পচে যাচ্ছে পাতা। নিজস্ব চিত্র।
মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া সঙ্গে ঘন কুয়াশা –এই ত্রহ্যস্পর্শে। চলতি মরসুমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে আলু চাষে নাবি ধসা এবং ঢলে পড়া রোগের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘটনায় উদ্বেগে কৃষি দফতর থেকে চাষিরা। দফতরের সহ-কৃষি অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, “জেলায় চন্দ্রকোনা-সহ বেশ কিছু এলাকা থেকে নাবি ধসা এবং ঢলে পড়া রোগের খবর আসছে। কিছু এলাকায় গাছের পাতায় ও গোড়ায় পচনও ধরছে।”
সূত্রের খবর, এ বার আলুর মরসুম শুরুতেই নোট বাতিলের কোপে পড়েছিলেন চাষিরা। সমবায় এবং ব্যাঙ্ক থেকে কৃষি ঋণও পাননি চাষিরা। এমনকী জমানো টাকা তুলতেও সমস্যায় পড়েছিলেন সিংহভাগ চাষি। কিন্তু নোট বাতিলের আগে ব্যবসায়ীরা পযার্প্ত পরিমাণে আলু বীজ এবং সার মজুত করে রেখেছিলেন। ফলে নগদ এবং ধারে চাষিদের সার ও বীজ পেতে সমস্যা হয়নি।
কিন্তু আবহাওয়া বাম। ক’দিন ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে রোদের দেখা নেই। নিয়ম করেই ক’দিন ঘন কুয়াশার কারণে স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া। এই পরিবেশে আলু গাছের বৃদ্ধি কম হয়। আলুতে যেমন জল প্রয়োজন, তেমনি জরুরি পরিষ্কার আকাশও। শীতের সকালে একটু-আধটু কুয়াশা গাছে লাগলেও রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশে তার ঘাটতি অনেকটাই মিটে যায়। কিন্তু তা না হওয়ায় আলু চাষে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে আলুর খেতে গাছের পাতা কালো হতে শুরু করেছে। গাছের গোড়াতেও পচন দেখা দিয়েছে। এখনই আলু গাছের বৃদ্ধির উপযুক্ত সময়। কিন্তু বেহাল আবহাওয়ায় মার খাচ্ছে চাষ।
স্থানীয় ও কৃষি দফতর সূত্রের খবর, জেলার গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, চন্দ্রকোনা রোড, শালবনি, ডেবরা, দাসপুর-সহ বিভিন্ন ব্লকে প্রচুর আলু চাষ হয়। কিন্তু বেহাল আবহাওয়ায় ঘুম ছুটে গিয়েছে চাষিদের। চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের একাধিক মৌজায় আলু খেতে ঢলে পড়া দেখা দিয়েছে। সঙ্গে নাবি ধসার প্রকোপও শুরু হয়েছে। গড়বেতার আলু চাষি গোপাল সরকার, চন্দ্রকোনার ফরিদ খানের বক্তব্য, “এ বার ধার করে আলু চাষ করেছি। সব ঠিকঠাকই চলছিল। ক’দিনের আবহাওয়ায় গাছের বৃদ্ধি তো কমে গিয়েছে। পাতাও শুকিয়ে যাচ্ছে। কী হবে বুঝতে পারছি না।”
এই পরিস্থিতিতে দফতরের সহ-কৃষি অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) শুভেন্দু মণ্ডলের পরামর্শ, ‘‘আলুর জমিতে এই সব লক্ষণ দেখলেই কপার অথবা ম্যানকোজেব ঘটিত ছত্রাশ নাশক ওষুধ স্প্রে করলে রোগ থেকেঅনেকটাই মুক্তি মিলবে। সঙ্গে অধিক পরিমাণ নাইট্রোজেন ঘটিত রাসায়নিক সার বর্জন করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy