দাপট: হাতির হানায় ভেঙেছে স্কুলের সীমানা পাঁচিল। নিজস্ব চিত্র
চালের খোঁজে স্কুলের সীমানা পাঁচিল ভাঙল হাতির দল। সোমবার ভোরে মেদিনীপুর গ্রামীণের চাঁদড়ার ঝরিয়ার ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন ভোরে ৪টি হাতি হঠাৎ ঝরিয়া প্রাথমিক স্কুলের সামনে চলে আসে। স্কুলের একটি ঘরে মিড-ডে মিলের চাল রয়েছে। শুঁড় দিয়ে ধাক্কা মেরে সীমানা পাঁচিলের সামনে থাকা গেট খুলে ওই ঘরের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করে হাতি। অবশ্য ওই ঘরে পৌঁছতে পারেনি হাতির দলটি। তবে স্কুল চত্বরে একটি কাঁঠালের গাছ রয়েছে। সেই গাছের সব কাঁঠাল খেয়েছে হাতিরা। চত্বরের অদূরে কলাগাছ রয়েছে। সেই গাছেরও সব কলা খেয়েছে তারা। হাতির হানায় এলাকায় আতঙ্কও ছড়ায়। উদ্বেগ দেখা দেয়।
ঝরিয়া প্রাথমিক স্কুলের সহ-শিক্ষক নিমাই কবিরাজ বলছিলেন, “চালের খোঁজেই হাতির দলটি এখানে এসেছিল। আসলে ওদের ঘ্রাণশক্তি প্রবল। চাল খেতে পারেনি। তবে কাঁঠাল খেয়েছে। স্কুল চত্বরের অদূরে কলাগাছ রয়েছে। কলাও খেয়েছে। সীমানা পাঁচিলের একাংশ ভেঙেও দিয়েছে।” পরে গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে এলাকা ছাড়ে দলটি। এই এলাকায় এসে বেশ কিছুক্ষণ তাণ্ডবও চালায় হাতিরা।
মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা মানছেন, “ওই এলাকায় কয়েকটি হাতি রয়েছে। এক স্কুলের কাছে গিয়ে হাতির একটি দল তাণ্ডব চালিয়েছে বলে শুনেছি। কাঁঠাল- কলা সাবাড় করে দিয়েছে। সীমানা পাঁচিলের একাংশও ভেঙেছে।” রবীন্দ্রনাথবাবুর আশ্বাস, “ওই এলাকা থেকে হাতি তাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে।”
চালের খোঁজে স্কুলে হাতির হানা প্রথম নয়, কয়েক বছর ধরেই চলছে। বছর দু’য়েক আগে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেয়। শুধু জানলা ভেঙে ঘরের ভিতর শুঁড় গলিয়েই নয়, স্কুল ঘরের লোহার দরজা ভেঙেও চালের বস্তা নিয়ে চম্পট দেয় হাতির দল! বিপাকে পড়েন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি দেখে মিড-ডে মিলের চাল রক্ষা করতে বিকল্প ব্যবস্থার খোঁজও শুরু করতে হয় জেলার শিক্ষা দফতরকে।
মেদিনীপুরের এক শিক্ষাকর্তা মানছেন, “বিকল্প ব্যবস্থার খোঁজে বৈঠক করতে হয়েছিল। আসলে শিশু ও শিশুর খাদ্য-দু’টোই রক্ষা করতে হবে। হাতির দল স্কুলে স্কুলে এসে নতুন একটা সমস্যা সৃষ্টি করছিল। এর মোকাবিলা করাটাও চ্যালেঞ্জ ছিল।’’ তিনি বলছেন, ‘‘ফের চাঁদড়ার ঝরিয়ায় যে ভাবে হাতির দল স্কুলে এসে তাণ্ডব চালিয়েছে, তা উদ্বেগেরই।”
চাঁদড়া ও তার আশেপাশের এলাকায় ১৬-১৮টি হাতির একটি দল রয়েছে। ঝরিয়া প্রাথমিক স্কুলের সহ-শিক্ষক নিমাই কবিরাজ বলছিলেন, “ হাতির দল সীমানা পাঁচিলের প্রায় ১২-১৫ ফুট অংশ ভেঙে দিয়েছে। দলটি গেট খুলেই স্কুল চত্বরে ঢোকে। তবে গেটের কোনও ক্ষতি হয়নি। মনে হয় শুঁড়ের ধাক্কায় গেটটা খুলে যায়।” তাঁর কথায়, “মিড-ডে মিলের চাল তো স্কুলে থাকেই। হাতির দল এ ভাবে চালের খোঁজে স্কুলে হানা দিলে তো সমস্যা। এই চাল রক্ষা করাটাই একটা চ্যালেঞ্জ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy