভার বছরে আয় হওয়ার কথা প্রায় ৪ কোটি টাকা। অর্থাত্, মাসে প্রায় সাড়ে ৩৩ লক্ষ টাকা। তা অবশ্য সময়মতো আদায় হয় না। অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে কর বকেয়া রেখেছেন। আপাতত পুরসভার লক্ষ্য, বছরে পুরকর বাবদ আয় বাড়িয়ে প্রায় ৮ কোটি টাকা করা। ইতিমধ্যে নতুন হারে পুরকর নির্ধারিত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্ধিত হারে পুরকর আদায় হলে পুরসভার কোষাগারের হাল অনেকটাই ফিরবে। ওই পুর- কর্তার কথায়, “এখন পুরকর থেকে যা আয় হয়, তার একটা বড় অংশই বিদ্যুত বিল মেটাতে চলে যায়। সবমিলিয়ে মাসে প্রায় ৩৪ লক্ষ টাকা বিদ্যুত্ বিল দিতে হয়। এই পরিস্থিতিতে পুরসভার নিজস্ব তহবিলের আয় না- বাড়লে আগামী দিনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন। অস্থায়ী কর্মচারীর একাংশের মাইনেও তো পুরকর থেকে আদায় হওয়া অর্থ থেকে দেওয়া হয়।”
আগামী ৮ মে স্বীকৃত সব কর্মচারী সংগঠনের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন পুর- কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি মজুরি বৃদ্ধি-সহ বেশ কয়েক দফা দাবিতে টানা সাফাই ধর্মঘট চলেছে শহরে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। এরপর চলতি দ্বিতীয় সপ্তাহে পুরবোর্ডের বৈঠক হতে পারে। ওই পুর-কর্তার কথায়, “সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে পুরবোর্ডের বৈঠকেই কাউন্সিলরদের একজন করে সহকারী দেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য সিলমোহর পড়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy