Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রথ-কাঠ পুজোয় উৎসব তলকুইয়ে

তলকুইয়ের বাসিন্দারা রথ দেখতে বরাবর মেদিনীপুর শহরেই আসেন। জগন্নাথমন্দির সংস্কার কমিটির রথযাত্রা ছাড়াও বিভিন্ন পাড়ায় কয়েকটি জমিদার বাড়ির রথও বেরোয়। বসে রথের মেলা। বিকেল থেকে রাত সেই উৎসবে মেতে এতদিন বাড়ি ফিরতেন তলকুই থেকে দল বেঁধে আসা লোকজন।

সূচনা: রথ তৈরির কাঠ পুজো হচ্ছে গ্রামের মন্দিরে। নিজস্ব চিত্র

সূচনা: রথ তৈরির কাঠ পুজো হচ্ছে গ্রামের মন্দিরে। নিজস্ব চিত্র

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

রথের দিনে খুশির শেষ নেই ঋক রায়, স্বপ্না মাইতির মতো কচিকাঁচাদের। গ্রামে এ বছরও রথযাত্রা হচ্ছে না। কিন্তু আগামী বছর হবে। আর সেই বার্তা নিয়েই রবিবার রথের কাঠ পুজো হল মেদিনীপুর সদর ব্লকের শিরোমণি গ্রাম পঞ্চায়েতের তলকুইতে। সেই পুজো ঘিরেই গোটা গ্রাম মেতে উঠল উৎসবে।

এ দিন সকাল সকাল স্নান সেরে নতুন পোশাক পরে গ্রামের প্রায় সকলে স্থানীয় মন্দিরে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন। সেই মন্দিরেই হয়েছে রথ তৈরির কাঠের বিশেষ পুজো। ঢাকঢোল-সহ যাবতীয় আচার মেনে ধুমধাম করেই পুজো হয়েছে। পুজোয় হাজির ছিলেন এলাকার বিধায়ক দীনেন রায়। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন এলাকায় রথ বেরোয়। কিন্তু তলকুইয়ে এতদিন রথ উৎসব হত না। সামনের বছর থেকে এখানেও রথ বেরোবে। তাই এখন থেকেই গ্রামের সকলে আনন্দে মাতোয়ারা। বিশেষ করে ছোটরা।’’

তলকুইয়ের বাসিন্দারা রথ দেখতে বরাবর মেদিনীপুর শহরেই আসেন। জগন্নাথমন্দির সংস্কার কমিটির রথযাত্রা ছাড়াও বিভিন্ন পাড়ায় কয়েকটি জমিদার বাড়ির রথও বেরোয়। বসে রথের মেলা। বিকেল থেকে রাত সেই উৎসবে মেতে এতদিন বাড়ি ফিরতেন তলকুই থেকে দল বেঁধে আসা লোকজন।

সামনের বছর থেকে অবশ্য ছবিটা বদলাবে। সাড়ম্বরে রথযাত্রা হবে তলকুইতে। বসবে মেলা। এ দিন তারই সূচনা হয়ে গেল। গ্রামের বাসিন্দা সন্ধ্যা দাস, গীতা দাস, মহেশ্বর মাইতিরা বলছিলেন, “এতদিন রথ দেখতে শহরে যেতে হত। সামনের বছর থেকে গ্রামেই রথযাত্রা হবে। এখনই ভেবে আনন্দ হচ্ছে।’’

তলকুইয়ের আশপাশে রয়েছে যমুনাবালী, পাটনা, বসন্তপুর, বামুনাডাঙা প্রভৃতি গ্রাম। রথযাত্রার আয়োজন হলে সেই সব গ্রামের মানুষও উৎসবে সামিল হবেন।

কিন্তু রথ উৎসব আয়োজনের ভাবনাটা এলো কী ভাবে?

মাস দেড়েক আগে ঘরোয়া আড্ডা চলাকালীনই কয়েকজন গ্রামবাসীর মনে হয়েছিল, এলাকায় রথ উৎসব করলে তো মন্দ হয় না। তারপর গ্রামবাসী দল বেঁধে হাজির হয়ে যান এলাকার বিধায়ক দীনেন রায়ের কাছে। আর্জি একটাই, গ্রামে রথযাত্রা হোক। স্থানীয় বাসিন্দা সুশোভন মাইতির কথায়, ‘‘সব এলাকায় রথ বেরোয়। আমাদের এলাকায় বেরোয় না। এ নিয়ে একটা আক্ষেপ ছিল। তাই ওই আর্জি জানাই।’’

কিন্তু রথ তো আর এক মাসে তৈরি হবে না। শাল, বেল-সহ একাধিক গাছের কাঠও লাগবে। শেষমেশ ঠিক হয়, সামনের বছর গ্রামে রথ উৎসব হবে। আর এ বার রথের দিন হবে কাঠ পুজো। গ্রামের খুদে ঋক, স্বপ্নারা বলছিল, “সামনের বছর গ্রামেই রথ বেরোবে। মেলা বসবে। দারুণ মজা হবে।’’

তারই অপেক্ষায় গোটা তলকুই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ratha Yatra Rituals রথ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE