Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

খুনের নালিশ, দেহ নিয়ে পথে

ওডিশার কটকের হাসপাতালে বৃহস্পতিবার ওই মহিলা বছর পঁচিশের হালিমা বিবির মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক মৃতের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।

বিক্ষোভ: অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পথ অবরোধ এলাকার বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

বিক্ষোভ: অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পথ অবরোধ এলাকার বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০২:১৭
Share: Save:

দিন কয়েক আগে গ্রামের এক মহিলার গায়ে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। ওডিশার কটকের হাসপাতালে বৃহস্পতিবার ওই মহিলা বছর পঁচিশের হালিমা বিবির মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক মৃতের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। শুক্রবার গ্রামে বধূর দেহ এলে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে দাঁতন-২ ব্লকের বেলদা-কাঁথি রাজ্য সড়কে জোড়াগেড়িয়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পথ অবরোধ করে মৃতের বাপের বাড়ির এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।

২০১২ সালে দাঁতন-২ ব্লকের উত্তর সাবরা গ্রামের কাঁডরাপুকুর এলাকার শেখ রেজাউলের সঙ্গে বিয়ে হয় দক্ষিণ সাবরার বকুলতলার বাসিন্দা হালিমার। তাঁদের দু’টি পুত্র সন্তান রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই রেজাউলের সঙ্গে হালিমার নানা কারণে অশান্তি হত। বছর তিনেক আগে রেজাউল ব্যবসা করবে বলে হালিমাকে বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলে। সেই টাকা না মেলায় অশান্তি আরও বাড়ে।

হালিমার বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে বাইরে কাজ করতে যেত রেজাউল। সেখানে একাধিক মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ত সে। বছর খানেক আগে পূর্ব মেদিনীপুরের কসবাগোলায় এমন এক সম্পর্কের জেরে ডাকা সালিশি সভায় রেজাউলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। রেজাউলের মদতে শ্বশুরবাড়ির লোকেরাও হালিমাকে মারধর করত বলে অভিযোগ।

হালিমার বাবা শেখ আব্দুল মুকিমের অভিযোগ, “ওঁরা বিয়ের পর থেকেই মেয়ের উপর অত্যাচার করত। জামাইয়ের সঙ্গে অন্য মেয়েদেরও সম্পর্ক ছিল। জামাইয়ের মদতেই ওর বাড়ির লোকেরা মেয়েকে মেরে ফেলল।”

গত ৪ জুন শ্বশুরবাড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হালিমাকে উদ্ধার করে এলাকার লোকেরা। সেই সময়ে রেজাউল বাড়িতে ছিল না। অভিযোগ, হালিমার শাশুড়ি জাহেরান বিবি, জাতামান্না বিবি ও মামা শ্বশুর শেখ মীরজাফর হালিমার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এলাকার লোকেরা হালিমাকে উদ্ধার করে খণ্ডরুই ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে বাপের বাড়ির লোকেরা হালিমাকে কটকে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করান। গত ৭ জুন থানায় হালিমার বাবা রেজাউল-সহ ৬ জনের নামে জোড়াগেড়িয়া ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার কটকের হাসপাতালে হালিমার মৃত্যু হয়।

শুক্রবার কটক থেকে গ্রামে দেহ নিয়ে যাওয়ার পথে ফাঁড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায় বাসিন্দারা। শেখ মুসলিমের অভিযোগ, “অভিযোগ পেয়েও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অভিযুক্তদের পালাতে সাহায্য করেছে। এর পরেও অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হলে ফের অবরোধ করব।” পুলিশের দাবি, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE